কেন দিন দিন সাউথ সিনেমার থেকে পিছিয়ে পড়ছে বলিউড (Bollywood)? অথচ একসময় গোটা দেশের মধ্যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে নেতৃত্ব দিত হিন্দি সিনেমা মাধ্যম। বছর বছর মুক্তি পেত একাধিক সুপারহিট মুভি। বলিউডের বক্স অফিস কালেকশন ছিল তখন তুঙ্গে। আর এখন দক্ষিণী সিনেমার কাছে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে বলিউড। একের পর এক সিনেমা ফ্লপ। কোন কারণ আছে এর পেছনে?
বর্তমানে একের পর এক দক্ষিণী সিনেমা ৫০০ থেকে ১০০০ কোটি টাকার ব্যবসা করছে। আর সেই জায়গায় বলিউডের বক্স অফিসের হাল খুবই খারাপ। পাঠান, জওয়ান ছাড়া বলিউডে সুপার হিট বলতে তেমন কোনও সিনেমা নেই। স্ত্রী ২ এর সাফল্য এই বাজারে মোটামুটি। মুঞ্ঝা, শয়তান এসব সিনেমা দর্শকদের প্রশংসা পেলেও বক্স অফিস কালেকশন তেমন আহামরি কিছু নয়। আর এর কারণ খুঁজতে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বলিউড সিনেমা পিছিয়ে পড়ার সব থেকে বড় কারণ উপযুক্ত চিত্রনাট্যের অভাব। বলিউড প্রত্যেক মাসে মাসে সিনেমা তো বানাচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে গল্পের মধ্যে প্রাণ থাকে না। আর বলিউড ছবির ধরণ অনেক পাল্টেছে। দর্শকও ছবি দেখার উপর খুবই চুজি হয়েছেন। কোন কোন সিনেমা হলে দেখবেন, কোন সিনেমা ওটিটিতে দেখবেন, ছবি মুক্তির আগেই তারা নির্ধারণ করে ফেলেন।
আর হিন্দি সিনেমার ক্ষেত্রে সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় তারকাদের পারিশ্রমিক। তারকারা ছবি মুক্তির আগেই এত বেশি পারিশ্রমিক দাবি করেন যে প্রযোজকরা প্রায় দেউলিয়া হতে বসেছেন। একটি সিনেমার বাজেটের ৭০-৮০ শতাংশই প্রায় নায়কের পারিশ্রমিক মেটাতে চলে যায়। তাই সিনেমার নির্মাণে, চিত্রনাট্যের উন্নতিতে সেভাবে গুরুত্বই দেওয়া হয় না। যেমন অক্ষয় কুমারের একের পর এক সিনেমা বিগত কয়েক বছরে ফ্লপ হয়েছে। অথচ তিনি ছবির বাজেটের অধিকাংশ পারিশ্রমিক হিসেবে নিয়েছেন। যেমন ‘বড়ে মিঁয়া ছোটে মিঁয়া’র জন্য অক্ষয় পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন ১৬৫ কোটি টাকা। সেই সিনেমা সিনেমা হলে মাত্র ১১৯.৪৯ কোটি টাকা আয় করতে পেরেছিল। ‘খেল খেল মে’ সিনেমাতে ছবির বাজেট ছিল ১০০ কোটি, অক্ষয় কুমার নিয়েছিলেন ৫৬ কোটি টাকা। এই ছবি মাত্র ৫৫ কোটি টাকা আয় করেছিল। তাই একসময় যে তারকারা ছবিকে সুপারহিট করতেন, আজ তারাই ছবির ব্যবসা ডুবিয়ে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন : এক ভুলে নষ্ট কেরিয়ার! কোথায় হারিয়ে গেল ‘লাগান’ সিনেমার নায়িকা?
আরও পড়ুন : বহু বছর আগে ছেড়েছেন অভিনয়, ইনিই হলেন বলিউডের সবথেকে ধনী নায়িকা
আর ওটিটির আধিপত্য তো রয়েইছে। ছবির গুণগতমান দেখেই সিনেমা হলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন দর্শকরা। নয়তো ওটিটিতে ছবি দেখা বেশি পছন্দ করছেন তারা। করোনার সময় বয়কট বলিউডের ট্রেন্ড উঠেছিল। এমনিতেই মহামারীর কারণে ব্যবসা বন্ধ ছিল। মহামারীর পর একটু একটু করে আবার ছন্দে ফিরছে সিনে দুনিয়া। তবে ভারতের সিনেমার বাজার এখন কাঁপাচ্ছে পুষ্পা, কেজিএফ এর মত দক্ষিণী সিনেমাগুলো।