আর মাধবন (R Madhavan), নামটার সঙ্গে এখন এখন গোটা বলিউড এবং দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বেশ ভালোভাবেই পরিচিত। শ্যামলা রঙ, মিষ্টি হাসি, উজ্জ্বল চোখের ছেলেটা কখন যে বলিউডের হিরো হয়ে উঠল, সে নিজেও জানতে পারেনি। আসলে নিজের কালো রঙের কারণেই নাকি নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন তিনি।
ছোট বয়সে বলিউডের দিকে তার কোনও আগ্রহ ছিল না। আসলে গায়ের রঙ নিয়ে সব সময় তার মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করত। এমনকি তিনি একসময় এটাও ভাবতেন যে তার গায়ের রঙ কালো বলে কোনও মেয়েই তাকে বিয়ে করতে রাজি হবেন না!
যদিও তাকে দেখে সকলেই তার মিষ্টি চেহারা এবং উচ্চতার জন্য প্রশংসা করতেন। কিন্তু হলে কি হবে? কোনও মেয়েই তাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পছন্দ করবেন না, এই ছিল মাধবনের বিশ্বাস। তবে তার এই ভুল ধারণা ভেঙে দিয়ে তার জীবনে এসেছিলেন সরিতা।
যে সময়ের কথা হচ্ছে তখন আর মাধবনের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির পরিচয় হয়নি। মাধবন তখন স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে মিলিটারি প্রশিক্ষণের জন্য নিজেকে তৈরি করছিলেন। কিন্তু বয়স ৬ মাস কম হওয়ার কারণে তার হাত থেকে মিলিটারিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ ফসকে যায়।
সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে না পেরে মুম্বাইতে ‘পাবলিক স্পিকিং ও পার্সোনালিটি ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়ের উপর শিক্ষকতা করার সিদ্ধান্ত নেন মাধবন। এই সময় সরিতা বিমানসেবিকা পদে চাকরি পেতে ইন্টারভিউয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখনই তার আলাপ হয় মাধবনের সঙ্গে।
মাধবনের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে নিতেই নাকি তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন সরিতা। তিনিই একদিন সরাসরি তার সঙ্গে ডেটে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। মাধবনও তখন ভেবেছিলেন এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না কিছুতেই। এরপর বহুবছর একে অপরের সঙ্গে সময় কাটান তারা।
তারপর বিয়ের সানাই বাজতে খুব একটা দেরি হয়নি। এক সময় ভেবেছিলেন বিয়েই হবে না, সেই মাধবনই অভিনয়ে পা রাখার আগে সরিতাকে বিয়ে করে নেন। এরপর শুরু হয় তার অভিনয় যাত্রা। টেলিভিশনের বিভিন্ন বিজ্ঞাপন এবং ধারাবাহিকে অভিনয় করতে করতে একসময় তার হাতে এসে যায় বড় সুযোগ।
প্রথম একটি কন্নড় ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেলেও ছবিটি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। কিন্তু মাধবনের মধ্যে রত্ন চিনে নিয়েছিলেন মনিরত্নম। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি ‘থ্রি ইডিয়টস’ এর ফারহানকে। আজ শুধু অভিনয় নয়, ‘রকেট্রি : দ্য নাম্বি ইফেক্ট’ ছবির গল্প লিখে ও পরিচালনা এবং প্রযোজনা করেও তিনি সফলতার ছাপ ফেলেছেন।