টলিউড (Tollywood) অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী (Roopa Ganguly) তার কেরিয়ারের শুরুতে হিন্দি সিরিয়ালে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাও আবার যেমন তেমন সিরিয়াল নয়, বি আর চোপড়ার ‘মহাভারত’ (Mahabharat) যা একসময় দূরদর্শনে সম্প্রচারিত হত। পৌরাণিক কাহিনী নির্ভর এই শো কার্যত দর্শকরা আজও ভুলতে পারেননি। ভুলতে পারেননি এই সিরিয়ালের চরিত্রদেরও।
‘মহাভারতে’র প্রত্যেকটি চরিত্রকে জীবন্ত করে তুলে ধরেছিলেন সিরিয়ালের প্রত্যেক কলাকুশলী। এমন একটি আইকনিক সিরিয়ালে দ্রৌপদীর চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন রূপা। এই চরিত্রে অভিনয় করাটা তার কেরিয়ারের অন্যতম মাইলস্টোন বলা যেতে পারে। সেই সঙ্গে শুটিং সেটের একটি ঘটনা এমন ঘটেছিল যেটা কখনও ভুলতে পারবেন না তিনি।
দর্শকদের বিচারে রূপা গাঙ্গুলী এখনও যেন দ্রৌপদী হয়েই আছেন। এখনও তাকে অনেকে এই নামেই ডাকেন। মাঝেমধ্যেই সংবাদ মাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মহাভারতের প্রসঙ্গে উঠে আসে। রূপা তার অতীতের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নেন মিডিয়ার সঙ্গে। একবার এমনই একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন শুটিংয়ের সময় তার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা।
মহাভারতের দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ দৃশ্য বহুল চর্চিত একটি দৃশ্য। পাশা খেলায় শকুনির কাছে সর্বস্ব হারানোর পাশাপাশি বাজিতে দ্রৌপদীকেও হারিয়ে ফেলেন যুধিষ্ঠির। আর তারপরেই ভরা সভায় চুলের মুঠি ধরে টেনে আনা হয় রাজবধূকে। দুঃশাসনের হাতে চরম লাঞ্চিত হতে হয় তাকে। এই দৃশ্যটি রূপার মনে এতটাই আঘাত করে যে পর্দার দুঃশাসনের সঙ্গে তিনি কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
আসলে দ্রৌপদী বলেছিলেন যে দু’বছর মহাভারতের শুটিং চলেছিল সেই দুই বছর তারা প্রত্যেকেই যেন তাদের আপন আপন চরিত্রের হয়ে বাঁচতেন। শুটিংয়ের সময় এমনকি শুটিংয়ের বাইরেও তাদের মধ্যে তাদের চরিত্রের ভাব কাজ করত। বস্ত্রহরণের দৃশ্যের পর দুঃশাসনের চরিত্রে অভিনয় করা বিনোদ কাপুরের সঙ্গে আর কথা বলতেই পারেননি রূপা।
তার আগে পর্যন্ত কিন্তু দুজনের মধ্যে ভালই বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ দৃশ্যের শুটিংয়ের পর থেকে বিনোদের সঙ্গে আর কথাই বলেননি রূপা। আসলে দ্রৌপদীর চরিত্রের মধ্যেই হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তিনি নিজেকে আদতেই সেই চরিত্র বলে ভাবতে শুরু করেছিলেন। তাই এই দৃশ্য তার মনে গভীর রেখাপাত করে। শুটিংয়ের সময় এমনকি শুটিংয়ের পরেও তার কান্না থামছিলই না।