হয় চাকরি, নয় সংসার! শ্বশুরবাড়ির বেঁধে দেওয়া এমন নিয়মের বেড়াজালে বাস্তবে বহু মহিলা তাদের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছেন। সংসারের সুখের কথা ভেবে তারা তাদের চাকরি করার বাসনা ত্যাগ করেছেন। চিরতরে শ্বশুরবাড়ির জন্যই উৎসর্গ করেছেন জীবন। কিন্তু এ যুগের মেয়েরা সংসারের বাইরেও নিজেদের আলাদা করে পরিচয় গড়তে জানে।
জি বাংলার (Zee Bangla) ‘নিম ফুলের মধু’ (Neem Phuler Modhu) ধারাবাহিকের পর্নাও তেমনই এক দৃঢ়চেতা মেয়ে। নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে বেড়ে ওঠা মেয়েটি যখন বিয়ে হয়ে একটা যৌথ পরিবারে এসে পৌঁছায় তখন তাকে আর পাঁচজন মেয়ের মত অনেক কিছুই মানিয়ে নিতে হয়। তবে শ্বশুরবাড়ির পুরনো ধ্যান-ধারণা সে মানতে পারে না মোটেও। বাড়ির বউরা বাইরে কাজ করতে যেতে পারবে না, পর্না এখন এই নিয়মের বেড়াজাল টপকে যেতে চাইছে।
শ্বশুরবাড়ির অমতে এক প্রকার জোর করেই চাকরিতে জয়েন করে পর্না। যদিও সে অবশ্য সংসারের মঙ্গলের জন্যই এমনটা করতে চেয়েছিল। পরিবারে বাড়তি কিছু রোজগার হলে সকলের ভাল হবে, মাসের শেষে টানাটানি হবে না, তাকেও প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বরের কাছে হাত পাততে হবে না, এই ভাবনা থেকেই চাকরিটা করতে চায় পর্না। তবে তার শাশুড়ি মা কৃষ্ণা বৌমার চাকরি করার ঘোর পরিপন্থী।
কৃষ্ণা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন পর্না যদি তার অমতে চাকরি করতে যায় তাহলে তাকে তিনি বাড়িতে আর ঢুকতে দেবেন না। যেই কথা সেই কাজ। প্রথম দিন চাকরি থেকে বাড়িতে ফিরতেই তুমুল অশান্তি বাঁধিয়ে দেন কৃষ্ণা। পর্না অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সে তার স্বামী সৃজনের মত পাওয়ার আশায় থাকে। কিন্তু সৃজনও মায়ের উপর কথা বলতে পারে না।
এতকিছুর পরেও কৃষ্ণা তার দাবিতে অনড়। হয় চাকরি ছাড়তে হবে, আর নয় তো দত্তবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাবে পর্না। শেষমেষ পর্না নিজের আত্মসম্মানকেই বেছে নেয়। শ্বশুরবাড়ির কেউ তার কথা বুঝতে রাজি না হলে বাধ্য হয়ে সে দত্তবাড়ি ছেড়েই চলে যায়। পর্নার এই আত্মসম্মানবোধ মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। তারা তার এই সিদ্ধান্তকে কুর্ণিশ জানাচ্ছেন।
দর্শকরা ‘নিম ফুলের মধু’র এই ট্র্যাকের প্রশংসা করে জানাচ্ছেন সমাজের একদম বাস্তব চিত্র তুলে ধরছে জি বাংলার এই সিরিয়ালটি। নতুন বিয়ের পর বেশিরভাগ মেয়েদের কপালে কৃষ্ণার মত শাশুড়িরাই জোটেনি যারা বিয়ের পরেও ছেলেদের নিজেদের আয়ত্তে রাখতে চান। বৌমাদের উপর চাপিয়ে দেন নিয়ম নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল। কিন্তু পর্না এযুগের মেয়ে, সে তার নিজস্ব বুদ্ধি দিয়ে রক্ষা করে চলেছে তার আত্মসম্মান। আগামী দিনের সিরিয়ালে কী হয় দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন দর্শকরা।