বাঙালির চিরকালের ম্যাটিনি আইডল মহানায়ক উত্তম কুমার (Uttam Kumar)। তার স্থান আজও সবার উপরে। তিনি চার দশক আমাদের মধ্যে নেই, তবু তিনি সবসময়ই আমাদের সঙ্গে আছেন, টলিউড তার কালজয়ী সব চলচ্চিত্র দিয়ে। উত্তমকুমারের অকাল প্রয়াণ আজও মেনে নিতে পারেনা দর্শকেরা। কিন্তু জানেন কী মৃত্যুর আগে পর্যন্ত উত্তম কুমারের সঙ্গে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছিল তা তিনি মেনে নিতে পারেননি। চলুন জেনে নিই উত্তম কুমারের মৃত্যুর দিনটি কেমন ছিল।
উত্তম কুমারের মৃত্যুর দিন ঠিক কী কী ঘটেছিল?
১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কালো দিন। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে সেদিনই প্রয়াত হন বাংলা ছবির স্বপ্নের হিরো উত্তমকুমার। কিন্তু তিনি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ছবির শুটিং করে গিয়েছেন। তবে সেদিন সকাল থেকেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। পাশাপাশি তার মানসিক অবস্থাও ভালো ছিল না।
তিনি সেই সময় ’ওগো বধূ সুন্দরী’ ছবিতে অভিনয় করছিলেন। আর তার মধ্যে তখন সুপ্রিয়া দেবী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আবার তখন মহানায়কের উপর দেনার চাপ ও অনেক বেশি ছিল। তাই তিনি অসুস্থ থাকার সত্বেও সকাল সকাল স্নান পুজো করে শুটিংয়ের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছিলেন বাড়ি থেকে।
উত্তম কুমারের অকালমৃত্যুর কারণ কী?
কিন্তু গাড়িতে উঠতে গিয়েই হতবাক হলেন মহানায়ক।শুটিংয়ে যাওয়ার সময় দীর্ঘ ১৭ বছর যে জিনিসটা মহানায়ককে সঙ্গ দিয়ে এসেছে আজ তা নেই। তিনি বুঝতে পারলেন তার প্রিয় টেপ রেকর্ডারটি চুরি গিয়েছে। এই রেকর্ডারটি এতটাই প্রিয় ছিল উত্তমের যে প্রিয়জন হারানোর চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন : উত্তম কুমারের সম্পর্কে এই ৬ তথ্য কেউ জানে না
এরপর এত মন খারাপের মাঝেও ওগো বধূ সুন্দরী-র ছবির শুটিং ফ্লোরে হাজির হন অভিনেতা। টেপ রেকর্ডার চুরি মেনে নিতে পারেননি অভিনেতা। খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো করেননি, মন খারাপ নিয়ে সারাদিন কেটেছে অভিনেতার। তবে এটাই যে জীবনের শেষ শুটিং তা টেরও পাননি উত্তম। জীবনের শেষ সংলাপ, ‘আমিও দেখে নেবো আমার নাম গগন সেন’-এটা বলতে বলতেই সেটে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
উত্তম কুমারের মৃত্যুর দিন ঠিক কী কী ঘটেছিল?
তারপরেই বাড়িতে এসে বিছানায় বিশ্রাম না নিয়ে বন্ধু দেবেশ ঘোষের কথা রাখতে সেদিন রাতে তার বাড়িতে হাজির হয়ে হাসি-ঠাট্টায় মেত ওঠেছিলেন উত্তম। সবশেষে যখন মাঝরাতে বাড়ি ফেরেন, তখনই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপরই একেবারে বিছানায়।এরপর উত্তম কুমারকে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়।
আরও পড়ুন : বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়েও নোংরামি! সুপ্রিয়ার মেয়েকে স্বীকৃতি দেননি উত্তম কুমার
আরও পড়ুন : বেঁচে থাকলে আজ কেমন দেখাত উত্তম কুমারকে? দেখুন ছবি
কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি। ততক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ময়রা স্ট্রিটের বাড়িতে আর ফেরা হয়নি মহানায়কের। ২৪ জুলাই চিরঘুমে চলে গিয়েছিলেন উত্তম। উত্তম কুমারের অভিনয় আজও বাঙালির কাছে অমলিন। হঠাৎ করে তিনি চলে যাবেন তা কেউ কল্পনাও করেননি। ২৫০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই কিংবদন্তি।