পণ না দিলে বিয়েতে বসবে না বর! পাত্রকে শুটিয়ে লাল করলো শ্বশুরবাড়ির লোক

বিয়ের মন্ডপে উপস্থিত বরপক্ষ। বিয়ের আয়োজনে ত্রুটি রাখেনি কন্যাপক্ষ। আমন্ত্রিত অতিথিরা সব নিমন্ত্রণ রক্ষা করে খেতে বসে গিয়েছেন। আচমকা জোর শোরগোল উঠলো বিয়েবাড়িতে। বরের বিরুদ্ধে রে রে করে উঠলেন কন্যাপক্ষ! সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিওতে (Viral Video) দেখা যাচ্ছে কনেযাত্রীদের হাতে মার পর্যন্ত খেয়ে গেলেন বেচারা বর! হঠাৎ কেন বরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন সকলে? তার অবশ্য যথেষ্ট কারণ আছে। বিয়ের (Wedding) আসরে এসে বরের দাবি তাকে ১০ লক্ষ টাকার পণ (Dowry) দিতেই হবে! যদি কন্যাপক্ষ অর্থের জোগান দিতে অপারগ হন তাহলে বিয়ে ভেঙে দিয়ে চলে যাবে বর।

এমন হুমকির মুখে পড়ে কন্যাপক্ষের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙলো। তখন আর তারা বর কিংবা বরপক্ষ বলে রেয়াত করলেন না কাউকে। বিয়ে বাড়িতে গণধোলাই খেল বর। যতদূর জানা যাচ্ছে, বিয়ের জন্য মেয়ের বাড়ি থেকে লাখ টাকার হীরের আংটি এবং ১০ লক্ষ টাকার নগদ চেয়েছিল বরপক্ষ। সেই দাবি মেনে মেয়ের বাড়ি থেকে তিন লক্ষ টাকা এবং হীরের আংটি দেওয়া হয়েছিল। তবে বিয়ের আগে পর্যন্ত বাকি টাকাটা দেওয়া হয়নি। এতেই বিয়ের মন্ডপে এসে তুলকালাম বাঁধিয়ে দেয় বরপক্ষ। এমনকি টাকা না দিলে বিয়ে হবে না বলেও হুমকি দেয় বরপক্ষ।

বরের রকমসকম দেখে ধৈর্য হারান কন্যাপক্ষ। ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বরকে ঘিরে ধরেছে উত্তেজিত জনতা। তাকে রামধোলাই দেওয়া হচ্ছে। বিয়ের মন্ডপে উত্তেজনা বাড়ায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ। পণ দেওয়া-নেওয়া করতে গিয়ে বর বাবাজি শেষমেষ পুলিশের জালেই জড়িয়ে পড়লেন। তবে পুলিশের তদন্তে ফাঁস হলো বিস্ফোরক তথ্য। বর বাবাজি এর আগেও নাকি দু-তিনবার বিয়ে করেছেন। তবে এবারে আর শেষ রক্ষা হলো না।

ভারতীয় সংবিধানে পণ নেওয়া এবং দেওয়া, দুটোই দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে আইনের বিচারের পরোয়া না করেই আজও ভারতের আনাচে-কানাচে চলছে পণপ্রথা। এমনকি নির্ধারিত পণ না পেলে বিয়ের আসরে উপস্থিত হয়েও বিয়ে ভেঙ্গে দেওয়ার কথা আজও ভাবতে পারে বরপক্ষ। সম্প্রতি যেমনটা ঘটলো উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ জেলার শাহীবাবাদ এলাকার ওই বিয়েবাড়িতে।

গল্পটা এখানেই শেষ হয়নি। এর পর বরের সব খুঁটিননাটি প্রকাশ্যে চলে আসে। মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা জানায়, কিছুক্ষণ পর জানতে পারে বর ইতিমধ্যে দুই থেকে তিনবার বিয়ে করেছে। মেয়েটির লোকজন তার অপরাধের ছবিও লোকজনকে দেখিয়েছে। অভিযুক্ত বরের নাম মুজ্জামিল, যিনি আগ্রার বাসিন্দা। তবে বিয়ের মঞ্চে বরকে মারধরের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও দেশের অনেক শহরে যৌতুকের দাবিতে বরকে মারধর বা বরকে পিটিয়ে বিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।