Dolly Jain : অবাধ্য শাড়িও বাধ্য হয় তার হাতে। তার শাড়ি পরানোর ধরনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানি থেকে শুরু করে দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভাটরা। তার হাতে শাড়ি পরবেন বলে মুখিয়ে থাকেন তারকারা, দেন চড়া পারিশ্রমিক। নাম তার ডলি জৈন। নিজেকে তিনি ‘ড্র্যাপিং আর্টিস্ট’ হিসেবে পরিচয় দেন। কলকাতার এক গৃহবধূ কীভাবে মুম্বাইয়ের গ্ল্যামার দুনিয়ার তারকাদের এত কাছের মানুষ হয়ে উঠলেন? জানুন সেই কাহিনী।
ডলির জন্ম রাঁচিতে। তার পরিবার আসলে রাজস্থানের বাসিন্দা। তবে তিনি বড় হয়ে উঠেছেন বেঙ্গালুরুতে। ২০০৬ সালে তার বিয়ে হয় কলকাতায়। ডলি যে আজ শাড়ি পরিয়ে এত বিখ্যাত হয়েছেন তার নেপথ্যে কিন্তু তার শ্বশুরবাড়িরই অবদান রয়েছে। কারণ তার শ্বশুর বাড়িতে কড়া নিয়ম ছিল শাড়ি ছাড়া তিনি আর কিছু পরতে পারবেন না। আর এই নিয়মের কারণেই তিনি শাড়ি পরা নিয়ে নানারকম এক্সপেরিমেন্ট শুরু করেন।
প্রথম প্রথম ডলি নিজেই ঠিক করে শাড়ি পরতে পারতেন না। শাড়ি পরতে তার ৪৫ মিনিট সময় লাগতো রোজ। সময় বাঁচাতে তিনি নানাভাবে শাড়ি পরা শুরু করেন। তার সেই সমস্ত স্টাইল বেশ প্রশংসা পেতে শুরু করে সকলের থেকে। ক্রমে শাড়িকে ভালোবেসে ফেলেন ডলি। ছোটবেলায় যেভাবে খেলার ছলে পুতুলকে শাড়ি পরাতেন সেভাবেই একটা ম্যানিকুইন কিনে তাকে নানাভাবে শাড়ি পরানোর অভ্যাস করতেন। এমনকি মাঝরাতে কোনও আইডিয়া মনে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তার পরীক্ষা করেছেন ম্যানিকুইনের উপর।
এইভাবে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে করতেই প্রায় সাড়ে তিনশোর বেশি কায়দায় শাড়ি পরানোর কৌশল রপ্ত করে ফেলেন ডলি। ধীরে ধীরে তার জনপ্রিয়তা ছড়াতে শুরু করে। দ্রুত শাড়ি পরানোর রেকর্ড রয়েছে তার। সবচেয়ে দ্রুত ১২৫ রকমের কায়দায় শাড়ি পরানোর জন্য লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে নাম তুলেছেন তিনি। ২০১১ সালে সবচেয়ে দ্রুত শাড়ি পরার জন্য বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে তার নাম শামিল হয়।
ক্রমে ডলির জনপ্রিয়তা বলিউড পর্যন্ত পৌঁছে যায়। মণীশ মালহোত্রা, আবু জানি-সন্দীপ খোসলা, সব্যসাচীর মতে ফ্যাশন ডিজাইনারদের শাড়ি পরানোর জন্য বিভিন্ন ফটোশুটে ডাকা হয় ডলিকে। এছাড়া হলিউডের গিগি হাদিদ, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া থেকে শুরু করে দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভাট, ক্যাটরিনা কাইফ, নয়ন তারাকে তাদের বিয়ের দিনে শাড়ি পরিয়েছেন ডলি। সিদ্ধার্থ মালহোত্রা এবং কিয়ারা আদবানীর বিয়েতে কিয়ারাকে শাড়ি ও লেহেঙ্গা পরিয়েছেন। সিদ্ধার্থর উড়নি তিনি স্টাইল করে দেন।
শুধু বলিউড নয়, মুকেশ আম্বানির মেয়ে ইশা আম্বানিকেও বিয়ের শাড়ি পরিয়েছিলেন কলকাতার এই গৃহবধূ। মুকেশ আম্বানির বড় বৌমা শ্লোকা মেহতা এবং ছোট বৌমা রাধিকা মার্চেন্টের বাগদানের অনুষ্ঠানে তাদের শাড়ি পরিয়েছেন। এছাড়া সম্প্রতি অনন্ত আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের প্রাক বিবাহ অনুষ্ঠানে রাধিকাকে শাড়ি পরিয়েছেন। ভারতীয় ক্রিকেটার হার্দিক পান্ডিয়ার বিয়েতে তার স্ত্রী নাতাশাকেও শাড়ি পরিয়েছেন ডলি। মেটগালা ফ্যাশন ইভেন্টে ভারতীয় শিল্পপতি আদর পুনাওয়ালার স্ত্রী নাতাশা পুনাওয়ালাকে সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ডিজাইনের শাড়ি পরিয়েছিলেন ডলি।
আরও পড়ুন : ছেলের বিয়েতে কত টাকা খরচ করলেন মুকেশ আম্বানি? টাকার অঙ্ক শুনলে হাঁ হয়ে যাবেন
আরও পড়ুন : নীতা আম্বানির গলার এই হার দিয়েই কিনতে পারবেন আস্ত একটা দেশ
বিগত ১০ বছরে শাড়ি পরানোর ৩৬০ ধরনের কৌশল বের করেছেন তিনি। ডলি নাকি শাড়ি পরানোর জন্য ৩৫,০০০ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক দাবি করেন। তবে তার হাতের জাদুতে মুগ্ধ তারকাদের কাছে এই টাকা কিছুই নয়। ডলির ২ মেয়ে রয়েছে। কাজের জন্য বেশিরভাগ সময়টা তাকে বাইরেই কাটাতে হয়। যেটুকু সময় পান সেটুকু পরিবারের সঙ্গে কাটাতেই তিনি পছন্দ করেন।
View this post on Instagram