বাবা মনসুর আলি খান পতৌদি, মা হলেন শর্মিলা ঠাকুর। তাদের কন্যা সোহা আলি খান বড় হয়ে মায়ের দেখানো পথেই পা বাড়ান। তিনিও অভিনয় দুনিয়াতে পা রেখেছিলেন। তবে তার আগে তিনি চাকরি করতেন একটি কর্পোরেট সেক্টরে। নবাব কন্যা হয়েও কয়েক হাজার টাকার মাইনের জন্য চাকরি করতেন সোহা। তখন তার মাইনে কত ছিল জানেন?
শর্মিলা ঠাকুর এবং মনসুর আলি খানের তিন সন্তান সাবা আলি খান, সোহা আলি খান এবং সেইফ আলি খান। সাবা কোনওদিনই অভিনয় করতে চাননি। তবে সেইফ এবং সোহার আগ্রহ জন্মেছিল অভিনয়ের উপর। তবে শর্মিলার তিন সন্তানের মধ্যে সোহাই একমাত্র পড়াশোনাতে ভালো ছিলেন। এমনকি সোহা নবাব পরিবারের একমাত্র সদস্য যিনি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
সম্প্রতি কার্লি টেলস নামের এক ইউটিউবারের কাছে সাক্ষাৎকার দেন সোহা। তিনি বলেন, “থিয়েটারের পরিবেশেই আমার বড় হয়ে ওঠা। আমার মা আর ভাই অভিনেতা। কিন্তু আমি ছোট থেকেই নিশ্চিত ছিলাম যে আমি তাদের পথ অনুসরণ করবো না। আমি কর্পোরেট জগতে কাজ করা শুরু করলাম। আমার পরিবারের প্রথম ডিগ্রি অর্জনকারী মানুষ ছিলাম আমি।’’
সোহা তার বেতন সম্পর্কেও খোলাখুলি জানিয়েছেন। তিনি ওই সময় বছরে ২ লক্ষ টাকার বেতন পেতেন। তবে মুম্বাইতে তাকে ১৭ হাজার টাকার বাড়ি ভাড়া দিয়ে থাকতে হত। সোহার কথায়, “আমি জানিনা রাজ পরিবারের সম্পর্কে আপনাদের কী ধারণা। আমাদের হাতে প্রচুর অর্থ নেই মোটেই।” এরপর সোহা চাকরি ছেড়ে অভিনয়ে পা রাখার কথা ভাবেন।
আসলে সোহা হিসেব করে দেখেছিলেন তিনি কর্পোরেট সেক্টরে চাকরি করে যে মাইনে পাচ্ছেন তার তুলনায় সিনেমা করলে অনেক বেশি বেতন পাবেন। সিনেমার কেরিয়ার অনেক বেশি লাভজনক হবে এটা বুঝতে পেরেই তিনি চাকরি ছেড়ে অভিনয় শুরু করেন। যদিও তার বাবা-মা কিন্তু একেবারেই চাননি মেয়ে চাকরি ছেড়ে অভিনয় করুক।
বাবা-মা রাজি হবেন না এটা বুঝতে পেরে সোহা চাকরি ছেড়ে সিনেমায় নামের খবর লুকিয়ে রাখেন পরিবারের থেকে। কিন্তু তিনি যে সিনেমার কাজে প্রথম হাত দিয়েছিলেন সেটা তার হাত থেকে বেরিয়ে যায়। নির্মাতারা তাকে বাদ দিয়ে অন্য অভিনেত্রীকে নেন। চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন, হাত থেকে সিনেমাও বেরিয়ে যায় হাত থেকে। ওই সময় সোহার হাতে কোনও কাজ ছিল না।
আরও পড়ুন : ৩ ছেলেমেয়ে মাকে দেখে না! রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া সন্তানরাই বুড়ো বয়সে আগলে রাখছে শর্মিলাকে
আরও পড়ুন : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শর্মিলা ঠাকুরের কে হন? আদেও কি আছে রক্তের সম্পর্ক?
তবে সোহার ভাগ্য খুলে যায় ২০০৪ সালে। তাও আবার বাংলা সিনেমার হাত ধরে। ‘ইতি শ্রীকান্ত’ ছিল সোহার প্রথম কাজ। এরপর তিনি একে একে ‘রং দে বসন্তী’, ‘খোয়া খোয়া চাঁদ’, ‘মুম্বই মেরি জান’, ‘তুম মিলে’, ‘গো গোয়া গন’, ‘সাহেব বিবি অর গ্যাংস্টার ৩’ ইত্যাদি সিনেমাতে অভিনয় করেন। তবে বিগত কয়েক বছরের সোহাকে আর অভিনয় দুনিয়াতে তেমন দেখা যায়নি। এখন স্বামী কুনাল খেমু এবং একমাত্র মেয়ে ইনায়াকে নিয়ে সুখের সংসার তার।