ভারতীয় রেল (Indian Rail) বর্তমানে যাত্রীদের সুবিধার্থে উন্নত থেকে উন্নততর সুযোগ-সুবিধা আনছে। যাত্রাপথ যাত্রীদের কাছে যাতে আরও বেশি আরামদায়ক হয়, তার জন্য থাকা-খাওয়াতে নিত্যনতুন বন্দোবস্ত হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয় রেল আজও সেই ব্রিটিশ আমলের নিয়ম-কানুন মেনে চলছে।
ভারতীয় রেলে ট্রেন চালক এবং স্টেশন মাস্টারের মধ্যে টোকেন এক্সচেঞ্জ সিস্টেমটা ভারী অদ্ভুত। এক স্টপেজ থেকে অন্য স্টপেজে ট্রেনটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে স্টেশন মাস্টারের থেকে ট্রেনের লোকো পাইলটকে যে টোকেনটি (Indian Rail Token Exchange System) দেওয়া হয় সেটি হল একটি বড় লোহার রিং। এটা কেন ব্যবহার করা হয় তা বেশিরভাগ মানুষই জানেন না।
এটি সেই ব্রিটিশ আমলের একটি প্রযুক্তি যেটা ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে আসা হচ্ছে প্রায় ১৫০ বছর ধরে। এই লোহার রিং টোকেন এক্সচেঞ্জ সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার করতেন ব্রিটিশরা যাতে ট্রেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে। আসলে আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে যখন ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা প্রথম শুরু হয় তখন আজকের মত এত উন্নত ট্র্যাক সার্কিট ছিল না।
সেই সময় যাতে একটি ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের সংঘর্ষ না হয় তার জন্য এই টোকেন সিস্টেম চালু করা হয়েছিল। আগে রেলপথে শুধু ছোট এবং একক লাইন ছিল যে কারণে উভয়দিকের ট্রেন একই লাইনে চলাচল করত। তাই দুটি ট্রেনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে এই ভাবেই টোকেন আদান-প্রদানের ব্যবস্থা শুরু হয়।
এই সিস্টেমটি চালু না করা পর্যন্ত ট্রেনগুলো একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খেত। যখন এই সিস্টেম চালু হয় অর্থাৎ একটি লোহার বড় রিং যখন স্টেশন মাস্টার লোকো পাইলটকে দেন তার অর্থ হল পরবর্তী স্টেশনের লাইন পরিষ্কার রয়েছে। এই পথে নির্বিঘ্নে ট্রেন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। অনেক সময় যেসব স্টেশনে ট্রেনের স্টপেজ থাকে না সেখানে চলমান ট্রেন থেকেই স্টেশন মাস্টার এবং ট্রেন চালক টোকেনের বিনিময় করেন।
চলমান ট্রেন থেকে যাতে সহজেই টোকেন বিনিময় করা যায় তার জন্য এমন একটি বড় লোহার রিংয়ের এর ব্যবহার শুরু হয়। এখন অবশ্য টোকেন বিনিময় ব্যবস্থা ট্র্যাক সার্কিট দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে ভারতে। তবুও দেশের কিছু কিছু প্রান্তে আজও এইভাবে লোহার রিং বিনিময় ব্যবস্থা চালু আছে।