স্টার জলসা (Star Jalsha) চ্যানেলের সুপার সিঙ্গার সিজন ৪ (Super Singer Season 4) সংগীতের প্রতিযোগিতা এখন ফিনালের পথে এগোচ্ছে। ফাইনাল রাউন্ডের জন্য প্রতিযোগীদের বাছাই করেছেন বিচারকরা। এই সিজনে ফাইনালিস্ট হয়েছেন অন্বেষা মন্ডল (Anwesha Mondal)। তিনি এখন বাংলার দর্শকদের কাছে একজন অন্যতম প্রিয় গায়িকা। তার গান শুনে যেমন মুগ্ধ হন তারা, তেমনই তার লড়াইয়ের গল্পটা জেনে তারা অভিভূত হন।
কলকাতার সোনারপুরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে ছেলে হয়ে জন্ম নিয়েছিলেন অন্বেষা। তখন তার নাম ছিল সুমন। তার বাবা চাকরি-সুত্রে পুরুলিয়ার বাসিন্দা। ছোট থেকে আদ্রা রেল স্টেশনের কোয়ার্টারেই বড় হয়েছেন তিনি। তবে বড় হতে হতে সুমন নিজের মধ্যে নারীসত্ত্বা অনুভব করতে শুরু করেন।
তিনি বুঝতে পারেন শরীরের দিক থেকে তিনি ছেলে হলেও মনের দিক থেকে তিনি একজন মেয়ে। এই সমাজে এখনও একজন ছেলে থেকে মেয়ে হয়ে ওঠা সহজ নয়। সুমনকে তাই এক কঠিন পথ পার হতে হয়েছে। তিনি নিজের অপারেশন করানোর জন্য তিল তিল করে টাকা জমিয়েছিলেন। সমাজের কটাক্ষের পরোয়া না করে গান নিয়ে এগিয়েছেন।
ছোট থেকেই গানের প্রতি তার আগ্রহ ছিল। সুপার সিঙ্গারের মঞ্চ তাকে নতুন করে এগোতে সাহায্য করেছে। একটা সময় ছিল যখন অপারেশনের পর তার হাতে বিশেষ টাকা ছিল না। তখন কল সেন্টারে কাজ করতেন অন্বেষা। সুপার সিঙ্গারের এই মঞ্চ তাকে নতুন জীবন দিয়েছে। তবে এখানে আসার পরেও তাকে অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে নেটমাধ্যম থেকে।
তবে তিনি তার গানের মাধ্যমে পরিচিতি পাচ্ছেন এখন। তিনি কে, তার লিঙ্গ পরিচয় কী এসব নিয়ে মাথাব্যথা করার থেকেই তার গানের মধ্যে ডুবে গিয়েছেন শ্রোতারা। এই প্রথম কোনও গানের মঞ্চে রূপান্তরকামী প্রতিযোগী অংশ নিলেন। স্টার জলসার সুপার সিঙ্গার অন্বেষাকে নতুন করে জীবন শুরু করার সুযোগ দিয়েছে। আজ তিনি তার পুরুলিয়া জেলার গর্ব।
আরও পড়ুন : কোথায় হারিয়ে গেলেন অরিজিতের বহুলচর্চিত প্রথম স্ত্রী রূপরেখা? এখন কোথায় আছেন তিনি?
পুরুলিয়ার আঞ্চলিক ফেসবুক গ্রুপগুলোতে অন্বেষাকে নিয়ে মাতামাতি চোখে পড়ছে। সকলেই চাইছেন তিনিই যেন ট্রফি জিতে নিতে পারেন। অন্বেষাল সঙ্গে এই লড়াইতে সামিল শুভদীপ, শ্রেয়া, বিশ্বরূপ, অনুরাধা এবং অনিন্দিতারা। তাদের সবাইকে পেছনে ফেলেন অন্বেষা ট্রফি জিতে নিতে পারেন কিনা সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন : ইন্ডিয়ান আইডলের চ্যাম্পিয়ন তবুও পাত্তা দেয় না বলিউড, কোথায় হারিয়ে গেলেন অভিজিৎ সাওয়ান্ত?