Bollywood News : বলিউড (Bollywood) -এর অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) -কে শতাব্দীর মেগাস্টার বলা হয়। কিন্তু জানেন কি হিন্দি ছবির শতাব্দীর খলনায়ক কে? যদিও হিন্দি ছবিতে অনেক নামকরা অভিনেতা খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তবে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য খলনায়ক হলেন ১৯৬৭ সালে মুক্তি পাওয়া উপকার ছবির অভিনেতা প্রাণ (Pran)। এই অভিনেতা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বশ্রেষ্ঠ ভিলেন হিসেবে বিবেচিত হন।
এক সম্পন্ন পরিবারে প্রাণের জন্ম ১৯২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। অবিভক্ত ভারতের লাহৌরের লক্ষ্মী চকে। তার পুরো নাম ছিল প্রাণ কৃষ্ণ সিকান্দার আহলুওয়ালিয়া। তার বাবা কেবলকৃষণ সিকন্দ ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। প্রাণের ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি শখ ছিল অভিনয় আর ছবি তোলার। এমনকি অভিনয়ের জন্য ভারত সরকারের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারও পেয়েছিলেন এই অভিনেতা।
প্রাণ রামলীলা-য় সীতার ভূমিকায় অভিনয় করে প্রথম অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন এই অভিনেতা। এরপর ১৯৪২ সালে মুক্তি পায় প্রাণের প্রথম হিন্দি ছবি ‘খানদান’। এই ছবিতে তিনি পুরোদস্তুর রোমান্টিক নায়ক। স্বাধীনতার আগে ১৯৪২-৪৬ অবধি প্রাণ মোট ২২ টি ছবিতে অভিনয় করেন। তার মধ্যে বেশির ভাগ ছবি মুক্তি পেয়েছিল স্বাধীনতার আগেই।
কিন্তু তিনি বেশ কিছু ছবিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করলেও একটা সময় তিনি পুরোপুরি খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। কারণ তার মনে হয়েছিল, নায়িকার সঙ্গে নাচগান করা তার সঙ্গে মানানসই হচ্ছে না। বিশেষ করে ছবিতে নায়কের নাচের দৃশ্যে তার ঘোরতর আপত্তি ছিল। ফলে বেছে নেন নেগেটিভ চরিত্রই। দিলীপ কুমার, দেব আনন্দ এবং রাজ কাপুর যখন সিনেমার সবচেয়ে বড় নায়ক ছিলেন সেই যুগে প্রাণ ছিলেন সবচেয়ে বিশিষ্ট খলনায়ক।
১৯৪০ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত, অভিনেতা প্রাণ পর্দায় একজন প্রধান ভিলেন ছিলেন। বিশেষ করে ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে। খলনায়ক হিসেবে প্রাণের প্রভাব এতটাই যে তিনি পর্দায় হাজির হওয়ার সাথে সাথে মহিলারা তাকে গালিগালাজ করতে শুরু করতেন। পুরুষরা তাকে ঘৃণা করত। তিনি চরিত্রের মধ্যে এত গভীরভাবে প্রবেশ করতেন যে সেই চরিত্র একদম জেনুইন বলে মনে হতো।
৩৫০ টিরও বেশি ছবিতে কাজ করেছেন প্রাণ। মধুমতি, জিস দেশ গঙ্গা বাহাতি হ্যায় ,পূরব অর পশ্চিম, রাম অর শ্যাম, জাঞ্জির, ডন, অমর আকবর অ্যান্টনি এবং দুনিয়া তার প্রধান চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে অন্যতম।আর উপকার ছবিতে তিনি একজন প্রাক্তন সৈনিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। এমনকি এই ছবিতে অভিনয় করার জন্য তিনি তার প্রথম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছিলেন।
আরও পড়ুন : মারণ রোগে ভুগছেন, “শারীরিক যন্ত্রণায় আত্ম হ়ত্যা করতে মন চায়”, মুখ খুললেন সালমান
আরও পড়ুন : ‘পন্নিয়িন সেলভান’ সিনেমার ছোট্ট ঐশ্বর্য আসলে কে? তার আসল পরিচয় জানলে অবাক হবেন
জানা যায় প্রাণ এবং অশোক কুমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। দুজনেই একসঙ্গে ২৭ টি ছবিতে কাজ করেছিলেন। এরপর ১৯৯৮ সালে, ৭৮ বছর বয়সে, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তারপর তিনি অভিনয় জগৎ থেকে দূরেই ছিলেন। তবে তিনি অনেক পুরস্কারও পান। তিনি ২০০১ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০১৩ সালে দাদাসাহেব ফালকে পেয়েছিলেন। আবার ২০০০ সালে, স্টারডাস্ট তাকে সহস্রাব্দের ভিলেন হিসাবে সম্মানিত করেছিল। এরপর তিনি ২০১৩ সালে ৯৩ বছর বয়সে মুম্বাইতে মারা যান।