মহিলাদের প্রেগন্যান্ট করলেই মিলবে ১৫ লাখ! ফাঁদে পা দিলেই সর্বনাশ

নিঃসন্তান মহিলাদের প্রেগন্যান্ট করলেই মিলবে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা! ভুয়ো বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা দিয়ে সব সঞ্চয় খুইয়ে ফেলছেন পুরুষরা। ডিজিটাল অ্যারেস্ট, ফিশিং, ওটিপি জালিয়াতি, গ্যাসের ভর্তুকির নামে প্রতারণা, শেয়ার বাজারের নামে প্রতারণার পর এবার জালিয়াত চক্রের নতুন ফন্দি প্রেগনেন্সি জালিয়াতি। আর এই ফাঁদে পা দিয়েও ফেলছেন পুরুষরা। ‌বিহারের নওয়াদা থেকে এবার যে জালিয়াত চক্রের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে তাদের কাণ্ডকারবার দেখে মাথায় হাত সাইবার বিশেষজ্ঞদের।

নতুন এই প্রতারণার নাম দেওয়া হয়েছে প্রেগনেন্সি জব স্ক্যাম। এতে কিছু ভুয়ো বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সাধারণের মধ্যে। বিজ্ঞাপনে বড় বড় করে লেখা অল ইন্ডিয়া প্রেগন্যান্ট জব সার্ভিস। বিজ্ঞাপনের পাশে একটি মহিলার ছবিও থাকে এবং নিচে থাকে একটি ফোন নাম্বার। ১০-১৫ লক্ষ টাকা রোজগারের লোক দেখিয়ে সেই ফোনে কথা বলতে বলা হয়। অর্থাভাবে ভুগছেন কিংবা চাকরি খুঁজছেন এরকম যুবকেরা সহজেই পা দিয়ে ফেলছেন এইসব ফাঁদে। ওই নম্বরে ফোন করা হলে তাকে জানানো হয় কোনও নিঃসন্তানকে অন্তঃসত্ত্বা করতে পারলেই ওই ব্যক্তিকে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। না পারলেও ৫০ হাজার টাকা পাবেন তিনি। এতে সায় দিলেই পরবর্তী চাল চালছে প্রতারকরা।

 Pregnancy Scam

প্রতারকদের ফাঁদে পা দিলেই কয়েক হাজার টাকা রেজিস্ট্রেশনের নামে আদায় করে নেওয়া হচ্ছে প্রথমে। এমনকি প্যান কার্ড আধার কার্ডের মত ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া হচ্ছে। তারপর তাদের একটি তারিখ দেওয়া হচ্ছে এবং একটি হোটেলের ঠিকানা দিয়ে দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট দিনে ওই হোটেলে গিয়ে অনেকে দেখেন সেই জায়গাতে কোনও হোটেল নেই। আবার হোটেলে থাকলেও ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার পর সেখানে কোন মহিলার খোঁজ পাওয়া যায় না। ততক্ষণে প্রতারকদের আর ফোনেও পাওয়া যায় না। প্রতারিত হয়েছেন এটা বুঝতেই সময় চলে যায়। আর বুঝেও কিছু করার থাকে না।

আরও পড়ুন : কেন স্বামীর সঙ্গে থাকেন না? অবশেষে জবাব দিলেন গোবিন্দার স্ত্রী সুনিতা

 Pregnancy Scam

আরও পড়ুন : কনটেন্টের নামে নোংরামি, মা ছেলের অন্তরঙ্গতা! প্রতিবাদে সরব নেট নাগরিকরা

পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে যা জানতে পেরেছে সেটা খুবই আশ্চর্যজনক। তারা জানাচ্ছে ১৬ থেকে কুড়ি বছর বয়সী যুবকেরাই এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত। বিহারের নওয়াদার নাদরিগঞ্জ থানার আওতায় কাউয়ারা গ্রামে খোলা মাঠে চালা ঘরে থেকে শুধুমাত্র কয়েকটি সিম কার্ড তুলে দেশ জুড়ে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল তারা। এই প্রতারণা চক্রের নাম দেওয়া হয়েছে জামতারা ২। পুলিশে ইতিমধ্যেই প্রিন্স রাজ, ভোলা কুমার এবং রাহুল কুমার নামে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। যাদের কাছে ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি আসলে এমন কাণ্ডে জড়িয়ে প্রতারিত হলেও সেই ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে দ্বিধাবোধ করেন। তাই এইসব ক্ষেত্রে ঘটনার চেয়ে অভিযোগের সংখ্যা আসে খুবই কম। তবুও পুলিশ ২০২৩ সাল থেকে নওয়াদা জেলাতেই এরকম একের পর এক প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস করে আসছে।