হরিয়ানা (Hariyana) রাজ্যের অন্তর্গত ছোট্ট একটি গ্রাম কোহাড়। তবে এই গ্রামের নাম আজ সারা বিশ্বের মুখে মুখে ফেরে ছোট্ট এক বালকের জন্য। আজ অবশ্য কৈশরের গন্ডি পেরিয়ে যৌবনে পা রাখতে চলেছেন তিনি। সারা দুনিয়া তাকে চেনে ‘গুগোল বয়’ (Google Boy) নামে। গোটা দেশ তাকে চিনেছিল কৌন বানেগা ক্রোড়পতির (Kaun Banega Crorepati) মঞ্চ থেকে। নাম তার কৌটিল্য পণ্ডিত (Koutilya Pandit)।
সাধারণত যে বয়সে বাচ্চারা এবিসিডি, স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ শেখে সেই বয়সেই কম্পিউটারকে টেক্কা দিয়ে তথ্য মনে রাখতে পারতো কৌটিল্য। এরপর কুরুক্ষেত্র ইউনিভার্সিটির বৈজ্ঞানিকেরা তার আইকিউ টেস্ট করে জানতে পারেন ১৫০ লেভেলের আইকিউ রয়েছে তার যা বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের সমান! এরপর স্বভাবতই তার নামের পাশে জিনিয়াস শব্দবন্ধ জুড়ে যায়।
মাত্র ৫ বছর বয়সী এই ক্ষুদে আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগে কেবিসি মঞ্চে এসে নিজের অদ্ভুত প্রতিভার পরিচয় দিয়েছিল। ওইটুকু বয়সেই পৃথিবীর সব দেশের ভৌগোলিক সীমা, ক্ষেত্রফল এবং অন্যান্য যাবতীয় তথ্য ছিল তার মুখস্ত। এই মেধাবী বাচ্চার মেধা দেখে অবাক হয়েছিলেন খোদ অমিতাভ বচ্চন। তিনিও কৌটিল্যর অনেক বড় ফ্যান হয়ে উঠেছিলেন তা স্বীকার করতে কার্পণ্য করেননি।
সৌরজগতের সাথে সম্পর্কিত গ্রহ-নক্ষত্রের বিষয়ে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সব তথ্য বলে দিতে পারতো কৌটিল্য। তাই মানুষ তাকে ভালবেসে নাম দিয়েছিলেন ‘গুগোল বয়’। ওইটুকু বয়সেই সারাবিশ্বে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল কৌটিল্য। তারপরের ৯ বছরে কোথায় গেল সে? এখন কোথায় কিভাবে কাটছে তার দিন? তার সম্পর্কে জানতে উৎসাহী সকলে।
কৌটিল্য চাণক্য বর্তমানে হরিয়ানার গুরুগ্রাম জেলার জিডি গোয়েঙ্কা ওয়ার্ল্ড স্কুলে একাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করছেন। পাশাপাশি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সঙ্গে মিলে বেশ কিছু কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চলতি বছর সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিবেশ যুব সংসদে বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন কৌটিল্য।
২০১৬ সালে ইউএই সরকারের থেকে সম্মান পেয়েছেন তিনি। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডক্টর এপিজে আব্দুল কলাম এবং ডক্টর প্রণব মুখার্জিও তাকে সম্মানিত করেছেন। ২০২০ সালে গ্লোবাল চাইল্ড প্রডিজি অ্যাওয়ার্ড ২০২০-২১ এ তার নির্বাচন হয়েছিল। দুবাই, নেপাল, লন্ডনের মত জায়গায় বহুবার সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েছেন তিনি।
কৌটিল্য ভবিষ্যতে একজন বিজ্ঞানী বা মহাকাশচারী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন। তাই ইসরো থেকেও তাকে একবার ডাকা হয়েছিল। ৭ বছর পর কেবিসি মঞ্চে দ্বিতীয়বারের জন্য ডাক পেয়েছিলেন কৌটিল্য। সেবার অবশ্য প্রতিযোগী হিসেবে নয়, বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। দুই প্রতিযোগীকে কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিতে সাহায্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা তাদের জিতে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন কৌটিল্য।