প্রায় ১০ বছর পর অবশেষে জিয়া খান (Jiah Khan) মৃত্যু মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করল আদালত। এই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত জিয়ার প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলি (Suraj Pancholi) আদালতের নির্দেশে বেকসুর নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। বিশেষ সিবিআই আদালত প্রমাণের অভাবে সুরজকে নির্দোষ ঘোষণা করেছে। জিয়া খান আত্মহত্যার মামলায় সুরজের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণই নাকি পাওয়া যায়নি।
২০১৩ সালের ৩রা জুন মুম্বাইয়ের বাড়ি থেকে জিয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর। পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানায় জিয়া নিজেই তার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু মেয়ের মৃত্যুর একদিন পর জিয়ার মা দাবি করেন জিয়াকে খুন করা হয়েছে। এই বিষয়ে অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে সুরজের দিকে।
সুরজের বিরুদ্ধে জিয়াকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ছিল। জিয়ার ফ্ল্যাট থেকে তার নিজের হাতে লেখা একটি ছয় পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে সুরজের বিরুদ্ধে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারের অভিযোগের কথা স্পষ্ট করে লিখেছিলেন জিয়া। এই সুইসাইড নোটের উপর ভিত্তি করে সুরজকে গ্রেফতার করা হয় এবং তিনি ২২ দিন জেলে ছিলেন।
সে সময় বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে জিয়ার অন্তঃসত্ত্ব হওয়া এবং গর্ভপাতের খবর রটে যায়। জিয়া নিজেও তার সুইসাইড নোটে গর্ভপাতের কথা লিখেছিলেন। বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট থেকে জানা যায় তিনি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তবে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জেনে তিনি গর্ভপাতের ওষুধ খান। সেই সময় তার অত্যাধিক রক্তপাত হতে শুরু করে।
জিয়া ফোন করে সুরজকে তার অবস্থার কথা জানান। তাকে তখন হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সত্যিটা সকলে জেনে যাবেন এই ভয়ে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে সুরজ নিজেই জিয়ার মৃত ভ্রূণ নিজের হাতে বের করে আনেন এবং বাথরুমে ফ্ল্যাশ করে দেন। এই বিস্ফোরক সত্যিটা তুলে ধরেছিল বলিউডেরই এক সূত্র।
জিয়ার মা দাবি করেন সুরজের ক্রমাগত অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জিয়া এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০১৪ সালে জিয়া খান মৃত্যু মামলা সিবিআইকে হস্তান্তরিত করে আদালত। ২০১৫ সালে সিবিআই আদালতে সুরজের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনে। সেই মামলার চূড়ান্ত রায় বেরোলো ২০২৩ সালের ২৮শে এপ্রিল। দশ বছরের মাথায় এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস হলেন সুরজ পাঞ্চোলি।