১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ (Beder Meye Josna) নামে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। সিনেমাটির জনপ্রিয়তা দেখে পরবর্তী সময়ে টলিউডে (Tollywood) তৈরি হয়েছিল ওই একই নামের সিনেমা, যেখানে অঞ্জু ঘোষের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন অভিনেতা চিরঞ্জিত। দুই বাংলার মানুষের কাছেই দারুন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল এই সিনেমাটি কিন্তু তারপরেও অঞ্জু ঘোষ (Anju Ghosh) হারিয়ে গিয়েছিলেন সিনে জগত থেকে।
বাংলাদেশে বহু সিনেমায় অভিনয় করার পর অভিনেত্রী টলিউডের মাটিতে এসে একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। ভারতে এসে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে তিনি কলকাতায় সল্টলেকে থাকতে শুরু করেন। জানা যায়, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কিছু মনোমালিন্যের জন্য তিনি আর কখনোই ফিরে যেতে চাননি সেখানে। তবে ২২ বছর পর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আমন্ত্রণে ঢাকা গিয়েছিলেন অঞ্জু ঘোষ।
বাংলাদেশের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ সিনেমার অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। সেখানে অঞ্জু এবং ইলিয়াসের নতুন সিনেমা ‘জ্যোৎস্না কেন বনবাসে’, সিনেমাটির ঘোষণা করা হয়েছে। সিনেমাটি প্রযোজনা করছেন নাদের খান। পরিচালক শহিদুল হক খান। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানে অঞ্জু ঘোষকে নিয়ে আরও দুটি সিনেমা তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছেন পরিচালক।
২২ বছর পরে নিজের দেশে ফিরে অঞ্জু ঘোষ জানান, “বাংলাদেশকে নিয়ে আমার কোন ক্ষোভ বা অভিমান নেই। আমি জানতাম আমাকে ফিরতেই হবে। আমাকে এত সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে দেখে আমি খুব খুশি। কোন বিশেষ ব্যক্তিগত কারণে আমি দেশ ছেড়ে যায়নি। আসলে আমি কলকাতায় মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম কিন্তু মা আমাকে আর বাংলাদেশে আসতে দেন না তাই আমারও আর ফেরা হয়নি”।
সিনেমায় কামব্যাক করা নিয়ে প্রশ্ন করলে অভিনেত্রী বলেন, “তিনি অভিনয় ছাড়া বাঁচতে পারেন না। এক সময় বহু স্টেজ শো করেছিলেন তিনি। তবে এখন সিনেমায় আর নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করতে পারবেন না তিনি। বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই অভিনয় করতে হবে তাকে”।
আরও পড়ুন : রামায়ণের রাম-সীতা-লক্ষণরা আজ কোথায়? ২৫ বছরে কতটা বদলেছে তাদের চেহারা
আরও পড়ুন : কোথায় হারিয়ে গেলেন জন্মভূমির ‘পিসিমা’, বয়সের ভারে জীর্ণ অভিনেত্রীর কীভাবে কাটছে দিন?
প্রসঙ্গত, বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না, সিনেমাটি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে একবার চিরঞ্জিত বলেছিলেন, সত্যজিৎ রায় নাকি চিরঞ্জিতকে এই সিনেমা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন তখন চিরঞ্জিত বলেছিলেন, “ওটা এমনি একটা সাধারণ সিনেমা”। উত্তরে মানিকবাবু বলেছিলেন, “তোমরা যাকে খুব সামান্য বলে মনে করছ সেটা যদি সামান্য হতো তাহলে এতগুলো মানুষ সিনেমাটি নিয়ে হইচই করত না। সিনেমার মধ্যে নিশ্চয়ই এমন কিছু রয়েছে যার ফলে এই সিনেমাটি নিয়ে মানুষের মধ্যে এত শোরগোল”।