সারা বাংলার নজরে ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ (Didi Number One) তিনি। বছরের পর বছর ধরে তিনি বাংলা এবং বাংলার বাইরে বহু মহিলার কাছে অনুপ্রেরণার আস্তানা হয়ে উঠেছেন। আবার দিনের পর দিন মহিলাদের কঠিন জীবন সংগ্রাম সম্পর্কে শুনতে শুনতে তিনি নিজেও মানসিকভাবে অনেক শক্ত হয়ে উঠেছেন। তিনি হলেন রচনা ব্যানার্জী (Rachana Banerjee)। জি বাংলা (Zee Bangla) দিদি নাম্বার ওয়ান (Didi Number One) রিয়েলিটি শোয়ের সঞ্চালিকা মনে করেন জীবনে প্রতিটি মেয়ের স্বাবলম্বী হওয়া দরকার যাতে কেউ পাশে না থাকলেও সে একাই জীবন যুদ্ধে এগোতে পারে।
রচনা তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এমনকি দিদি নাম্বার ওয়ানের মঞ্চেও হামেশাই এই কথাটির উপর গুরুত্ব দেন। সম্প্রতি তার একটি সাক্ষাৎকার উঠে এসেছে সমাজ মাধ্যমের পাতায়। সকলেই জানেন রচনা সেপারেটেড। অর্থাৎ বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তিনি তার স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। ছেলেকে নিয়ে আলাদা থাকেন রচনা। তবে ছেলের জন্যই স্বামীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন তিনি, যাতে তার ছেলের গায়ে ডিভোর্সি বাবা-মায়ের সন্তানের ট্যাগ না লেগে যায়।
রচনা তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি মনে করেন না তার জীবনে কোনও পুরুষের প্রয়োজন আছে। এমনকি সেপারেটেড হলেও যে তার কোনও পুরুষসঙ্গী বা জীবনসঙ্গী প্রয়োজন এটাও তিনি মনে করেন না। এমনকি তিনি এটাও আশা করেন না তার ছেলে প্রণীল পরবর্তী দিনে তাকে দেখবেন বা তার পাশে থাকবেন। রচনা খোলা মনেই বলেছেন কেও তার পাশে না থাকলেও কোনও ক্ষতি নেই।
রচনা বলেছেন দিদি নাম্বার ওয়ানের মঞ্চে প্রতিদিন বহু মহিলার জীবন সংগ্রাম তাকে শুনতে হয়। এমন বহু বৃদ্ধ মহিলা রয়েছেন যারা বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন, তারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। রচনাকে জানিয়েছেন ছেলেমেয়ে থাকা সত্ত্বেও শেষ জীবনে তারা বাবা-মায়ের খোঁজ রাখে না। কিন্তু সেই মানুষেরা নিজেদের একার লড়াই একা লড়ছেন। রচনা তাদের দেখে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পান।
তবে হ্যাঁ, রচনার জীবনে অনেকখানি অংশ জুড়েছিলেন তার বাবা। এখন তার জীবনে কোনও পুরুষের প্রয়োজন না থাকলেও বাবার অভাব তিনি নিরন্তর বোধ করেই চলেছেন। এক বছর আগে তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মেয়েকে সবসময় আগলে রেখেছিলেন রচনার বাবা রবীন্দ্রনাথ ব্যানার্জী। ভালো-মন্দ, সব বিষয়ে মেয়েকে তিনি তার পরামর্শ দিয়ে পথ দেখিয়েছেন।
বাবার কথা উঠলেই রচনা নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেন না। তখন শিশুর মত কেঁদে ওঠেন তিনি। দৃঢ়চেতা, শক্ত মনের মানুষ হলেও বাবার অবর্তমানে রচনা ভেঙে পড়েছেন। কিন্তু তিনি নিজেকে সামলেও নিয়েছেন। কারণ তার সামনে এখনও বহু পথ চলার বাকি। জীবনে কখনও কেউ তার পাশে না থাকলেও তিনি নিজের উপর ভরসা রেখেই বাঁচতে চান।