বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে এখন সবচেয়ে ব্যস্ত এবং জনপ্রিয় মুখগুলোর মধ্যে একজন হলেন সুমন্ত মুখার্জী। একসময় টলিউডের ছবিতে খলনায়ক হিসেবে দর্শকদের আতঙ্কের কারণ ছিলেন তিনি। ‘আতঙ্ক’ ছবিতে ঠান্ডা মাথার খুনির ভূমিকায় তাঁর অভিনয় দর্শকদের রোমাঞ্চিত করেছিল। কিন্তু এখন? তিনি বাংলা টেলিভিশনের ধারাবাহিকগুলিতে নায়ক-নায়িকাদের দাদু হয়ে দর্শকদের হৃদয় জয় করেছেন। বয়স শুধুই একটি সংখ্যা—এই কথাটি সুমন্ত মুখার্জীর ক্ষেত্রে শতভাগ সত্য। একসাথে পাঁচটি ধারাবাহিকে কাজ করে তিনি প্রমাণ করেছেন, তাঁর এনার্জি এবং প্রতিভার কোনো সীমা নেই!
টলিউডের ‘খলনায়ক’ থেকে টিভির ‘দাদু’:
সুমন্ত মুখার্জীর ক্যারিয়ারের শুরুটা টলিউডে। একসময় তিনি টলিউডের ছবিতে খলনায়ক হিসেবে দর্শকদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেন। ‘আতঙ্ক’ ছবিতে তাঁর ঠান্ডা মাথার খুনির ভূমিকায় অভিনয় দর্শকদের রোমাঞ্চিত করেছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তিনি বাংলা টেলিভিশনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখন তিনি ধারাবাহিকগুলিতে নায়ক-নায়িকাদের দাদু বা শ্বশুরমশাইয়ের ভূমিকায় অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয় জয় করেছেন।
একসাথে পাঁচ ধারাবাহিক: কীভাবে সম্ভব?
সুমন্ত মুখার্জী এই মুহূর্তে স্টার জলসা এবং জি বাংলার মোট পাঁচটি ধারাবাহিকে কাজ করছেন। এর মধ্যে রয়েছে:
- ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ (জি বাংলা): উর্মির দাদু।
- ‘গৌরী এলো’ (জি বাংলা): ঈশানের দাদু।
- ‘বোধিসত্ত্বের বোধবুদ্ধি’ (জি বাংলা): ছোট্ট বোধির দাদু।
- ‘নবাব নন্দিনী’ (স্টার জলসা): রেজওয়ানের দাদু।
- ‘গোধূলি আলাপ’ (স্টার জলসা): নোলকের শ্বশুরমশাই।
এতগুলো চরিত্র একসাথে সামাল দেওয়া যে কতটা কঠিন, তা শুধু অভিনেতারাই বুঝতে পারেন। কিন্তু সুমন্ত মুখার্জীর ক্ষেত্রে এটি যেন নিত্যদিনের ব্যাপার। তাঁর অভিনয়ের দক্ষতা এবং সময় ব্যবস্থাপনা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
সুমন্ত মুখার্জীর এই অদম্য এনার্জি দেখে দর্শকরা বিস্মিত। তাঁকে দেখে মনে হয় না যে তিনি এই বয়সেও এতগুলো কাজ একসাথে করতে পারেন। দর্শকরা তাঁকে ‘বাংলা টেলিভিশনের সার্বজনীন দাদু’ উপাধি দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, “লক্ষ্মী কাকিমা সুপারস্টার অপরাজিতা আঢ়্যের মতোই সুমন্ত দাদুও ফুল অন এনার্জি নিয়ে কাজ করছেন। দাদুর এলেম আছে!”
সুমন্ত মুখার্জীর গোপন সাফল্যের রহস্য:
এই বয়সেও সুমন্ত মুখার্জীর এত এনার্জির রহস্য কী? তাঁর মতে, “আমার কাজের প্রতি ভালোবাসা এবং দর্শকদের ভালোবাসাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমি মনে করি, বয়স শুধুই একটি সংখ্যা। যদি আপনি আপনার কাজকে ভালোবাসেন, তাহলে আপনি যেকোনো বয়সে সফল হতে পারেন।”
সুমন্ত মুখার্জী শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি একজন অনুপ্রেরণা। তাঁর কাজের প্রতি ভালোবাসা এবং অদম্য এনার্জি তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি উদাহরণ। বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর অবদান সত্যিই অতুলনীয়। আগামী দিনেও দর্শকরা তাঁর আরও অনেক চরিত্রে অভিনয় দেখতে চান।