৭০ এর দশকে বলিউড (Bollywood) ও টলিউডের (Tollywood) নামকরা অভিনেত্রী ছিলেন মৌসুমী চ্যাটার্জী (Mousumi Chatterjee)। ওই সময়ের বলিউডে সর্বাধিক পারিশ্রমিক প্রাপ্ত অভিনেত্রীদের মধ্যে গণ্য করা হত তাকে। বাঙালি হলেও তিনি বলিউডেই বেশি স্বচ্ছন্দ্য ছিলেন। ঝরঝরে বাংলা বলতে পারতেন না, তবে ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলা বলেও বাংলার দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন মৌসুমী।
এহেন অভিনেত্রী ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়ে ফেলেছেন বেশ কয়েকটা দশক। উত্তম কুমার, রঞ্জিত মল্লিক থেকে শুরু করে বলিউডে অমিতাভ বচ্চন, জিতেন্দ্রদের সঙ্গে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন মৌসুমী। এখন তার বয়স ৭২ বছর প্রায়। এখন আর সেভাবে তিনি অভিনয় করেন না। তবে যৌবনে শুটিং করতে গিয়ে তার যে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা শুনলে শিউরে উঠবেন যে কেউ।
অভিনেত্রী যখন ‘বালিকা বধূ’ ছবির হাত ধরে অভিনয় জগতে পা রাখছেন তখন তার বয়স ছিল খুবই কম। তবে নাবালিকা মৌসুমীর অভিনয় দেখে তরুণ মজুমদার মুগ্ধ হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে বিনোদ মেহরার ‘অনুরাগ’ ছবি দিয়ে বলিউডেও অভিষেক ঘটিয়ে ফেলেন মৌসুমী। এরপর তাকে আর কখনও পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বলিউড হোক বা টলিউড, মৌসুমীর প্রায় প্রতিটি ছবিই তখন হত সুপার হিট।
তিনি বিয়ে করেন প্রখ্যাত গায়ক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পুত্র জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়কে। খুব অল্প বয়সেই তার বিয়ে হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের কাছে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে মৌসুমী একবার বলেছিলেন, “পরিবারের বাইরে প্রথম পুরুষ বলতে বাবুর (জয়ন্ত) সঙ্গেই আমার পরিচয়। তিনিই আমার জীবনের প্রথম এবং শেষ পুরুষ।”
বিয়ের অল্প কিছদিনের ব্যবধানেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মৌসুমী। সেই সময় ‘রোটি কাপড়া অর মকান’ ছবির শুটিং চলছিল। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও মৌসুমী অভিনয় করে যাচ্ছিলেন। ছবিতে একটি ধর্ষণের দৃশ্য ছিল। ওই অবস্থাতেই মৌসুমীকে সেই দৃশ্যে অভিনয় করতে হয়। আচমকাই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। এই দৃশ্যে শুটিং করতে গিয়ে মৌসুমীর রক্তপাত হতে শুরু করে।
এই ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে এতে তার সন্তানের কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই জানা যায়। সে যাত্রা ভাগ্যক্রমে রক্ষা পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। বহু সময় বাদে জীবনের সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মৌসুমী। এখন বয়সের ধারে তিনি ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করেন না আর। শেষবার তাকে ‘গয়নার বাক্স’ এবং ‘পিকু’ ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোনের মাসির চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল।