এই মুহূর্তে বলিউডের (Bollywood) প্রথম সারির অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছেন আয়ুষ্মান খুরানা (Ayushman Khurrana)। তবে তাকে সাধারণত ছবিতে মারকাটারি অ্যাকশন দৃশ্যে বড় একটা দেখা যায় না। তবে নিজের ট্যাবু ভেঙ্গে এবার ‘অ্যান অ্যাকশন হিরো’ ছবির অভিনেতা হলেন তিনি। আগামী ২রা ডিসেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে এই ছবিটি। আপাতত জোর কদমে ছবি প্রচার চালাচ্ছিলেন তিনি। তখনই নিজের শরীরের এক বিরল রোগ সম্পর্কে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন আয়ুষ্মান।
আয়ুষ্মান জানিয়েছেন অ্যাকশন হিরো চরিত্রে অভিনয় করা তার পক্ষে মোটেই সহজ ছিল না। তার প্রধান কারণ তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মস্তিষ্কের একটি সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলে ভার্টিগো। এই রোগে হঠাৎ হঠাৎ মাথা ঘুরে ওঠে। কোনও জায়গায় দাঁড়িয়ে কাজ করতে করতেই আচমকা মাথা ঘুরে যেতে পারে। এমনকি শুয়ে শুয়ে মোবাইল ঘাটতে ঘাটতেও আচমকা যেন মনে হয় ঘরটা ঘুরতে শুরু করেছে।
ভার্টিগো হলে শারীরিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। সাধারণত মস্তিষ্কের ভেস্টিবিউলার সিস্টেমের গোলমাল হলে এই রোগ দেখা দেয়। মস্তিষ্কের ভেস্টিবুলার অংশের যে স্নায়ুগুলি দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে, সেই স্নায়ু কাজ করা বন্ধ করে দিলেই ভার্টিগো রোগ হতে পারে। এছাড়া কানের মধ্যে কোনও সংক্রমণ হলেও এই রোগ দেখা দিতে পারে। কানের সংক্রমণ বা ভেস্টিবুলার নিউরাইটিসের কারণে ভার্টিগো হতে পারে।
কানের সংক্রমণের কারণে বেশ কয়েকদিন বমি বমি ভাব এবং ভার্টিগোর সমস্যা দেখা দেয়। কানে মেনিয়ারের মত অসুখ হলেও ঘন ঘন ভার্টিগো হয়। সেক্ষেত্রে কানের নালিকার মধ্যে তরল জমে যায়। এই রোগের ক্ষেত্রে শ্রবণশক্তি নষ্ট হতে পারে। ভার্টিগো আবার মস্তিষ্কের রোগের সংকেতও দেয়। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তারাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
আয়ুষ্মান জানিয়েছেন অ্যান অ্যাকশন হিরো ছবির শুটিং চলাকালীন উঁচু বিল্ডিং থেকে ঝাঁপ দেওয়ার একটা দৃশ্য ছিল। তার আগে অবশ্য টেকনিশিয়ানদের তরফ থেকে সব রকমের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল আয়ুষ্মানের জন্য। তবে তবুও তার মনে হচ্ছিল যে কোনও মুহূর্তে যে কোনও অঘটন ঘটে যেতে পারে। তার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছিল। মনের মধ্যে অজানা ভয় কাজ করছিল।
যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে কিংবা আগে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে ভার্টিগোর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আয়ুষ্মান নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন। ওষুধ খেলে তিনি ভালই থাকেন বলে জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে। সেই সঙ্গে যদি মনকে শান্ত রাখা যায় তাহলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। আয়ুষ্মান আরও জানিয়েছেন এই রোগ থেকে পুরোপুরি প্রতিকার পাওয়া সম্ভব নয়। শুধু মনের জোর রাখতে হবে।