রূপঙ্করকে উচিত শিক্ষা দিয়ে জাতীয় মঞ্চে বাংলা গান গাইলেন অরিজিৎ সিং, সুরের জাদুতে আচ্ছন্ন নেটদুনিয়া

বাংলা ভাষা, বাংলা গান (Bengali Song), বাংলার সঙ্গীতশিল্পীরা (Bengali Singer) বাঙালিদের কাছেই নাকি বিশেষ পাত্তা পাচ্ছে না! সম্প্রতি বাঙালি শিল্পীদের উপেক্ষা করে বলিউডের শিল্পীদের নিয়ে মাতামাতি করার আক্ষেপ ফেসবুক ভিডিওতে তুলে ধরেছিলেন রূপঙ্কর বাগচী। তার সেই ফেসবুক লাইভ ভিডিও জন্ম দিয়েছিল কেকে-রূপঙ্কর বাগচীর (Rupankar Bagchi) বিতর্ক। যা নিয়ে ক্ষোভের আঁচ এখনও কমেনি।

কেকে-কে নিয়ে রূপঙ্কর বাগচীর মতামত একসঙ্গে বহু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কেকের প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করায় রূপঙ্করের বিরুদ্ধে ঝরে পড়েছে নেটিজেনদের ক্ষোভ। একই সঙ্গে আবার প্রাদেশিকতা এবং ভাষার লড়াইয়ের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। রূপঙ্কর পরবর্তী সময়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে বলেন তিনি বলতে চেয়েছিলেন বাংলার বাইরের শিল্পীদের নিয়ে যতটা মাতামাতি হচ্ছে এই বাংলায়, প্রকৃত বাঙালি শিল্পীদের নিয়ে তা লক্ষ করা যায় না।

এই কথা প্রসঙ্গেই আবার উঠে আসে বাংলা এবং বাঙালি শিল্পীদের সঙ্গে অ-বাংলা গান ও অবাঙালি শিল্পীদের তুলনামূলক আলোচনা। কিন্তু সঙ্গীত কি কখনও ভাষার বেড়াজালে আটকে থাকতে পারে? ভাষার তর্কাতর্কির ঊর্ধ্বে উঠে গানের মাধ্যমেই সব ঝগড়া বিবাদ মিটিয়ে দিলেন আরেক বাঙালি শিল্পী অরিজিৎ সিং (Arijit Singh)। একটি সর্বভারতীয় হিন্দি বেসরকারি চ্যানেলে তার কণ্ঠে শোনা গেল বাংলা গান।

এক নয়, প্রয়াত সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া একাধিক বাংলা গান তিনি শোনালেন হিন্দি চ্যানেলের মঞ্চে। গিটার হাতে নিয়ে গাইলেন, ‘দে দোল দোল দোল, তোল পাল তোল’, ‘বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি’, ‘যা রে উড়ে যা রে পাখি’, ‘মন লাগে না’, ‘ওগো আর কিছু তো নাই’, ‘যায় যায় প্রাণ যায়’, ‘চলে যেতে যেতে’-র মতো এভারগ্রীন গানগুলি। সঙ্গে হিন্দি গানও গেয়েছেন। একই সুরের বাংলা এবং হিন্দি গান পরস্পর মিলিয়ে মিশিয়ে সব বিভেদ যেন দূর করে দিয়েছেন অরিজিৎ।

অরিজিতের এই পারফরম্যান্সে মুগ্ধ বাঙালির হৃদয়। লতা মঙ্গেসকারকে কখনও তিনি মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন, কখনও আবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তার তুলনা করেছেন। অরিজিত যেন নিমেষের মধ্যেই সব বিভেদ দূর করে দিলেন তার গানের মাধ্যমে। গানের ভাষা কখনও লড়াইয়ের বিষয়বস্তু হতে পারে না, গান বরং সমস্ত ঝগড়া-বিবাদের অবসান ঘটাতে পারে। অরিজিত প্রমাণ করেছেন মানুষ ভাষাকে নয়, প্রতিভাকে ভালোবাসেন। তার মত শিল্পীদের জন্যই কখনও বাংলা গান আজীবন থেকে যাবে শ্রোতার হৃদয়ে।