কলকাতা ও কলকাতা সংলগ্ন এলাকাগুলিতে পৌঁছনোর সুব্যবস্থা দিয়ে এসেছে হাওড়া স্টেশন। তবে সেটা আজ থেকে নয়। ইংরেজ আমল থেকে এই ব্যবস্থা ছিল হাওড়া স্টেশনে। বর্তমান সময়েও শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম রেল স্টেশনগুলির মধ্যে একটি হল হাওড়া স্টেশন (Howrah Station)। প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রেন যাতায়াত করে এই স্টেশন দিয়ে। বহু যাত্রীর ভিড় দেখা যায় স্টেশনের মধ্যে।
তবে শুধু মাত্র রাজ্যেই নয়, পূর্ব ভারতেও যাতায়াতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে হাওড়া স্টেশনের। সেই কারণেই কিছু দিন আগে দেশের সেমি হাইস্পিড ট্রেন বন্দে ভারতের যাত্রাও শুরু হয়েছিল এই স্টেশন থেকে। তবে বহু পুরনো এই রেল স্টেশনটি যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি রহস্যময়। বহু ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে এই স্টেশনের আনাচে কানাচে।
যারা রোজ ট্রেনে যাতায়াত করেন তারা অনেকেই হয়তো জানেন যে, হাওড়া স্টেশন যেহেতু অত্যন্ত বড় একটি রেল স্টেশন তাই এখানে প্ল্যাটফর্ম সংখ্যাও অন্যান্য স্টেশনের থেকে অনেক বেশি। স্টেশনে ১ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম রয়েছে ওল্ড কমপ্লেক্সে আর ১৭ থেকে ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম রয়েছে নিউ কমপ্লেক্সে। কিন্তু ১৬ নম্বর কমপ্লেক্সেটি কোথাও?
এই প্রশ্ন হয়তো সকলের মনে আসে। আসলে ১৬ হাওড়া স্টেশনে ১৬ নম্বর কমপ্লেক্সে নেই। সেই কমপ্লেক্সের বদলে পণ্য পরিবহণের জন্য একটি ডেডিকেটেড লাইন রয়েছে। এই লাইনটিকে বলা হয় ‘জিরো মাইল’। শোনা গিয়েছে, বাংলার প্রথম ট্রেন পারি দিয়েছিল এই ‘জিরো মাইল’ দিয়ে। ১৮৫৪ সালের ১৫ আগস্টে এই ঘটনা ঘটেছিল। ট্রেন গিয়েছিল হুগলি পর্যন্ত।
প্রথম যাত্রায় প্রায় দু’ঘন্টা লেট হয়ে গিয়েছিল। গল্প এখানেই শেষ নয়, একবার নাকি ঐ লাইন দিয়ে আসা একটি স্ট্রিম ইঞ্জিনকে দেখে সবাক আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলেন। সবাই ঐ ট্রেনটির নাম দিয়ে ছিল ‘আগুনের রথ’। একবার এক বাঙালি ভদ্রলোক দাবি করেছিলেন, “আগুনের রথ ছ’দিনের পথকে মাত্র ৬ ঘন্টায় অতিক্রম করে ফেলতে পারে তাতে চলাচল করলে নিশ্চিতরূপে মানুষের আয়ু কমে যেতে পারে।”
আসলে সেই সময় প্রথমবার ট্রেন দেখে এমন প্রতিক্রিয়াই দেখিয়েছিলেন তখনকার দিনের বাঙালিরা। যদিও এখন এই পরিস্থিতি অনেক বদলে গিয়েছে। এখন সমগ্ৰ ভারতে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হল ট্রেন। তাই ধনী, গরীব সকলের ভরসা করে ট্রেনের উপর।