চাকরি ছেড়ে নাটকের দল, কঠিন সময়ে পাশে ছিলেন রেশমি, স্ত্রীকে কুর্নিশ কৌশিক সেনের

জীবনে একটা ‘স্টেপ আউট’ জরুরি। গতানুগতিক ধারায় জীবনে না এগিয়ে যারা সেই সাহস দেখাতে পারেন তারাই তো অন্যদের থেকে আলাদা করে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন। যেমনটা করতে পেরেছিলেন কৌশিক সেন (Koushik Sen)। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি ছেলে যার কাঁধে সেদিন ছিল গোটা পরিবারের দায়িত্ব। তিনি যদি সেদিন সংসারের ভারে অভিনয়ের বাসনা ত্যাগ করতেন টলিউডের (Tollywood) অনেক ক্ষতি হয়ে যেত না কি?

তবে জীবনে চলার পথে এই একটা ‘স্টেপ আউট’ এর সিদ্ধান্ত তিনি হয়তো কখনও নিতে পারতেন না যদি তার পাশের মানুষটাই কঠিন সময়ে পাশে না দাঁড়াতেন। তিনি কৌশিক সেনের স্ত্রী রেশমি সেন (Reshmi Sen)। পেশায় তিনিও একজন অভিনেত্রী। সেই স্কুল জীবনের আলাপ, প্রেম-ভালোবাসা, বিয়ে, সন্তান সংসার, জীবনের অনেক চড়াই-উতরাইয়ের সাক্ষী থাকা। প্রতিমুহূর্তে স্ত্রীকে পাশে পেয়ে এসেছেন।

কৌশিকের কথায় জানা যায় রেশমির সঙ্গে তার প্রেমের শুরুটা যখন হয় তখন তারা দুজনেই স্কুল পড়ুয়া। কৌশিক তখন দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র, রেশমি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের সঙ্গে সেদিন স্বচ্ছল পরিবারের মেয়েটির সম্পর্ক আটকায়নি। পরবর্তী দিনেও কখনও কৌশিকের হাত ছেড়ে যাননি রেশমি। কঠিন মুহূর্তে সর্বদা পাশে থেকেছেন।

একটা সময় ছিল যখন পরিবারের দায়িত্ব নিতে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতে শুরু করেন কৌশিক। তবে চাকরি মাঝপথে ছেড়ে দিয়ে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন নাটকের দলে। সেদিনের সেই সাহসী সিদ্ধান্তে পাশে থেকেছিলেন রেশমি। অভিনেতার কথায়, “চাকরি ছেড়ে অভিনয়কে বেছে নিয়ে নাটকের দল তৈরি করি। তারপর ছোটপর্দা, বড়পর্দায় অভিনয়। সবসময় পাশে ছিল রেশমি।”

তার কথায়, “অনিশ্চয়তা দেখেও কখনও সরে যায়নি। ওর মত স্টেপ আউট করে ছক্কা মারতে খুব কম মানুষকে আমি দেখেছি। ওর জীবনের থিওরিটাই হল, স্টেপ আউট করো। দু-একবার মিস হলে হলেও.. ঠিক ছক্কা মারবেই।’’ শুধু তাই নয় ছেলে ঋদ্ধির ক্ষেত্রেও সাহস দেখিয়েছিলেন রেশমি। পড়াশোনা এবং অভিনয় সমানতালে চালিয়ে যাওয়া ঋদ্ধির পক্ষে চাপের হয়ে দাঁড়িয়েছিল। না হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রেশমিই।

ছেলের জন্যও গতানুগতিক পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত না নিয়ে উল্টো রাস্তায় হেঁটেছিলেন রেশমি। এই প্রসঙ্গে কৌশিক বলেন, ‘‘পড়াশোনা নয়, ঋদ্ধি (Riddhi Sen) যে অভিনয়ই করবে সেটাও রেশমির সিদ্ধান্ত। ও যে প্রথাগত পড়াশোনা ছাড়বে সেই ঝুঁকিও রেশমি নিয়েছিল। তাতে পরবর্তীকালে ওর উপকারই হয়েছে।’’