অবশেষে শাসকদলের মহিলা তারকা সাংসদদের মধ্যে থেকে কেউ মুখ খুললেন আর জি কর হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে। এক সপ্তাহ আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন তোলপাড় চলছে গোটা বিশ্ব জুড়ে, তখন সোশ্যাল মিডিয়াতে লাইভে এলেন রচনা ব্যানার্জী (Rachna Banerjee)। কেঁদে কেটে জানালেন তার মনের দুঃখের কথা। আর তাতেই চরম বিরক্ত নেটিজেনরা উল্টে ধুয়ে দিলেন তাকেই।
আর জি করের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল সাংসদ রচনা দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে লাইভে এসে তিনি বলেন, “আমি আপনাদের সকলের সামনে এসেছি সাধারণ নাগরিক হিসাবে। আমি একজনের মা, একজনের মেয়ে। আজ ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস। দেশ আমাদের স্বাধীন হয়েছে। আমরা কতটা স্বাধীন হয়েছি? সত্যিই কি আমরা স্বাধীন হয়েছি? আমরা কি স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারছি? সারা ভারতবর্ষের মহিলারা কি আজ স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারছে?”
অন্যান্য জায়গার প্রসঙ্গ তুলে ধরেও রচনা বলেন, “দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ ,উত্তরপ্রদেশ, মণিপুর সেখানে একটার পর একটা ঘটনা। আমরা মেয়েরা কবে স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারব? কলকাতার আরজি করের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, মুখে আনা যায় না যা ঘটেছে। আমরা প্রতিবাদের সুর তুলেছি। আওয়াজ তুলেছি। আমরা রাস্তায় হাঁটছি। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। এরকম মহিলাদের আওয়াজ আমার মনে হয় না ভারতবর্ষে এর আগে কোথাও উঠেছে। তাই সব মহিলাদের আমি স্যালুট জানাই। আপনারা যা করেছেন তার জন্য আমি মহিলা হিসেবে আপনাদের সঙ্গে আছি। এই আওয়াজ উঠিয়ে রাখবেন যতক্ষণ না সুবিচার পায় ওই নির্যাতিতা। তাঁর বাবা মা যেন সুবিচার পান। দোষী যেন শাস্তি পায়।”
এখানেই শেষ নয়। রচনা আরও বলেছেন, “দিনের শেষে যখন রাত করে কাজ সেরে গাড়ি করে বাড়ি ফিরি, অনেক মানুষ অনেক মেয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে ফেরে। বাসে ফিরে, কেউ ট্যাক্সিতে ফেরে। অনেকে অনেক কষ্ট করে ফেরে। আমার মনে হয় আমি বাড়িতে ঠিক ভাবে পৌঁছতে পারব তো? কেন হবে? মাথা উঁচু করে বাঁচব, মাথা উঁচু করে চলব। আমি একজনের বোন, একজনের মেয়ে। পুরুষ মানুষ আমাকে দেখে সম্মান করবে, আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে। আমি বিপদে পড়লে আমার হাত ধরে বাড়ি পৌঁছে দেবে এটাই তো পুরুষ মানুষের জাত হওয়া উচিত। তাদের জাত কি এমন হওয়া উচিত আমি কাঁদব, আমার আওয়াজ বাইরে পৌঁছবে না, আমাকে ছিঁড়ে খাবে? কেন হবে । আমাদের এর জন্য কঠিন পদক্ষেপ করতে হবে। ভারতীয় সংবিধানের বিচারব্যবস্থা এমন হতে হবে যে কোনও মেয়ের দিকে কোনও পুরুষ কুনজর দিতে পারবে না। তাদের শাস্তি এমন হবে যে তারা ভাববে এটা আমরা করব কি না। এরকম শাস্তি হওয়া উচিত।” বলতে বলতে কেঁদেও ফেলেন তিনি।
আরও পড়ুন : ভাগ্য বদলাতে কোন আঙুলে কী আংটি পরেন রচনা? কোনটার কাজ কী?
আরও পড়ুন : প্রথম বিয়ে টেকেনি, দ্বিতীয় বিয়ে রচনার! কী ঘটেছিল সেই দিন?
তবে রচনার কান্না দেখে উল্টে বেজায় বিরক্ত হয়েছেন নেটিজেনরা। কেউ বলছেন রচনা ভন্ডামি করছেন, ওভার অ্যাকটিং করছেন। অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র লিখেছেন, “যাত্রাপালা একেবারে!” কেউ লিখছেন, “উফ দশ লাখ রেট দিয়েছে তোমার মা মমতা। এত কিসের তোমার চিন্তা? আর টিকিট পেতে কাদের খুশি করেছো? ভেবে দেখো দিদি নাম্বার ওয়ান।” কেউ লিখছেন, “এত মেকআপ করে লাইভে এসে কাঁদতে আগে কোনদিনও দেখিনি।” কেউ লেখেন, “আবার নাটক করছিস তুই! ন্যাকা নম্বর ওয়ান!” কারও মন্তব্য, “জ্ঞানের কথা শুনে হাসি পেয়ে গেল। তা দিদি আপনি এতদিন কোথায় ছিলেন?”