দর্শকদের বিচারে আজও সেরা দুর্গা, কোথায় হারিয়ে গেলেন দূরদর্শনের প্রথম মহিষাসুরমর্দিনী?

Mahishasura Mardhini 1994 : আজ টেলিভিশনের (TV) পর্দায় মহালয়ার দিন দেবী দুর্গার রূপে আমরা দেখতে পাই কখনো কোয়েলকে কখনো আবার শ্রাবন্তীকে। টেলি অভিনেত্রীরাও পারফর্ম করেন মহালয়ার অনুষ্ঠানে। কিন্তু বাঙালির স্মৃতিতে দেবী দুর্গা মানে এখনো একজনই রয়ে গেছেন এবং তিনি হলেন সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sanjukta Banerjee)। আজ আমরা জানবো যে মহিষাসুরমর্দিনীকে দেখে আমরা ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছি, তিনি এখন আছেন কোথায়?

দূরদর্শনের পর্দায় সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sanjukta Banerjee) -কে দেবী দুর্গার রূপে দেখে যেন একটা আলাদাই ভক্তি চলে আসতো বাঙালির মনে। দূরদর্শনের এই কালজয়ী সৃষ্টি কখনো ভুলতে পারবে না বাঙালি। ১৯৯৪ সালে সংযুক্তা অভিনীত মহিষাসুরমর্দিনী এবং নেপথ্যে বীরেন্দ্র কিশোর ভদ্রের স্তোত্র “আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে…” এটা সত্যি কোন বিকল্প হয় না। তপন সিনহার পরিচালনায়, শর্মিষ্ঠা দাশগুপ্তের তত্ত্বাবধানে,ডক্টর নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ীর স্ক্রিপ্টে এবং সনৎ মোহান্তের নির্দেশনায় গোটা বিষয় কি ফুটে উঠেছিল টেলিভিশনের পর্দায়।

Sanjukta Banerjee

১৯৯৪ সালে যখন প্রথম দূরদর্শনের পর্দায় মহিষাসুরমর্দিনী সম্প্রচারিত করা হয় তখন সংযুক্তা প্রথম বর্ষের ছাত্রী। অষ্টাদশী এই কন্যার নাচ এবং তেজ দেখে রীতিমতো মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল গোটা বাংলা। বীরেন্দ্র কিশোর ভদ্রের মহালয়া ছাড়া যেমন অসম্পূর্ণ বাঙালি তেমন সংযুক্তাকে ছাড়াও দূরদর্শনের মহালয়া অসম্পূর্ণ বলে মনে করতেন তখনকার বাঙালিরা। উত্তম কুমার যেমন বীরেন্দ্র কিশোরকে মলিন করতে পারেননি তেমন সংযুক্তার তেজ একফোঁটাও কমাতে পারেননি হেমা মালিনী।

একবার একটি সাক্ষাৎকারে সংযুক্ত জানিয়েছিলেন, দেবী দুর্গা হওয়ার জন্য তিনি হবিষ্যি করতেন এমনকি স্টুডিওর কোন খাবার ছুঁয়েও দেখতেন না তিনি। প্রথম প্রথম মাটির হাত বেঁধে পারফর্ম করতে হতো, মনে হতো যেন অজ্ঞান হয়ে যাবেন তিনি। পরে যদিও ফাইবারের হাত বানিয়ে দেওয়া হতো যাতে চাপ কিছুটা কমে।

Sanjukta Banerjee

বর্তমানে কানাডায় রয়েছেন সংযুক্তা। সেখানে তার একটি নাচের স্কুল আছে যেখানে প্রতিনিয়ত তৈরি হয় নতুন নতুন প্রতিভা। শুধু কানাডা নয়, আমেরিকা সহ আরো বেশ কিছু প্রাশ্চাত্য দেশে পুজোর সময় নাচের অনুষ্ঠান করেন সংযুক্তা এবং তার শিক্ষার্থীরা। কানাডায় বসে এখনো প্রতি বছর টিভিতে বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলের মহালয়া দেখেন সংযুক্তা। টেলিভিশনের মহালয়া দেখতে দেখতে নিজের পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করেন তিনি।

আরও পড়ুন : কাজের অভাবে দুবেলা খাবার জোটে না! মহালয়ার মহিষাসুরের অবস্থা দেখলে চোখে জল আসবে

Sanjukta Banerjee

আরও পড়ুন : মহালয়া কী? মহালয়া কেন পালন করা হয়? বাড়িতেই কীভাবে করবেন Mahalaya তর্পণ

এখনকার মহালয়া নিয়ে সংযুক্তার বক্তব্য, যারা এখন কাজ করছেন তারা যেন চ্যানেলের টিআরপিটা নিয়ে না ভাবেন। আপনার কাজ যদি মানুষের মন ছুয়ে যায় তাহলে টিআরপি আপনা আপনি বেড়ে যাবে তাই সেটা নিয়ে আলাদা করে চিন্তা করার কিছু নেই। মহালয়া চিরকালই মানুষের কাছে ভীষণ প্রিয় এবং নস্টালজিক, তাই মহালয়ার মাধ্যমে যদি আপনি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন তাহলে তার থেকে বড় আর কিছু পাওনা হতে পারে না।