বাবা বলিউড শাহেনশা অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan), মা-ও ছিলেন ৯০ এর দশকের অন্যতম দাপুটে অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়ী বচ্চন (Jaya Bhaduri Bachchan)! আর ভাই অভিষেক বচ্চন, তিনিও তো বলিউডের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। এমন একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে হয়েও অমিতাভ-জয়ার কন্যা শ্বেতা বচ্চন (Shweta Bachchan) নিজের জীবন সম্পর্কে হীনমন্যতায় ভুগতেন একসময়। সম্প্রতি সেই বিষয় নিয়েই খোলাখুলি আলোচনা করলেন তিনি।
বচ্চন পরিবারের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও জীবনের একটা পর্যায়ে তিনি স্বাবলম্বী হতে পারেননি। তিনি স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার আগেই তার বিয়ে হয়ে যায় ব্যবসায়ী নিখিল নন্দার সঙ্গে। বচ্চন পরিবারের ছোট থেকে বড় হওয়ার পথে বরাবর মা কিংবা ভাইয়ের কাছেই টাকার জন্য হাত পেতেছেন শ্বেতা। বিয়ের পর স্বামীর কাছেও হাত পাততে তার বাঁধতো।
সম্প্রতি মেয়ে নভ্যা নভেলি নন্দার একটি চ্যাট শোতে অংশগ্রহণ করতে এসে নিজের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করলেন শ্বেতা। নিজে জীবনে কিছু করতে না পারার আফসোস তাকে বরাবর তাড়িয়ে নিয়ে বেরিয়েছে। আর এর কারণ হিসেবে তিনি এখনও পর্যন্ত তার মা জয়া বচ্চনকেই দায়ী করেন। শ্বেতা মনে করেন প্রত্যেক বাবা-মায়েরই তাদের মেয়েকে স্বাবলম্বী হওয়া শেখানো উচিত। কিন্তু জয়া সেটা করেননি।
ছোট থেকেই মেয়েকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে দিতে চাননি জয়া। শ্বেতার যখনই টাকার প্রয়োজন পড়েছে তিনি তার ভাইয়ের কাছে হাত পেতেছেন। তার কলেজ জীবনেও এমনটাই চলেছে। টাকা সম্পর্কে চিরকাল উদাসীন থেকেছেন শ্বেতা। এরপর তার বিয়ে হয়ে যায় এবং তিনি মুম্বাই থেকে চলে আসেন দিল্লিতে। বিয়ের পর নিজের খরচটুকু চালানোর মত অর্থ তার হাতে ছিল না।
স্বামীর কাছে হাত পাততে লজ্জা বোধ করতেন শ্বেতা। সেই সময় তার আত্মবিশ্বাসে আঘাত লেগেছিল। শেষমেষ তিনি দিল্লির একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে মাত্র ৩০০০ টাকার বিনিময়ে চাকরি নেন। ওই চাকরিটাই তার পুরনো আত্মবিশ্বাস আবার ফিরিয়ে এনেছিল। তবে এখন অবশ্য শ্বেতা বেশ ভালই রোজগার করছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে লেখালেখি করেন তিনি।
শ্বেতা এখন নিজের একটি ব্যবসাও চালু করেছেন। কিন্তু হিসাব-নিকেশের ব্যাপারে তিনি বরাবরই কাঁচাই রয়ে গেলেন। এখন তার ব্যবসাতে টাকা পয়সার বিষয়টা তার মেয়ে নভ্যাই দেখাশোনা করেন। এর আগেও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বহুবার শ্বেতা এই নিয়ে আক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে। আসলে তিনি নিজে যে ভুলটা করেছেন তিনি চান না তার মেয়ে নভ্যাও সেই ভুল করুন। নিজের জীবন দিয়ে তিনি বুঝেছেন মেয়েদের স্বাবলম্বী হওয়াটা সবার আগে জরুরী।