সমকামীরা (Homosexual) আজও এই সমাজের উপেক্ষিত। সমাজ তার সদস্যদের কেবল নারী-পুরুষের ভাগেই ভাগ করতে চায়। সমকামীরাই বা সেখানে কেন অবাঞ্ছিত হয়ে থাকবেন? তারা তো প্রকৃতির বাইরে নন। প্রকৃতির কাছে তার সব সদস্যদের সমানাধিকার। তবে এই প্রজন্মেও সমকামীদের লড়াইটা এখনও শেষ হয়নি।তবে আজকের সমকামীরা আর সমাজের ভয়ে মুখ লুকিয়ে থাকেন না। ভারতে সমকামী সম্পর্ক আইনত স্বীকৃতি পেয়েছে।
এবার একধাপ এগিয়ে দুই সমকামী পুরুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। এদের মধ্যে একজন কলকাতারই (Kolkata) বাসিন্দা। অপরজন হায়দ্রাবাদি। ভারতের প্রথম সমকামী বিবাহের সাক্ষী থাকলো হায়দ্রাবাদ। পরিবারের সদস্যরাও প্রাণভরে আশীর্বাদ জানালেন নবদম্পতিকে। বিগত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছে এই অভিনব বিয়ের ছবিতে। সোশ্যাল মিডিয়াতে শুভেচ্ছার বন্যা বয়ে যাচ্ছে। যদিও কটু মন্তব্যও করতে ছাড়ছেন না কেউ কেউ।
তবে নবদম্পতি সুপ্রিয় চক্রবর্তী এবং অভয় দং সেসবে কান দেওয়ার পাত্র নন। কারণ তাদের লড়াইটা শুরু হয়েছে বহু আগেই। সেই স্কুলে পড়ার সময়ে যখন তারা বুঝতে পেরেছিলেন তারা আর পাঁচজনের মতো ঠিক ‘সাধারণ’ নন। পুরুষ হলেও মহিলাদের তুলনায় পুরুষের প্রতিই আকৃষ্ট তারা। এরপর পেরিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বছর। আজ কলকাতার বাসিন্দা সুপ্রিয় চক্রবর্তী পেশায় একজন হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক। হায়দ্রাবাদের যুবক অভয় দং মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে কর্মরত।
এক অ্যাপ্লিকেশনের মারফত দুজনের পরিচয় হয়। ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। তবে এই ঘনিষ্ঠতা পরিবারের নজরে কাঁটার মতো বিঁধেছিল। আসলে সমাজ যে আজও এমন সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেয় না! এমনকি ভারতীয় আইনেও সমকামী বিবাহ স্বীকৃত নয়। তবে সমাজের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আইনের তোয়াক্কা না করেই চার হাত এক হলো। পাশে দাঁড়ালেন দুই পরিবার। দুই ছেলের ভালোবাসার কাছে হার মেনে বড়রাও এগিয়ে দিলেন আশীর্বাদের হাত।
মেহেন্দি, আশীর্বাদ, আংটি বদল থেকে শুরু করে বিয়ের সব নিয়মকানুন মানলেন দুই বর। এমনকি টোপর আর মালা পরে বিয়ে করতেও এলেন দুজনে। বিয়ের রীতি পালনের সঙ্গে সঙ্গে জমিয়ে ফটোশুটও সারলেন তারা। তাদের আনন্দের ভাগীদার হতে এলেন দুই পরিবারের সদস্যরা। কলকাতার যুবক সুপ্রিয়র কথায়, “পরিবার যে খুব সাপোর্টিভ ছিল, একেবারেই তা নয়। তবে আমাদের সময় দেওয়া হয়েছিল। এখন তাঁরা আমাদের সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিল।” তবে যতই বাধা আসুক না কেন অভয় এবং সুপ্রিয় দুজনের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন। দুজনের হাসি মুখ দেখে নেটিজেনদের মনও ভরে উঠছে।