কীর্তনীয়া থেকে সারেগামাপা বিজেতা, পদ্মপলাশ ও অস্মিতার অজানা কাহিনী জানলে শ্রদ্ধায় নত হবে মাথা

রবিবার সুরে সুরেই শেষ হয়ে গেল সারেগামাপা ২০২২ (Sa Re Ga Ma Pa 2022) এর দীর্ঘ সফর। ২১ জন প্রতিযোগীকে চূড়ান্ত হিসেবে বাছাই করে নেওয়ার পর শুরু হয়েছিল জি বাংলার সারেগামাপার যাত্রা। ৬ই জুন ২০২২ থেকে ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত একটানা চলছে এই গানের রিয়েলিটি শোয়ের সম্প্রচার। শেষমেষ বিজেতার মুকুট উঠল লক্ষ্মীকান্তপুর এর পদ্ম পলাশ হালদার (Padma Palash Halder) এবং নিউ টাউনের বাসিন্দা অস্মিতা করের (Ashmita Kar) মাথায়।

লক্ষ্মীকান্তপুরের পদ্ম পলাশ হালদারের নাম কীর্তনীয়া হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। তিনি ওই এলাকার কীর্তন বাড়ির ছেলে বলে পরিচিতি পেয়েছেন। তার বাড়িতে কেউ কখনও চাকরি করেননি, কিংবা ব্যবসাও করেননি। তিন পুরুষ ধরে পদ্ম পলাশদের পরিবারে শুধুই কবিগান এবং কীর্তন গাওয়ার চল রয়েছে। তবে পদ্ম পলাশ অবশ্য সব ধরনের গান গেয়ে জিতে নিয়েছেন বিচারকদের মন। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন নিজের যোগ্যতা।

PADMA PALASH HALDER

এই রিয়েলিটি শোয়ের মঞ্চে পদ্মপলাশ প্রধানত তার কীর্তন গান তুলে ধরেছিলেন। তার ঠাকুরদা তাদের পরিবারে এই গানের প্রচলন করেন। তিন পুরুষ ধরে কীর্তন গান গেয়েই চলেছে তাদের জীবিকা। পদ্মপলাশ হলেন পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর ছাত্র। ২০১৫ সালে তিনি পণ্ডিতজির কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নেন। পদ্ম পলাশ গোটা সিজনের কীর্তন এবং ক্লাসিক্যাল গান গেয়ে নজর কেড়েছেন।

পদ্মপলাশের সঙ্গেই যৌথভাবে সারেগামাপা ট্রফি জিতেছেন অস্মিতা কর। তিনি কলকাতার নিউটাউনের বাসিন্দা। ছোট থেকেই গানের প্রতি তার অগাধ ভালবাসা ছিল। অস্মিতা ছোট থেকে একাধিক গুরুর কাছে গানের তালিম নিয়েছেন। সারেগামাপার মঞ্চে তিনি বাংলা এবং হিন্দিতে একাধিক গান শুনিয়ে বিচারকদের মন জয় করে নিয়েছেন। তার সুরেলা কন্ঠে যাদুতে মুগ্ধ হয়েছে দর্শকদের মন।

ASHMITA KAR

অস্মিতা জানিয়েছেন তার জীবনের সবথেকে বড় অনুপ্রেরণা হলেন তার মা। তার প্রিয় গায়িকা সুনিধি চৌহান, কারণ তিনি সব ধরনের গান গাইতে পারদর্শী। অস্মিতা নিজেও সুনিধিকে অনুসরণ করতে চান ভবিষ্যতে। অস্মিতাকে এই গানের জার্নিতে সবসময় সমর্থন করে এসেছে তার পরিবার। তার মা-বাবা, দাদা-বৌদি সকলকেই তিনি তার পাশে পেয়েছেন।

padma palash and ashmita

বিজয়ী হওয়ার পর পদ্মপলাশ তার অনুভূতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেছেন বিচারক এবং দর্শকদের সামনে গান গাইতে পারার এই সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেকে ধন্য বলে মনে করছেন। অন্যদিকে অস্মিতা বলেন যখন বিজেতা হিসেবে তার নামটি ঘোষণা হল সেই মুহূর্তটা তিনি কখনও ভুলতে পারবেন না। তার মা, দাদা, বৌদি গ্র্যান্ড ফিনালে দেখতে এসেছিলেন। বাবা বাড়িতে থেকে তার জন্য সব সময় প্রার্থনা করেছেন।