কথায় বলে কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। অতীতে বাবা-মার সঙ্গে চরম কষ্ট করেছিলেন, ধৈর্য ধরে শত বাঁধার মাঝেও নিজের লক্ষ্যের পথে এগিয়েছিলেন বলেই আজ টলিউডের (Tollywood) অন্যতম সুপারস্টার হিসেবে নিজের পরিচিতি গড়ে তুলতে পেরেছেন দেব (Dev)। কোনো গডফাদার ছিল না তার, বলতে গেলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে দেব একজন বহিরাগত বা আউটসাইডার। তাই তার বাস্তব জীবনের লড়াইটাও সিনেমার থেকে কিছু কম ছিল না।
একটা সময় ছিল যখন দেবের বাবা মুম্বাইতে ক্যাটারিংয়ের ব্যবসা করতেন। দেব নিজে যখন কলেজে পড়ছেন, তখন তিনিও বাবাকে কাজে সাহায্য করতেন। বাবা-ছেলে মিলে মুম্বাইয়ের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে খাবার সরবরাহের কাজ করতেন। তখন থেকেই অবশ্য ফিল্ম দুনিয়ার প্রতি তার আগ্রহ তৈরি হচ্ছিল। তবে ওই সময় বাসন ধোয়া থেকে আরম্ভ করে ঘর মোছা, সব কাজই করতে হয়েছিল দেবকে।
এই প্রসঙ্গে বলিউড পরিচালক অনুরাগ বসুর একটি টক শোতে মুখ খুলেছিলেন দেব। দেব বলেন তিনি মুম্বাইতে এসে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকের এঁটো বাসন নিজের হাতে মেজেছেন। আর আজ তিনি অনুরাগের সামনে বসে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। এটা তার কাছে স্বপ্ন ছাড়া আর কি? যদি তিনি অভিনেতা না হতেন তাহলে বাবার সঙ্গে ক্যাটারিংয়ের কাজটাই করতেন। দেবের এই কথা শুনে তাকে বুকে টেনে নিয়ে অনুরাগ বলেন প্রত্যেক ছেলেমেয়ের এভাবেই তাদের বাবা-মায়ের কাজকে সাপোর্ট করা উচিত।
দেব তার জীবনে যা কিছু সফলতা অর্জন করতে পেরেছেন তার সবটাই তিনি উৎসর্গ করেন নিজের বাবা-মাকে। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন তাকে বড় করাটাই ছিল তার বাবা-মায়ের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। দেবের কথায়, “আমার জীবনের সবথেকে বড় সাপোর্ট সিস্টেম মা-বাবা। তারা যেভাবে আমাকে মানুষ করেছেন তাতে এটুকু বোঝা যায় আমি যদি স্ট্রাগল করে থাকি, ওরা তাহলে জাহান্নাম দেখেছে।”
আজ সফলতার শিখর ছুঁয়ে তাই মা-বাবাকে ভালো রাখাটাই তার সব থেকে বড় লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি নিজের থেকেও বাবা-মাকে নিয়ে বেশি ভাবেন। নিজের জীবনের প্রথম উপার্জনটাও তিনি বাবার নামেই নিয়েছিলেন। দেব যখন সবে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেন তখন একটা মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে কাজ করে তিনি ৫-৬ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। সেই চেকটা তিনি বাবার নামেই নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন : কোনোটা হিট কোনোটা সুপারহিট, জন্মদিনে দেখুন দেবের সেরা ১০টি সিনেমা
আরও পড়ুন : টলিউডের সব থেকে ধনী অভিনেতা কে? কার সম্পত্তির পরিমাণ কত?
ইন্টারভিউতে দেব জানান, বাবা আমায় বলেন, “তোমার প্রথম টাকা তুমি যা খুশি করো। আমিও সেই টাকা দিয়ে দাদর থেকে জামা কাপড় কিনলাম। আর মাকে আমি নিজের সব ছবির পারিশ্রমিক দিয়ে মাকে একটা শাড়ি কিনে দি। সেইটা পরেই মা ছবির প্রিমিয়ারে যান।” আজ সুপারস্টার হলেও অতীতের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেলে আবেগে ভাসেন দেব।