টলিউডের (Tollywood) মহানায়িকা তিনি। অপরজন হলেন বাংলার প্রথম অস্কার জয়ী পরিচালক। কিন্তু এই দুই তারকাকে কখনও একই ফ্রেমে বন্দী হতে দেখা যায়নি। সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) এবং সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen), কখনও একই ছবিতে কাজ করেননি দুজনে। অথচ সেই সময় ছিলেন সুচিত্রা টলিউডের এক নম্বর নায়িকা। আর সত্যজিতের খ্যাতিও ছিল তুঙ্গে।
সুচিত্রা সেনের ভক্তদের মনে এই প্রশ্নটা আজও রয়ে গিয়েছে যে কেন সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কখনও ছবি করেননি সুচিত্রা সেন? অথচ এমন নয় যে সত্যজিৎ রায় তার কাছে ছবির প্রস্তাব আনেননি। তিনিও মহানায়িকাকে তার ছবির নায়িকা হিসেবে পেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার সঙ্গে বেঁধে দিয়েছিলেন একটা কঠিন শর্ত। জানেন কী সেই শর্ত?
পথের পাঁচালী, অপুর সংসারের মত অসংখ্য আইকনিক বাংলা ছবির নির্মাণ করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। তার সঙ্গে কাজ করার জন্য সেই সময় মুখিয়ে থাকতেন টলিউডের নায়ক-নায়িকারা। মহানায়িকাও অবশ্য চেয়েছিলেন সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করতে। কিন্তু পরিচালক তাকে এমন এক কঠিন শর্ত দেন যে মুখের উপরেই ‘না’ করে দেন অভিনেত্রী।
তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় সত্যজিৎ রায় আসলে ১৯৬০ এর শুরুর দিকে ‘দেবী চৌধুরানী’ অবলম্বনে একটি ছবি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। সেখানে নিঃসন্দেহে নায়িকার ভূমিকাতে সুচিত্রার কথাই ভাবা হয়েছিল। সত্যজিৎ রায় একান্তভাবে চেয়েছিলেন সুচিত্রাই এই চরিত্রটি করুন।
তবে সত্যজিৎ রায় শর্ত দেন যে এই ছবি চলাকালীন আর কোনও ছবির প্রস্তাবে রাজি হতে পারবেন না সুচিত্রা সেন। তাকে শুধু দেবী চৌধুরানীর চরিত্রের উপরেই মনোনিবেশ করতে হবে। পাশাপাশি আর কোনও ছবির প্রস্তাব তিনি গ্রহণ করতে পারবেন না। সত্যজিৎ রায়ের বেঁধে দেওয়া এই শর্ত মানতে পারেননি সুচিত্রা।
কারণ ওই সময় সুচিত্রা সেনের হাতে ছিল অসংখ্য কাজের প্রস্তাব। তার মধ্যে কিছু ছবির জন্য তিনি কথা দিয়ে ফেলেছিলেন। তার পক্ষে কথার খেলাপ করা সম্ভব হয়নি। তাই একান্ত ইচ্ছে থাকলেও সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করে ওঠা হয়নি সুচিত্রার। এদিকে সুচিত্রাকে না পেয়ে ‘দেবী চৌধুরানী’ ছবিটাও আর বানাননি সত্যজিৎ রায়। তবে সুচিত্রা অবশ্য পরে দিনেন গুপ্তার ‘দেবী চৌধুরানী’ ছবিতে কাজ করেছিলেন।