মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে করেছিলেন মিঠুন! মাত্র ৪ মাসেই ভেঙেছিল সেই বিয়ে। আজীবন প্রাক্তন স্বামীর প্রতি তিক্ততা মনে রেখেই প্রয়াত হলেন মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) প্রথম স্ত্রী হেলেনা লিউক। না, যোগিতা বালি নন, হেলেনা লিউকই (Helena Luke) ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তীর প্রথম স্ত্রী। সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে বলিউডের অন্যতম এই সুন্দরী অভিনেত্রীর।
৮০ এর দশকে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন হেলেনা লিউকও। একাধিক সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। জন্মসূত্রে হেলেনা ছিলেন বিদেশী। তার বাবা তুরস্কের বাসিন্দা এবং মা এংলো ইন্ডিয়ান। ছোট থেকেই অভিনয় শেখার প্রতি আগ্রহ ছিল হেলেনার। সিনেমা করার আগে একটানা ৯ বছর গুজরাটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। অবশেষে ৭০ এর দশকের শেষের দিকে তিনি বলিউডে চান্স পান। মডেল হিসেবে শুরু হয়েছিল তার কেরিয়ার। ১৯৮০ সালে ‘জুদাই’ সিনেমাতে তিনি একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। জিতেন্দ্র এবং রেখার এই সিনেমাতে হেলেনা সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি।
হেলেনা এরপর সাথ সাথ, আও পেয়ার করে, দো গুলাব, ভাই আখির ভাই হোতা হে, নামের বেশ কিছু হিন্দি সিনেমাতে অভিনয় করেন। কিন্তু তার অভিনীত কোনও সিনেমা বক্স অফিসে চলেনি। বলিউড অভিনেতা জাভেদ খানের সঙ্গে কলেজ জীবন থেকেই তার প্রেম ছিল বলে শোনা যায়। চার বছর তাদের প্রেম চলেছিল। তারপর হঠাৎ ব্রেকআপ হয়ে যায় দুজনের। এরপরই মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তার আলাপ হয়।।
হেলেনার আগে মিঠুন সারিকার সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন। দুজনেরই তখন সবে মাত্র প্রেম ভেঙেছে। মিঠুন এবং হেলেনা একে অপরের সঙ্গে আলাপ হতে না হতেই প্রেমে পড়ে যান। ১৯৭৯ সালে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু মাত্র ৪ মাস টিকেছিল সেই সম্পর্ক। ওই বছরই হেলেনাকে ডিভোর্স দিয়ে যোগিতা বালিকে বিয়ে করেন মিঠুন। একবার একটি সাক্ষাৎকারে হেলেনা দাবী করেন মিঠুন নাকি তাকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে করেছিলেন। হেলেনার বাবাকে মিঠুন কথা দিয়েছিলেন তিনি তার স্ত্রীকে পৃথিবীর নবম আশ্চর্যের মত আগলে রাখবেন। কিন্তু সেই কথা রাখেননি মিঠুন।
হেলেনা বলেন মিঠুন পৃথিবীর সব থেকে ধনী ব্যক্তি হয়ে গেলেও তিনি আর কখনও তার কাছে ফিরবেন না। নিজেকে ছাড়া আর কাউকেই নাকি ভালবাসেন না মিঠুন। মিঠুনের থেকে তিনি খোরপোষও নেননি। মিঠুনের সঙ্গে তার বিয়েটা ছিল দুঃস্বপ্নের মত। অবশ্য এও শোনা যায় হেলেনার জীবনে নাকি জাভেদ খান আবার ফিরে এসেছিলেন। এছাড়া ওই সময়ের অভিনেতা বিজয়ন্দ্র ঘটগের সঙ্গেও তার সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা ছিল। মিঠুন নাকি এই কারণেই হেলেনাকে সন্দেহ করতেন খুব। হেলেনার কথায় মহিলাদের সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করতেন মিঠুন। মিঠুনকে বিয়ে করে আফসোস করতেন হেলেনা।
আরও পড়ুন : বলিউড সেরা অভিনেত্রী হয়েও ছেড়ে দিয়েছিলেন অভিনয়! মিঠুন চক্রবর্তীর স্ত্রী আসলে কে?
আরও পড়ুন : মিঠুনকে দুচোখে সহ্য করতে পারতেন না! রাগে মিঠুনের বিরুদ্ধে এই কাজ করেছিলেন কিশোর কুমার
১৯৮৮ সালে হেলেনাকে এক নয়া রিস্তা সিনেমাতে শেষ বার অভিনয় করতে দেখা যায়। কিন্তু এই সিনেমাতেও তেমন নজর কাড়তে পারেননি তিনি। পরে তিনি চিরদিনের জন্য অভিনয় ছেড়ে দিয়ে নিউইয়র্কে চলে যান। তারপর সেখানে একটি বিমানসংস্থায় কাজ নেন। আর কোনদিনই বলিউডে ফিরে আসেননি হেলেনা। মৃত্যুর আগের দিন ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট করেছিলেন। তাতে লিখেছিলেন, “কেমন একটা লাগছে। নানা ধরনের অনুভূতি কাজ করছে মনের মধ্যে। কিছুই বুঝতে পারছি না।” আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হেলেনার মৃত্যু হয়। তার এই পোস্টটিকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে।