সাধারণ ঘরের মেয়ে থেকে রাজরানী! কীভাবে মুকেশ আম্বানির স্ত্রী হলেন নীতা আম্বানি?

Nita Ambani : ভারতের সেরা ধনকুবের মুকেশ আম্বানির (Mukesh Ambani) স্ত্রী তিনি। তার বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। কোনও রাজরানীর থেকে যেন কম নয় তার জীবন। অথচ এই নীতা আম্বানির বিয়ের আগের জীবন ছিল খুবই সাধারণ। একজন সাধারণ ঘরের মেয়ে কীভাবে ধীরুভাই আম্বানির বৌমা হলেন? বিয়ের আগে তিনি কী করতেন? জানুন মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানির সম্পর্কে অজানা কিছু কথা।

নীতা আম্বানি কে ছিলেন?

১৯৬৩ সালে গুজরাটের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেন নীতা। বিয়ের আগে তার নাম ছিল নীতা দালাল। তিনি নার্সি মঞ্জি কলেজ অফ কমার্স এন্ড ইকনোমিকস থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ভারতনাট্যম শিখেছেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় বাচ্চাদের একটি স্কুল থেকে। সেখানে তিনি ৮০০ টাকা বেতনে চাকরি করতেন। এই স্কুলেরই একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে নীতাকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় ধীরুভাই আম্বানির। নীতাকেই তিনি তার পুত্রবধূ করতে চেয়েছিলেন।

Nita Ambani

কীভাবে আম্বানি পরিবারের বউ হলেন নীতা?

নীতাকে ছেলের বউ করার প্রস্তাব দেবেন বলে ধীরুভাই আম্বানি নিজে ফোন করে তাকে নিজের অফিসে ডেকে পাঠান। তবে নীতা বিশ্বাস করতে চাননি তার সেই কথায়‌। তিনি ভেবেছিলেন তার সঙ্গে কেউ মজা করছে। তাই তিনি ফোনটি রেখে দেন। দ্বিতীয়বার যখন তাকে আবার ফোন করেন ধীরুভাই তখন নীতা বলেন, “আপনি যদি ধীরুভাই আম্বানি হন তাহলে আমি এলিজাবেথ টেলর।”

আরও পড়ুন : যৌবন ধরে রাখতে রোজ এই ছোট্ট কাজ করেন নীতা আম্বানি

তবে নীতার ভুল ভাঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি। মুকেশ আম্বানির সঙ্গে তার দেখা হয়। দুজনের বিয়ের কথাবার্তা এগোতে থাকে। এরই মধ্যে একদিন নীতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন মুকেশ নিজেই। আর সেটাও ছিল বেশ ফিল্মি স্টাইলে। মুম্বাইয়ের পেডার রোডের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় যানজটে আটকে যায় তাদের গাড়ি। গাড়িতে তখন মুকেশ ও নীতা একাই ছিলেন। তখনই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন মুকেশ।

Nita Ambani

নীতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন মুকেশ আম্বানি

মুকেশ নীতাকে বলেন তিনি উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত তিনি গাড়ি চালাবেন না। নীতা এরপর ‘হ্যাঁ’ বলতেই গাড়ি চলতে শুরু করে। অন্যদিকে তাদের বিয়ের তোড়জোড়ও শুরু হয়ে যায়। তবে মুকেশকে বিয়ে করতে আবার কঠিন শর্ত দিয়েছিলেন নীতা। বলতে গেলে আম্বানি পরিবারের রীতি রেওয়াজ ভেঙেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন : বিশ্বের সবথেকে দামী এই ৫ টি জিনিস আছে নীতা আম্বানির কাছে

Nita Ambani

মুকেশ আম্বানিকে বিয়ে করতে কী শর্ত দিয়েছিলেন নীতা আম্বানি?

বিয়ের কথাবার্তা এগোতেই নীতা স্পষ্ট করে শ্বশুরমশাই ধীরুভাই আম্বানিকে জানিয়ে দেন তিনি তার স্কুলের চাকরিটি ছাড়বেন না। ধীরুভাই তার প্রাথমিক শর্ত মেনে নেন। বিয়ের পরেও বৌমাকে কাজ করতে তিনি বাধা দেননি। তবে বাইরে কোথাও কাজ করাতে আপত্তি ছিল আম্বানিদের। তাই ধীরুভাই আম্বানি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় নীতাকে।

আরও পড়ুন : সকাল থেকে রাত কী কী করেন নীতা আম্বানি?

Nita Ambani

আরও পড়ুন : বিশ্বের সবথেকে দামি জল খান নিতা আম্বানি, দাম শুনে বনবন করে ঘুরবে মাথা

নীতা আম্বানির বিলাস-বহুল জীবনযাপন

এরপর ১৯৮৫ সালে মুকেশ ও নীতা আম্বানির বিয়ে হয়ে যায় অনেক ধুমধাম করে। তখন নীতার বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। এরপরই আমুল বদলে যায় নীতার জীবন। বিলাসিতার মধ্যে কাটে তার সারাদিন। সকালে উঠেই যে চায়ের কাপে চুমুক দেন তিনি তার দাম ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। যে জল তিনি পান করেন ভারতীয় মুদ্রায় তার একটি বোতলের দাম ৫০ লক্ষ টাকা। বিদেশি ব্রান্ডের যে লিপস্টিক ব্যবহার করেন তার দাম কয়েক লাখ।

Nita Ambani

আরও পড়ুন :  নীতা আম্বানির মেকআপ আর্টিস্টের বেতন শুনলে চোখ কপালে উঠবে আপনার

নীতার আলমারি ভর্তি রয়েছে দামী দামী শাড়ি আর গয়নাতে। কোনও কোনও শাড়িতে আবার হীরে-সোনার কাজও থাকে। কয়েক লক্ষ টাকার কুমিরের চামড়ার ব্যাগ ব্যবহার করেন, লক্ষাধিক টাকার জুতো পরেন। বিশ্বের দামি দামি রত্নের গয়না আছে তার কাছে। তার মধ্যে পান্নাখচিত একটা নেকলেসের দাম তো আবার ৪০০ কোটি টাকা। সম্রাট শাহজাহানের পাগড়ির ‘কলগি’ তিনি ব্যবহার করেন বাজুবন্ধ হিসেবে। মুঘল আমলের হীরের আংটিও রয়েছে তার কাছে। প্রকৃত অর্থই তিনি এ যুগের রাজরানী।