মহালয়ার (Mahalaya) ভোরে ঘুম থেকে উঠে অতি উল্লাসেই টিভি খুলে ঔ মহালয়া দেখতে বসেছিলেন ইউটিউবার ঝিলম গুপ্তা (Jhilam Gupta)। তবে টিভিতে তিনি যা দেখে ফেলেছেন তারপর নিজেকেও কার্যত ক্ষমা করতে পারছেন না। জি বাংলা, স্টার জলসা, কালার্স বাংলার মহালয়া দেখে তার একটাই মন্তব্য, ‘মহা ভুল করলাম’! সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিওতে তিনি তুলে ধরেছেন তার প্রতিক্রিয়া।
এই বছরের মহালয়ার অনুষ্ঠানে স্টার জলসা সোনামণি সাহা, জি বাংলা শুভশ্রী গাঙ্গুলী এবং কালার্স বাংলা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে দেবীর সাজে উপস্থাপন করে। সেইসঙ্গে তিনটে চ্যানেলে সিরিয়ালের অভিনেত্রীদের দেবীর বিভিন্ন রূপে তুলে ধরেছিল। কাস্টিং নিয়ে ঝিলমের তেমন কোনও সমস্যা নেই, তবে তিনি মহালয়াতে আসল গল্প ছেড়ে অতিরঞ্জিত বিষয়বস্তু এবং অত্যধিক নাচ দেখে বিরক্ত।
ঝিলমের দাবি তিনি তিনটি চ্যানেলে ঢুকেই মহালয়া নামক কমেডি অনুষ্ঠানটি দেখেছেন এবং তারপর যার পর নাই বিরক্ত হয়েছেন। প্রত্যেকটি চ্যানেল মহালয়ার ভোরে হয়ে ওঠে নাচের স্কুল! সেখানে আর কিছু না থাকুক টিভির পর্দা জুড়ে নাচগান আর দাপাদাপি চলবেই। ছেলে, মেয়ে, অসুর সবাই নাচছে, সেইসঙ্গে সিংহও বাদ যাচ্ছে না। ‘মা দুর্গার সঙ্গে পাল পাল সিংহ! এত সিংহ এরা পেল কোথায়?’, প্রশ্নটি রেখেছেন ঝিলম।
মিনিটে মিনিটে নাচ, মালাইকা আরোরা মত অসুরের বেঁকে বেঁকে হাঁটা, অসুরের মুখে অতিরিক্ত মেকআপ সব নিয়েই বিরক্তি উজাড় করে দিয়েছেন তিনি। তবে ঝিলম কিন্তু কালার্স বাংলার ‘দশমহাবিদ্যা’তে মা কালী ওরফে অভিনেত্রী শ্রুতি দাসকে একমাত্র একটু বেশি নম্বর দিয়েছেন তার অভিনয়ের জন্য। ঝিলমের এই ভিডিও দেখে তাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন শ্রুতি।
মহালয়ার বিভিন্ন দৃশ্যে যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অতিরিক্ত বিদ্যুতের ঝলকানি যেন চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। কালার্স বাংলা তো আবার মহাদেবকে কাঁদিয়ে ছেড়েছে! পার্বতীর নানা রূপ দেখে মাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে কেঁদেছে মহাদেব! এগুলো কি আদেও পুরানে ছিল? প্রশ্নটি তুলেছেন আরেক ইউটিউবার অ্যামিউজিং রি।
মহালয়ার প্রতি বাঙালির যে আবেগ থাকে, টিভিতে মহালয়া নিয়ে দর্শকদের যে চাহিদা থাকে তার দিকে ধ্যান দেয় না চ্যানেলগুলো। প্রোডাকশন হাউসের হাতে মহালয়ার অনুষ্ঠান যেন হয়ে ওঠে কমেডি শো। এখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে কী বার্তা যাবে? আজকের প্রজন্ম এখনও সেই পুরনো যুগের মহালয়াকেই সেরা বলে মনে করে। তখন এত ভিএফএক্স ছিল না, ছিল না এত চড়া মেকআপ বা দামী গয়না। মূল বিষয়বস্তুর যে গুণমান ছিল, তা আজ খুঁজলেও পাওয়া যায় না। ঝিলমের কথার সঙ্গে তাই সহমত পোষণ করছেন দর্শকরা।