আজ ২৫ শে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন আজ। ১২৬৮ বঙ্গাব্দে আজকের দিনেই উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ। পরবর্তী দিনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা পৃথিবীতে। সারা পৃথিবী আজও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরে অনুরক্ত। তবে জানতেন কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আসল পদবী কিন্তু ‘ঠাকুর’ নয়?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আসল পদবী কী?
রবীন্দ্রনাথ তথা সমগ্র ঠাকুর পরিবারের আসল পদবী ছিল ‘কুশারী’। কুশারীরা ছিলেন ব্রাহ্মণ। এই কুশারী বংশ আগে ছিল জমিদার বংশ। সুন্দরবন অঞ্চলের জমিদার ছিলেন তারা। পরবর্তীকালে কুশারীরা হয়ে উঠেছিলেন ঠাকুর। কুশারী থেকে ঠাকুর হয়ে ওঠার গল্পটা বেশ রোমাঞ্চকর।
কেন পদবী পাল্টাতে বাধ্য হয়েছিল ঠাকুর পরিবার?
সুন্দরবনের কুশারী বংশের ৪ ব্রাহ্মণ জমিদার ভাই রতিদেব কুশারী, কামদেব কুশারী, শুকদেব কুশারী এবং জয়দেব কুশারী একবার নিষিদ্ধ মাংসের গন্ধ শুঁকেছিলেন। যে কারণে তাদের এক ঘরে করে দিয়েছিল সমাজ। এরপর প্রায় দেড় শতক ধরে তাদের চরম ধর্মীয় গঞ্জনা এবং অপমান সহ্য করতে হয়েছিল।
এদের পরবর্তী বংশধর জগন্নাথ কুশারীর বংশধর রামানন্দের দুই সন্তান মহেশ্বর এবং শুকদেব সুন্দরবনের গোবিন্দপুর এলাকাতে বসবাস শুরু করেন। তারা ওই অঞ্চলের দরিদ্র মানুষদের সেবা করতে শুরু করেন। প্রচুর দান-ধ্যান করতেন তারা। কালক্রমে ওখানকার মানুষ তাদের ভগবান বা ঠাকুরের মত শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন। মহেশ্বর এবং শুকদেবকে তারা ‘ঠাকুর’ বলতেন।
আরও পড়ুন : ঠাকুর বংশের মেয়ে হয়ে মুসলিমকে কেন বিয়ে করলেন শর্মিলা? জবাব দিলেন ‘বেগম পতৌদি’
এরপর কুশারীরা তাদের আসল পদবী ব্যবহার বন্ধ করে দেন। মানুষের দেওয়া ভালোবাসার নাম ‘ঠাকুর’টাই হয়ে ওঠে তাদের পদবী। শুকদেবই প্রথম ‘ঠাকুর’ পদবী ব্যবহার করা শুরু করেছিলেন। এরপর মহেশ্বরের ছেলে পঞ্চাননও কাকার মত ‘ঠাকুর’ পদবী ব্যবহার শুরু করেন।
আরও পড়ুন : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শর্মিলা ঠাকুরের কে হন? আদেও কি আছে রক্তের সম্পর্ক?
জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বংশের ইতিহাস
পরবর্তী দিনে এই ঠাকুর বংশের বংশধর নীলমণি ঠাকুর তৎকালীন সময়ের জোড়াবাগান এলাকার ধনী ব্যবসায়ী বৈষ্ণবচরণ শেঠের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হন। বৈষ্ণবচরণ নীলমণিকে জোড়াসাঁকোর দেড় বিঘা জমি উপহার দিয়েছিলেন। সেখানেই গড়ে ওঠে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি। পরে এই বাড়িতেই জন্মেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।