বলিউডে সেইভাবে কখনো মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পাননি তিনি, বেশিরভাগ সিনেমাতেই করতে হয়েছে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়। খুব কম বয়সে অভিনয় দুনিয়ায় পা রাখলেও খ্যাতি পেতে লেগে গেল অনেকটাই সময়। কিন্তু কেন? “আমি শিরদাঁড়া বিক্রি করিনি তাই…” এমন বিস্ফোরক মন্তব্য কেন করলেন টলিউড অভিনেতা টোটা রায় চৌধুরী (Tota Roy Chowdhury)?
টলিউডে তিনি পদার্পণ করেছিলেন সেকেন্ড ইয়ারে পড়ার সময়। যদিও অভিনয় করার ইচ্ছা তার কোনদিনই ছিল না। তিনি চেয়েছিলেন সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে। কিন্তু পরিচালক প্রভাত রায়ের কাছে একটি সিনেমার অফার পেয়ে অবশেষে সিনেমা জগতে প্রবেশ করেন টোটা। প্রথমদিকে বাণিজ্যিক সিনেমাতেই অভিনয় করতেন তিনি। ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘মানুষ কেন বেইমান’, ‘ভিলেন’, ‘পূজা’ সহ বেশ কিছু সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। অভিনয় নিয়ে তার অভিজ্ঞতা ছিল না তাই প্রথমদিকে তেমনভাবে কারোর নজরে আসেননি তিনি। কিভাবে ঘুরলো তাহলে টোটার ক্যারিয়ার?
ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত ‘চোখের বালি’ সিনেমায় অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন টোটা। এরপর ‘শুভ মহরত’, ‘অব্যক্ত’, ‘কাহানি ২’, ‘অহল্যা’ সহ বেশ কিছু অন্য ধাঁচে সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। সর্বশেষ ‘রকি অর রানি কি প্রেম কাহিনী’ সিনেমায় আলিয়ার বাবার চরিত্রে অভিনয় করে এবং দুর্দান্ত নৃত্য প্রদর্শন করে টোটা প্রমাণ করে দেন তিনি অভিনেতা হিসেবে কতটা যোগ্য। কিন্তু কেন এতটা সময় লেগে গেল যোগ্যতা পেতে?
শোনা যায়, একসময় বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে স্বজনপোষণের শিকার হতে হয়েছিল অভিনেতাকে। নায়ক হওয়ার সমস্ত ক্ষমতা থাকতেও তাকে বারবার পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করতে হয়েছিল সিনেমায়। তিনি দর্শকদের চাহিদা বোঝার চেষ্টা করেছেন অনেকবার কিন্তু দর্শকরা বুঝতে পারেননি, তিনি কি বোঝাতে চাইছেন। কিন্তু এত কিছুর পরেও কিভাবে তিনি সবসময় ভালো থাকেন সে কথাই ফাঁস করলেন টোটা।
টোটা বলেন, “আমি খুব অল্পতেই খুশি থাকতে পছন্দ করি, অন্তত চেষ্টা করি। আমার কাছে অর্থ শেষ কথা নয়, আমার কাছে ভালো থাকার মানে হল আমার ভালোবাসার মানুষগুলো আমার কাছে থাকবে। আমার পরিবারের মানুষেরাই আমার খুশি থাকার একমাত্র কারণ। আমি আমার কাজ ভালোভাবে করার চেষ্টা করি, বিশ্বাস করি কোন দৈবিক শক্তি সাহায্য করলে নিশ্চয়ই আমি সফলতা পাব।”
আরও পড়ুন : রূপে লক্ষ্মী, গুণে সরস্বতী! টোটা রায়চৌধুরীর স্ত্রী রূপে হার মানাবে যেকোনও টলিউড নায়িকাকে
টোটা আরো বলেন,” আগের থেকে এখন অনেকটাই ক্ষমা করে দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে আমার মধ্যে। এখন আর নিজের বিফলতা নিয়ে চিন্তা করি না বেশি। আমার কাছে সব থেকে বড় সফলতা হলো আজ। গতকাল যা হয়ে গেছে তার ওপর আর কোন কন্ট্রোল থাকে না, তাই যেদিন থেকে ‘আজ’- কের মধ্যেই আমি থাকতে শুরু করেছি সেদিন থেকে আমি আরো বেশি ভালো জীবন কাটাচ্ছি।”
আরও পড়ুন : বাবার পর টলিউড কাঁপাবে মেয়েও! সিনেমায় পা রাখছে টোটা রায় চৌধুরীর মেয়ে
প্রসঙ্গত, বর্তমান প্রজন্মের বেশিরভাগ অভিনেতা অভিনেত্রী ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করার পরেই দামি বাড়ি এবং গাড়ি কেনার মোহে EMI – এর চক্করে পড়ে যান, তারপর কাজ না পেলেই শুরু হয়ে যায় মানসিক অবসাদ। টোটা রায় চৌধুরী এতটাই সাধারণ জীবন অতিবাহিত করেন, যার ফলে কখনো মানসিক অবসাদে পড়তে হয় না তাকে। হাতে কাজ না থাকলেও কখনো নিজেকে শিরদাঁড়া বিক্রি করে দিতে হয় না কোন পরিচালক বা প্রযোজকদের কাছে।