বাবা-মাকে হারিয়েছেন ছেলেবেলায়, সারাজীবন জুটেছে প্রতারণা,পল্লবী শর্মার জীবন যেন বুকফাটা কান্না

ক্লাস টুয়ে মা’কে হারান, ক্লাস টেনে বাবা, বাবা-মা হারা পল্লবী শর্মার জীবন জুড়ে একাকীত্ব

বাংলা টেলিভিশন জগতের অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হলেন পল্লবী শর্মা (Pallavi Sharma)। স্টার জলসার ‘কে আপন কে পর’ (Ke Apon Ke Por) ধারাবাহিকে জবা চরিত্রে অভিনয় করে সব থেকে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। বর্তমানে ‘নিম ফুলের মধু’ (Neem Phooler Madhu) ধারাবাহিকে পর্নার চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। টিভির পর্দায় যতই হাসি খুশি দেখা যাক না কেন অভিনেত্রীকে অভিনেত্রীর জীবন কাহিনী শুনলে আপনার চোখে জল চলে আসবে।

১৯৯৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন পল্লবী। একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় ইটিভি বাংলার ‘দুই পৃথিবী’ নামক ধারাবাহিকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। এছাড়াও সানন্দা টিভিতে ‘নদের নিমাই’ ধারাবাহিকে লক্ষ্মীপ্রিয়া চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে পল্লবীকে। ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পেছনে তার রয়েছে বহু লড়াই।

Pallavi Sharma Life Struggle

PALLAVI SHARMA

পল্লবী শর্মার জীবন

ক্লাস থ্রিতে পড়াকালীন পল্লবী হঠাৎ করে জানতে পারেন, তার মায়ের ব্রেন টিউমার হয়েছে। প্রতিবেশিনীর কাছে পল্লবীকে রেখে পল্লবীর বাবা এবং দাদা মাকে নিয়ে চলে যান চেন্নাই। ওই শেষ দেখা। চেন্নাই-এর পর মুম্বাই এবং দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু মাকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ওই প্রতিবেশিনী অর্থাৎ পাতানো পিসির কাছেই সযত্নে বড় হচ্ছিলেন তিনি। পল্লবীর সেই পিসি ছিলেন অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত তাই সেই পিসির হাত ধরেই ‘নদের নিমাই’ ধারাবাহিকে পদার্পণ করেন তিনি।

‘নদের নিমাই’ ধারাবাহিকের পর আইসিএসসি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন পল্লবী। বাবা এবং দাদা দুজনেই কাজের সূত্র বাইরে থাকতেন। কলকাতায় ফিরলে পল্লবীর সঙ্গে দেখা করতেন তারা। ক্লাস টেনে পড়াকালীন হঠাৎ পল্লবীর দাদা জানায়, বাবা নাকি হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দৌড়ে বাবার কাছে ছুটে যান পল্লবী। খাটে শুয়ে অসুস্থ বাবা মাথা নেড়ে আশ্বস্ত দেন, তিনি ঠিক আছেন।

PALLAVI SHARMA

কিন্তু তার পরের দিনই শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় কিন্তু শেষ রক্ষা করা যায়নি। বাবার মৃত দেহকে হাসপাতালে রেখেই পল্লবী পরীক্ষা দিতে যান, ফিরে এসে করেন বাবার সৎকার। আইসিএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন বাবা মারা যান এবং বাকি পরীক্ষার দিনগুলিতে হবিষ্যি পরীক্ষা দিতে যেতে হয়েছিল পল্লবীকে। কোনরকমে পরীক্ষার দিনগুলি পার করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন : সিরিয়ালের সেরা শাশুড়ি! নতুন এই ধারাবাহিকের হাত ধরে পর্দায় ফিরছেন চুমকি চৌধুরী

আরও পড়ুন : সাধারণ ঘরের বউ থেকে টলিউডের সেলিব্রিটি হেয়ার স্টাইলিস্ট! জলি চন্দা আজ বাংলার গর্ব

বাবা মারা যাবার পর থেকেই বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয় পল্লবীর ওপর। ‘দুই পৃথিবী’-তে অভিনয় করার জন্য একাদশ শ্রেণীতে অ্যাডমিশন নিতে পারেননি তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি করতে হয়েছে পার্টটাইম কাজ। অভিনয় করে নিজের  টাকায় কিনেছেন ফ্ল্যাট। তবে আজও পল্লবী ভীষণ একা কারণ যে পিসি তাকে মানুষ করেছেন সেই পিসিও মারা গেছেন। দাদা নিজের জীবন নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। আপাতত একাই জীবন কাটাতে হচ্ছে তাকে।