বাঘের সঙ্গে লড়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে আনলেন মা, মায়ের সাহসিকতায় মুগ্ধ নেটিজেনরা

সন্তান বিপদের মুখে পড়েছে দেখলে হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে পড়েন মায়েরা। তখন আর নিজের ভালমন্দের খেয়াল থাকে না, সন্তানকে বাঁচানোর জন্য চরমসীমা পর্যন্ত যেতে পারেন তারা। এমনকি সন্তানের বিপদ দেখলে মানবী হয়ে উঠতে পারেন বাঘিনী! সন্তানকে বাঘে তুলে নিয়ে যাচ্ছে দেখলে একমাত্র মায়েরাই তো বাঘের পেছনে ছুটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে সন্তানের জীবন ফিরিয়ে আনতে পারেন! যেমনটা পেরেছেন কিরণ দেবী (Kiran Devi)।

ঘটনাটি ঘটেছে সিধি জেলার সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যানের পাশে অবস্থিত মধ্যপ্রদেশের (Madhyapradesh) বাড়িঝিরিয়া নামের একটি গ্রামে। এই গ্রামেই থাকেন কিরণ দেবী নামের এক সাহসী মহিলা। তার আট বছরের সন্তানকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল একটি চিতাবাঘ (Leopard)। কিন্তু কিরণ দেবীও ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নন। তিনি যেই বিপদ টের পান অমনি চিতাবাঘের পেছনে ছুটে নিজের সন্তানকে বাঘের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনেন। ঠিক কী ঘটেছিল?

তিন সন্তানকে বসিয়ে রেখে নিজের দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত ছিলেন ওই গ্রাম্য মহিলা। আচমকা তার আট বছরের পুত্রসন্তানকে তুলে নিয়ে যায় একটি চিতাবাঘ। ঘটনাটি যখন ঘটছিল তখন তার কিছু করার ছিল না। তবে তিনি হাল ছেড়ে দেননি। চিতাবাঘ তার ছেলেকে মুখে নিয়ে দৌড় দেয়। তিনিও ওই চিতাবাঘকে ধাওয়া করে ১ কিলোমিটার পর্যন্ত ছুটে যান।

চিতাবাঘটি এরপর শিশুটিকে নিয়ে একটি জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে লুকিয়ে পড়ে। তবে মায়ের প্রাণ তো, জীবনের ভয় উপেক্ষা করে তিনিও ঢুকে পড়েন জঙ্গলের মধ্যে। বাঘটিকে তিনি অনবরত ভয় দেখাতে থাকেন। এইসময় বাঘ তার ছেলেকে ছেড়ে তার উপর হামলা চালায়। অমনি কিরণ দেবী লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন বাঘটিকে। ভয় পেয়ে রণেভঙ্গ দেয় ওই চিতাবাঘ। আহত বাচ্চাটিকে ফেলে সে জঙ্গলের মধ্যে পালিয়ে যায়।

এরপর ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আবার গ্রামে ফিরে আসেন কিরণ দেবী। শিশুটির চোখ এবং গায়ে আঘাত লেগেছিল। বাঘের সঙ্গে একা লড়াই করে নিজের সন্তানের প্রাণ ফিরিয়ে এনেছেন কিরণ দেবী। মধ্যপ্রদেশের সরকার যখন তার সাহসিকতার খবর শোনে তখন রীতিমত অবাক হয় এবং তার প্রশংসা করে। তা সাহসিকতার খবর ছড়িয়ে পড়েছে নেট মাধ্যমেও। তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।