Ravana`s Wife Mandodari : রামায়ণ (Ramayan) নয়, রামায়ণের গল্প অনুসরণ করে নির্মিত আদিপুরুষ (Adipurush) সিনেমাটিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক চলছে দেশের সর্বত্র। দিনে দিনে কমছে ছবির ব্যবসা। কারণ এই ছবির বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক তথ্য বিকৃত করার অভিযোগ। পার্শ্বচরিত্ররা তো দূর, রাম, লক্ষণ, সীতা, রাবণ, হনুমানের চরিত্রগুলোকেই যথাযোগ্যভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়নি এখানে। তবে কখনও কখনও বাস্তবেও রামায়ণের কিছু চরিত্র মূল কাহিনীর আড়ালে ঢাকা পড়ে যান।
এমনই একটি চরিত্র হলেন রাবণের স্ত্রী মন্দোদরী (Mandodari)। লঙ্কাপতি, প্রবলপরাক্রমী রাবণের স্ত্রী ছিলেন তিনি। তবুও তার মধ্যে ছিল না এতটুকু অহংকার। রাবণের প্রতাপে ভয় না পেয়ে তিনি সবসময় নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং মত প্রকাশের ক্ষমতা রাখতেন। প্রতি পদে পদে স্বামীকে সঠিক পরামর্শও দিতেন। তিনি প্রথম থেকেই সীতাকে অপহরণ করার বিরোধী ছিলেন।
মন্দোদরী বারবার রাবণকে অনুরোধ করেন যাতে সীতাকে তিনি তার স্বামীর কাছে সসম্মানে ফিরিয়ে দিয়ে আসেন। কথিত আছে, মন্দোদরী আসলে ছিলেন স্বর্গের অপ্সরা মধুরা। মধুরা ছিলেন শিবভক্ত। একদিন তিনি পার্বতীর অনুপস্থিতিতে কৈলাস পর্বতে গিয়ে মহাদেবকে প্রসন্ন করার চেষ্টা করেন। পার্বতী ফিরে এসে দেখেন মধুরার অঙ্গে মহাদেবের ভস্ম লেগে আছে।
প্রচন্ড রেগে পার্বতী মধুরাকে অভিশাপ দেন তাকে একটি কূপের মধ্যে ব্যাঙ হয়ে ১২ বছর কাটাতে হবে। ১২ বছর ওইভাবে কাটানোর পর একদিন তিনি যখন নিজের ভাগ্যের কথা ভেবে কূপের মধ্যে বসে কাঁদছিলেন তখন তার কান্না শুনতে পান রাক্ষসরাজ মায়াসুর ও তার স্ত্রী। তারা তখন নিকটেই কন্যা সন্তানের জন্য প্রার্থনা করে তপস্যা করছিলেন। মধুরাকে ওই অবস্থায় দেখে তারা তাকেই কন্যা হিসেবে বরণ করে রাজপ্রাসাদে নিয়ে আসেন। নতুন নাম দেন মন্দোদরী।
এরপর একদিন মায়াসুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসে মন্দোদরীকে দেখে মুগ্ধ হন লঙ্কার রাজা রাবণ। তিনি মায়াসুরের কন্যাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। তবে মায়াসুর সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে মন্দোদরীকে বলপূর্বক অপহরণ করেন রাবণ। দুই রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে মন্দোদরী যখন দেখেন তার বাবার রাবণকে প্রতিহত করতে পারবেন না তখন তিনি এই বিবাহ প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।
আরও পড়ুন : রাবণের স্ত্রী হতে নিলেন চড়া পারিশ্রমিক, ‘আদিপুরুষে’র মন্দোদরী আসলে কে জানেন?
রামায়ণের কাহিনী অনুসারে রাবণের মৃত্যুর পর রাম মন্দোদরীকে আশীর্বাদ করে বলেন তাকে কখনও বৈধব্য জ্বালা সহ্য করতে হবে না। তার সিঁথির সিঁদুর কখনও মুছবে না। সেই কারণেই বিশ্বাস করা হয় রাবণের চিতা আজও জ্বলছে। যদিও অন্য একটি কাহিনীতে বর্ণনা করা আছে যে রাবণের মৃত্যুর পর তার ভাই বিভীষণকে বিয়ে করেছিলেন মন্দোদরী। রামের নির্দেশেই তিনি বিভীষণকে স্বামী হিসেবে মেনে নেন।
আরও পড়ুন : রাবণের ১০ টি মাথা কেন? রাবণের ১০ মাথা কিসের প্রতীক?