মৃত্যুকালে অসুস্থ বাবা আর খোঁজ রাখেননি। চরম আর্থিককষ্টে একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় মারা যান টলিউড অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীর বাবা উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। কিন্তু কেন বাবাকে শেষ জীবনে এত কষ্ট পেতে দেখেও নির্বিকার রইলেন ঋতাভরী? সম্প্রতি একটি পডকাস্টে বাবা এবং মায়ের দাম্পত্য অশান্তি নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী। বাবা যে তার মা এবং তাদের দুই বোনের উপর কতটা অত্যাচার চালাতেন এসব কথা ফাঁস করে দিলেন ঋতাভরী।
ঋতাভরী চক্রবর্তীর বাবা কে?
ঋতাভরীর বাবা উৎপলেন্দু চক্রবর্তী একজন পরিচালক ছিলেন। মদ খেয়ে স্ত্রী ও মেয়েদের উপর অত্যাচার চালাতন তিনি। দিনের পর দিন মারধর করেছেন স্ত্রীকে এবং ছোট ছোট দুই মেয়েকে। ঋতাভরী চক্রবর্তীর বয়স যখন মাত্র চার বছর, তখন স্বামীর অত্যাচার থেকে নিজেকে এবং দুই মেয়েকে বাঁচাতে আলাদা হন তাদের মা শতরূপা সান্যাল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বাবা মানেই ট্রমা ঋতাভরীর কাছে। মৃত্যু শয্যায় উৎপলেন্দুর অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে এলে অনেকেই ঋতাভরী ও তার দিদি চিত্রাঙ্গদাকে দোষারোপ করেছিলেন বাবাকে সাহায্য না করার জন্য। তার জবাব দিলেন ঋতাভরী।
অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘আমার বায়োলজিক্যাল বাবা, আমি তখন এতটাই ছোট, তখন বয়স ওই ৩-৪ হবে, মায়ের ভাষায় ওইটুকু বাচ্চার গায়ে জায়গা কোথায় মারবার? সেটা করা থেকেও যখন উনি বিরত থাকতে পারলেন না, তখন মাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। মাকে বেরিয়ে আসতে হয়। আমার দাদু-দিদা ভীষণভবে সাপোর্ট করেছিলেন। উনি ছিলেন ক্রনিক অ্যালকোহলিক। ওই জন্য মদ নিয়ে, আমার বিশাল একটা সমস্যা আছে। যে কোনো পার্টিতে যখন হুস্কির আসরটা শুরু হয় না, আমি নিজেকে আসতে আসতে গুটিয়ে নেই। এখনও সহ্য করতে পারি না। ওই অ্যালকোহল ট্রমাটা আমার কাছে এখনও খুব স্ট্রং। ওই গন্ধটাই কোথাও পেলে আমার খুব অস্বস্তি হয়।’’
আরও পড়ুন : যৌন হেনস্থার শিকার ঋতাভরী চক্রবর্তী, প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
আরও পড়ুন : শাহরুখের কাছের মানুষের সঙ্গে প্রেম! প্রেমিকের পরিচয় ফাঁস করলেন ঋতাভরী চক্রবর্তী
বাবা বেঁচে নেই, তবে সেই আতঙ্কটা মা এবং দুই মেয়ে ঋতাভরী ও চিত্রাঙ্গদার জীবনে থেকে গিয়েছে আজও। আজও বাবাকে রীতিমতো ঘৃণা করেন ঋতাভরী। এর আগেও বহুবার বাবার অত্যাচারের কথা প্রকাশ্যে বলেছেন তিনি। শেষ জীবনে বাবাকে দেখেননি বলে কোনও অনুতাপ নেই অভিনেত্রীর মনে। সেই ভিডিওর কমেন্ট বক্সে জনৈক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, “তোমার মা দ্বিতীয় বউ ছিলেন।” এর উত্তরে অভিনেত্রীও কড়া জবাব দেন, “সেটা কী ওকে অধিকার দিয়েছিল আমার মা বা আমাদের উপর অত্যাচার করার? এই যুক্তিগুলো কোনদিনও বুঝবো না। কটা আঙ্গুল ঘুরিয়ে দুটো কমেন্ট বা মন্তব্য করা আসলেই খুব সহজ।”