First Lady Commedian In Bollywood Tun Tun : বলিউড (Bollywood) ইন্ডাস্ট্রি তখন সবেমাত্র মাথা তুলে দাঁড়াতে শিখছে। ঠিক সেই সময়ই অভিনয় দুনিয়াতে পা রাখেন উমাদেবী (Uma Devi)। সময়টা তখন ছিল চল্লিশের দশক। মোটাসোটা ভারী চেহারার এই অভিনেত্রীই ছিলেন হিন্দি ছবির প্রথম কৌতুকাভিনেত্রী (First Lady Commedian In Bollywood)। যাকে দেখলেই হেসে গড়িয়ে পড়তেন দর্শকরা। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘ পাঁচ দশক অতিক্রান্ত করার পরেও তার শেষ জীবন কেটেছে অনাহারে।
উমা দেবী ১৯২৩ সালে উত্তর প্রদেশের আমরোহি জেলার একটি গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন। ছোটবেলাতেই বাবা মা এবং ভাইকে সম্পত্তি দখলের লড়াইয়ে হারান তিনি। এরপর বড় হয়ে ওঠেন আলিপুরে। ছোট থেকেই দারিদ্র্য ছিল নিত্যসঙ্গী। দুবেলা ভাত জোটানোর জন্য তাকে সংগ্রাম করতে হত। তখন আখতার নামের এক ব্যক্তি ছিলেন তার অবলম্বন।
কিন্তু দেশভাগের পর আখতার পাকিস্তানে চলে যান। আবার একা হয়ে পড়েন উমা। ২৩ বছর বয়সে গান নিয়ে জীবনে এগিয়ে যেতে তিনি তার আত্মীয়র বাড়ি থেকে মুম্বাইতে পালিয়ে যান। অন্যদিকে লাহোর ছেড়ে মুম্বাইতে চলে আসেন আখতারও। ১৯৪৭ সালে তারা বিয়ে করেন। নওশাদ আলি নামের এক ব্যক্তি উমাকে সিনেমাতে প্লেব্যাক গাওয়ার সুযোগ দেন।
তখনকার দিনের টপ গায়িকা নুরজাহান, রাজকুমারী, খুর্শিদ বানোদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পান উমা। এক বছরের মধ্যেই নেপথ্য গায়িকা হিসেবে তিনি ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। উমার গান শুনে মুগ্ধ হয়ে তার এক ভক্ত নাকি তার সঙ্গে দেখা করতে চান। তারপর সেই ভক্তকেই বিয়ে করেন উমাদেবী। দুই পুত্র এবং কন্যাকে নিয়ে তাদের সুখের সংসার ছিল।
এদিকে ৪০-৫০ এর দশকের পর লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলেদের সময়ে বেশ পিছিয়ে পড়তে থাকেন উমাদেবী। তখন তাকে অভিনয়ে নামার প্রস্তাব দেন নওশাদ নামের সেই ব্যক্তি। তার প্রাণবন্ত স্বভাব, মজার মজার কথাবার্তার জন্য তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়। প্রথমেই দিলীপ কুমারের ছবিতে নবাগতা হিসেবে পা রাখেন উমা। তখন তার নতুন নাম হয় টুনটুন (Tun Tun)।
উমা মোট ১৯৮ টি হিন্দি ছবিতে কাজ করেছিলেন। তাকে ১৯৯০ সালে শেষ বার ‘কসম ধান্দে কি’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। ২০০৩ সালের ২৩ শে নভেম্বর ৮০ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার শেষ জীবনটা ছিল খুবই কষ্টের। অর্থের অভাবে একপ্রকার বিনা চিকিৎসায়, অনাহারে মৃত্যু হয় অভিনেত্রীর। অভিনেতা শশীরঞ্জন তাকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে সাহায্য করলেও বলিউড প্রথম কৌতুক অভিনেত্রীকে ভুলেই গিয়েছিল।
আরো পড়ুন : ‘শাহরুখকে নিয়ে অনেক বড় ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন আমার গুরু মা’ : হেমা মালিনী
একবার একটু সাক্ষাৎকারে টুনটুন বলেছিলেন, ‘‘আমার ৭৫ বছর বয়স। এখনও আমার বয়স কমই রয়েছে। মান্না দে এই বয়সেও গান করতে পারেন। ইচ্ছা থাকলে আমিও গান গাইতে পারি। কিন্তু আমাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে। এখন নতুন তারকাদের সময়। সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না। আজ তুমি তারকা, আগামী কাল সে জায়গায় অন্য কেউ থাকবেন।’’
আরো পড়ুন : শরীরের অদ্ভুত সব অঙ্গের বীমা করিয়েছেন এই তারকারা, ৫ নম্বরটা বিশ্বাসই করতে পারবেন না