জিরো থেকে হিরো হওয়া কাকে বলে প্রকৃত অর্থেই তার মানে বুঝিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। একসময় বলিউডে (Bollywood) কাজের সুযোগ না পেয়ে দিনের পর দিন পরিচালক-প্রযোজকদের মুখ ঝামটা শুনেছেন তিনি। কেউ কেউ তো আবার তাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেছিলেন তিনি জীবনে কখনও অভিনেতা হতে পারবেন না। তবে এত নেতিবাচক মন্তব্য শুনেও কখনও জমে যাননি মিঠুন।
বলিউডের পরিচালক, প্রযোজক থেকে শুরু করে তৎকালীন সময়ের ইন্ডাস্ট্রির সুপারস্টাররাও বারবার মিঠুনের মনোবল ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন। অভিনেতা জিতেন্দ্র থেকে শুরু করে রাজকুমাররা সরাসরি তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন। তবুও মুখ বুজে বলিউডের মাটি কামড়ে পড়েছিলেন বলেই হয়ত আজ তিনি টলিউডের পাশাপাশি বলিউডেরও মহাগুরু হতে পেরেছেন।
অভিনেতা যখন বলিউডে সবে মাত্র তার ভাগ্য পরীক্ষা করছেন ঠিক সে সময় তাকে একজন বড় মাপের পরিচালক মুখের উপর বলে দেন, “তুমি যদি হিরো হতে পারো, তবে আমি ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দেব”। পরে সেই পরিচালকের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে মিঠুন সুপারস্টার হয়ে ওঠেন। আর পরিচালকও নিজের ভুল বুঝতে পেরে মিঠুনের কাছে ছবির প্রস্তাব নিয়ে আসেন।
মিঠুন চক্রবর্তী একবার তার একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন তার জীবনে ঘটে যাওয়া সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন ওই পরিচালক পরে তার সঙ্গে একটি সিনেমা করেন। সেই সিনেমা সুপার হিট হয়েছিল। কিন্তু অতীতে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন বলে মিঠুন ওই পরিচালককে অশ্রদ্ধা করেননি। সেই সঙ্গে মিঠুন জানিয়েছেন সেই সময় ছবি তোলার পারিশ্রমিক কত ছিল।
১৯৭৯ সালে বাসু চট্টোপাধ্যায়ের ‘প্রেম বিবাহ’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন মিঠুন। তখন তার গাড়ি ছিল না। তিনি পায়ে হেঁটে শুটিংয়ে আসতেন। আর পারিশ্রমিক ছিল যৎসামান্য। ছবির নায়কের থেকে মেকআপ আর্টিস্টদের পারিশ্রমিক ছিল বেশি। মিঠুন তখন সিনেমা করে পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। আর ওই সময় মেকআপ আর্টিস্টরা পেয়েছিলেন ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা।
তখন মুম্বাইয়ের মত জায়গাতে কোনও রকমে দিন কেটেছে তার। ৭৫ টাকা দিয়ে একটি ঘরে ভাড়া থাকতেন। পোশাক বলতে ছিল একটা ট্রাউজার আর দুটো শার্ট। কোনওরকমের জুতোর জোগাড় হয়েছিল। এভাবেই অভাব নিয়ে আর অপমান সহ্য করে টিকে থেকেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে। তবে তিন বছরের মাথায় ঘুরে যায় তার ভাগ্য। ১৯৮২ সালে ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ হিট হতেই তাকে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি।