সোনাগাছি কিভাবে রেড লাইট এরিয়া হল? সোনাগাছির নাম সোনাগাছি হল কীভাবে?

How Sonagachi got its Name : পৃথিবী বিখ্যাত যৌনপল্লী ‘সোনাগাছি’ গড়ে ওঠার ইতিহাস

History of Sonagachi : সোনাগাছি, কলকাতা (Kolkata) -র অন্যতম বড় যৌনপল্লী। প্রকাশ্যে এই জায়গার নাম নিতে ভদ্রসমাজ অস্বস্তিতে পড়ে। তবে জানেন কি ‘সোনাগাছি’ জায়গাটার নাম আদতে এক ধর্ম প্রচারকের নাম থেকে এসেছে? যে জায়গাটাকে আজ সকলে সোনাগাছি নামে চেনেন, আদতে তার নাম ছিল সোনাগাজি। এই জায়গার নাম আদতে এক ইসলাম ধর্ম প্রচারকের নাম থেকে এসেছে। কীভাবে এবং কেন এই জায়গার এমন নাম হল চলুন জেনে নেওয়া যাক।

শোনা যায়, সোনাউল্লা গাজী নামের একজন ইসলাম ধর্ম প্রচারকের নামে ‘সোনাগাজী’ নামের একটি মসজিদের নাম থেকে সোনাগাছির নাম হয়। সোনাউল্লা গাজীর আসল নাম সোনাউল্লা শাহ চুস্তি রহমতুল্লা আলে। তিনি ইরান থেকে ভারতে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে এসেছিলেন বলে শোনা যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে তিনি কলকাতায় আসেন।

SONAGACHI

এখন কলকাতার যে জায়গা সোনাগাছি নামে পরিচিত, সেই যৌনপল্লী কার্যত কলকাতা শহর গড়ে ওঠার অনেক আগে তৈরি হয়েছিল। এই এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে হুগলি নদী এবং তার পাশেই বসতো সুতানুটির হাট। এই এলাকা জুড়ে এক বড় ব্যবসা কেন্দ্র গড়ে ওঠে। সে সময় তীর্থযাত্রীদের চলাচলের রাস্তা ছিল নদীর ঠিক পাশে। সেই ব্যবসায়ী এবং তীর্থযাত্রীদের মনোরঞ্জনের জন্য এখানে ধীরে ধীরে যৌনপল্লী গড়ে ওঠে।

সিরাজদৌলা যখন ইংরেজদের পরাজিত করতে কলকাতা আক্রমণ করেন, তখন তার ফেরার পথে কলকাতার বিভিন্ন অংশে নবাব তার সেনাদের রেখে গিয়েছিলেন। নবাবের সেই সেনাদের পরিবার ধীরে ধীরে কলকাতার নানা অংশে বসতি গড়ে তুলতে শুরু করে। সোনাগাছি যৌনপল্লীর ঠিক কাছেই ছিল মুসলিম জনবসতি। তার পাশে একটি কবরস্থানও ছিল।

সোনাউল্লা গাজী ওই কবরস্থানের কাছে চারটে মিনার এবং তার মাঝে একটা গম্বুজসহ মসজিদ নির্মাণ করেন। ওই মসজিদের কারণে সেই রাস্তার নাম হয় মসজিদবাড়ি স্ট্রিট। তার পাশেই রয়েছে ছোট্ট একটি গলি যাকে সবাই সোনাগাজী লেন বলে জানেন। পরে সেই মসজিদ পরিত্যক্ত হয়। ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক হানায় মসজিদ প্রায় নষ্ট হয়। মসজিদের ভেতর সোনাউল্লা গাজীর কবর রয়েছে বলে জানা যায়।

আরও পড়ুন : এক রাতের জন্য কত টাকা নেন স্বস্তিকা, দিলেন জবাব

তবে সোনাউল্লাকে নিয়ে আরও একটি জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে। শোনা যায়, সোনাউল্লা নাকি একজন দুষ্কৃতী ছিলেন। খুন থেকে শুরু করে ডাকাতি-রাহাজানির অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। তিনি মারা যাওয়ার পর তার প্রেতাত্মা নাকি জানায় এবার থেকে তিনি মানুষের উপকার করবেন। তার কবরে নানা অলৌকিক কার্যকলাপ হতে থাকে। এর ফলে সাধারণ মানুষ তার কবরে গিয়ে ধর্না দিতেন। পরে তার মা নাকি ছেলের নামে মসজিদ গড়েছিলেন। সোনাউল্লার মায়ের মৃত্যুর পর মসজিদে অলৌকিক কার্যকলাপও বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন : ক্যামেরার সামনে সত্যি সত্যিই নগ্ন হয়েছেন যেসব বাঙালি অভিনেত্রীরা