অভিনেত্রী হওয়া মুখের কথা নয়। আরও কঠিন একজন অভিনেত্রীর পক্ষে বিয়ের পর সংসার করা। যদি শ্বশুরবাড়ির লোকজন তেমন সাপোর্টিভ না হন, তাহলে তো কথাই নেই। এমনই কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল অভিনেত্রী অনামিকা সাহাকে। বাংলা সিনেমার এই দাপুটে অভিনেত্রী বর্তমানে বাংলা সিরিয়ালে বেশ চুটিয়ে কাজ করছেন। সারা জীবনে অন্তত তিনশটির বেশি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন অনামিকা। কিন্তু তার এই যাত্রাপথ খুব একটা সহজ ছিল না। বিশেষ করে পরিবারের তরফ থেকেই তিনি কখনও কোনও সহায়তা পাননি।
অভিনেত্রী অনামিকা সাহার আসল নাম ছিল উষা। টলিউডে পা রাখার পর তিনি তার নাম বদলে ফেলেন। ১৯৭৩ সালে আশার আলো সিনেমার হাত ধরে তিনি অভিনয় শুরু করেন। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা, তাপস পাল, চিরঞ্জিতদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। এই অভিনয় করা নিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে তাকে কম কটাক্ষ সহ্য করতে হয়নি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে নানাভাবে কথা শোনাতেন।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে অনামিকা বলেন শ্বশুরবাড়ি থেকে বারবার তাকে বলা হত তার মেয়েও মায়ের মত নেচে বেড়াবে। তার আর পড়াশোনা হবে না। আসলে অনামিকা এবং তার স্বামী বোধিসত্ত্ব মজুমদার দুজনেই অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে তাদের বড় স্বপ্ন ছিল মেয়েকে নিয়ে। মেয়ে রাইকে ভালোবেসে অনামিকা ডাকতেন চিনি বলে। তিনি মেয়েকে বারবার বলতেন, “চিনি মন দিয়ে পড়াশোনা কর। এটা লেখাপড়ার বাড়ি। তোকেও সেটাই করতে হবে। আমার মেয়ে কিন্তু আমার কথা রেখেছে।”
আরও পড়ুন : গুরুতর অসুস্থ অনামিকা সাহা! ‘তেঁতুল পাতা’র ঠাম্মিকে নিয়ে উদ্বিগ্ন নেটপাড়া
আরও পড়ুন : “হারামজাদা, বুদ্ধি হবে না জীবনে!” প্রসেনজিতের উপর রেগে খাপ্পা অনামিকা
অনামিকা সাহার মেয়ে কী করেন?
অনামিকা সাহার মেয়ে রাই একজন অধ্যাপিকা মনস্তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি এখন। তার লেখা গবেষণাপত্র বই আকারে ছেপে বেরোয়। গোটা বিশ্ব সেই বই পড়ে। এখন দিল্লির দুটি কলেজে অধ্যাপনাও করছেন তিনি। কাজেই অনামিকা যেমন একজন সফল অভিনেত্রী, তেমন মা হিসেবেও সফলতা অর্জন করতে পেরেছেন তিনি সমাজকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে।