জন্ম সোনাগাছিতে! নিষিদ্ধ পল্লীর এই ছেলে আজ বাংলার গর্ব

কথায় বলে পাঁকেই পদ্মফুল ফোটে। এটা শুধু কথার কথা নয়। নিষিদ্ধ পল্লীতে জন্মানো ছেলেটা আবার মেয়েটাও বড় হয়ে সমাজের অনেক বড় জায়গায় পৌঁছাতে পারে। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ অভিজিৎ হালদার। সোনাগাছিতে জন্মেও অভিজিৎ আজ বাংলার গর্ব। শুধু ভারতে নয় আন্তর্জাতিক মঞ্চে তিনি উজ্জ্বল করেছেন বাংলার মুখ। আজ তিনি একজন সফল সিনেমা পরিচালক। তার এই জার্নিটা কোনও সিনেমার থেকে কম ছিল না।

অভিজিৎ হালদার কে?

জানা ব্রিসকি এবং রস কাউফম্যান নামের দুই পরিচালক নিষিদ্ধ পল্লীতে জন্মানো শিশুদের জীবন নিয়ে একটি সিনেমা বানিয়েছিলেন ২০০৪ সালে। অভিজিৎসহ সোনাগাছিতে জন্মানো ৮ জন শিশুর জীবনকাহিনী তুলে ধরা হয়। এই আটজনের মধ্যে সবথেকে বেশি নজর কেড়েছিলেন অভিজিৎ। সিনেমাটি পরে অস্কার পেয়েছিল ২০০৫ সালে। ওই সময় খেলার ছলেই অভিনয় করেছিলেন অভিজিৎ। কিন্তু এই একটি ঘটনা তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

Sonagachi Abhijit Haldar

আরও পড়ুন : সোনাগাছি কিভাবে রেড লাইট এরিয়া হল? সোনাগাছির নাম সোনাগাছি হল কীভাবে?

সিনেমাটি রিলিজ করার পর কিডস উইথ ক্যামেরা নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই শিশুদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। তারা এই শিশুদের ফটোগ্রাফি সহ নানা বিষয় শেখানো এবং পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়। অভিজিতের তোলা ছবি সেই সময় কলকাতা এবং নিউইয়র্কে খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। আমস্টারডামের একটি ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতাতেও অংশ নিয়েছিলেন অভিজিৎ। ২০০৫ সালে তিনি আমেরিকার নিউ হাম্পায়ার স্কুলের পড়ার আবেদন জানান।এরপর বড় হয়ে তিনি সিনেমা পরিচালনায় শুরু করেন। তার জন্য নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজে ভর্তি হন অভিজিৎ। তার পড়াশোনার যাবতীয় খরচ জুগিয়েছিল ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

Sonagachi Abhijit Haldar

পড়াশোনার পাশাপাশি অভিজিৎ এবং ফরাসি ভাষাও শেখেন। সেই সঙ্গে আমেরিকায় তিনি পার্ট টাইম চাকরি শুরু করেছিলেন। সেই টাকা দিয়ে বাবা এবং ঠাকুমার চিকিৎসা করান। অভিজিৎ বর্তমানে একজন পরিচালক। তিনি নিষিদ্ধ পল্লীর একটি মেয়ের জীবন নিয়ে সিনেমা বানিয়েছেন। তার কথায় নিজের অভিনীত তথ্যচিত্রটি যখন তিনি প্রথম দেখেন তখনই বুঝেছিলেন সাধারণ মানুষ নিষিদ্ধ পল্লীর গল্প জানতে চান। এখন অভিজিৎ থাকেন নিউইয়র্কে। বাংলার এই ছেলে বিদেশে বসেই বাংলার মুখ উজ্জ্বল করছেন।