হাতে নেই কাজ, অর্থাভাবে করুণ পরিণতি মহাভারতের ভীমের, চাইলেন সরকারি সাহায্য

আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে হিন্দি টেলিভিশনের (Hindi Telivision) পর্দায় মহাভারতকে (Mahabharata) বড় ব্যানারে তুলে ধরা হয়েছিল। প্রতিটি চরিত্রের নিরিখে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা প্রাণ ঢেলে চরিত্রগুলিকে এতটাই জীবন্তভাবে দর্শকের নজরের সামনে তুলে ধরেছিলেন যে আজও মহাভারতের চরিত্রের কথা বললেই তাদের মুখ মনে ভেসে ওঠে। এমন চরিত্র ছিল মহাভারতের ভীম (Bhim)।

মহাভারতের দীর্ঘদেহী ভীমকে যারা দেখেছেন তারা এখনও ভুলতে পারেননি নিশ্চয়ই। এই চরিত্রটিকে জীবন্ত করে তুলেছিলেন প্রবীন কুমার সোবতি (Praveen Kumar Sobti)। এরপরেও টেলিভিশনে বহুবার মহাভারত নিয়ে ধারাবাহিক বানানো হয়েছে। তবে ভীমরূপে প্রবীন কুমারকে টেক্কা দিতে পারেননি কেউ। এহেন অভিনেতা আজ অর্থাভাবে ধুঁকছেন। ৭৬ বছর বয়সেও তাকে বেঁচে থাকার জন্য টাকার চিন্তা করতে হয়। অথচ তিনি ভারতের একজন নামী তারকা।

কেবল অভিনেতা হিসেবে নয়, তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন বীর সৈনিকও ছিলেন। তিনি ছিলেন বিএসএফের ডেপুটি কমান্ডার। এছাড়াও বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তিনি পদক জিতে নিয়ে এসেছেন। প্রবীন কুমার ছোটবেলা থেকেই ক্রীড়াজগতের সঙ্গে জড়িত। তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার মধ্যে একজন দক্ষ ক্রীড়াবিদের ছায়া দেখেছিলেন। ছেলেবেলা থেকেই তার ফিটনেস ছিল দুর্দান্ত। তাই তাকে খেলাধুলার প্রতি উৎসাহী করতে থাকেন প্রধান শিক্ষক। এভাবেই একের পর এক খেলাতে অংশগ্রহণ করে পদক জিততে থাকেন প্রবীন। ১৯৬৬ সালে কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। জিতে নিয়েছিলেন রুপোর পদক।

১৯৬৬ এবং ১৯৬৯ সালে ব্যাংককে এশিয়ান গেম চ্যাম্পিয়নশিপের স্বর্ণ পদক জিতেছিলেন তিনি। ৫৬.৬৭ মিটার দূরত্বে ডিসকাস নিক্ষেপ করে এশিয়ান গেমসে রেকর্ড করেছিলেন তিনি। কর্মজীবনে তিনি বিএসএফের ডেপুটি কমান্ডারের চাকরি নেন। বর্তমানে তিনি সেখান থেকেই যৎসামান্য পেনশন পাচ্ছেন। তবে তাতে তার সংসার চলে না। বিএসএফের চাকরি করতে করতেই বি আর চোপড়ার মহাভারত তৈরি করার খবর পৌঁছায় তার কানে। ভীমের চরিত্রের জন্য তিনি অডিশন দিতে যান। প্রথম দেখাতেই তাকে পছন্দ হয়ে যায় পরিচালকের। বাকিটা ইতিহাস। ধারাবাহিকের দুর্দান্ত সাফল্যের পর তিনি বহু ছবিতেও অভিনয় করেন। তবে আজ অর্থাভাব জাঁকিয়ে ধরেছে তাকে।

অভিনেতার অভিযোগ, এমনিতে নিয়ম অনুযায়ী দেশের হয়ে যে সকল ক্রীড়াবিদ পদক জিতেছেন তারা সকলেই পেনশন পান। কিন্তু পাঞ্জাবে আসা সমস্ত সরকার প্রবীন কুমারকে তার প্রাপ্য পেনশন থেকে বঞ্চিত রেখেছেন। এর জন্য এবার সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। সরকারের কাছে তিনি পেনশন চেয়ে আবেদন পাঠিয়েছেন। তার বক্তব্য, “আমার বয়স ৭৬ বছর। আমি অনেক দিন ধরে বাড়িতে বসে আছি। আর ভালো লাগছে না। খাওয়ার মধ্যেও অনেক বাধানিষেধ আছে। মেরুদণ্ডের সমস্যা রয়েছে। স্ত্রী বীণা ঘর দেখাশোনা করেন। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে মুম্বাইয়ে। তখন সবাই ভীমকে চিনত, কিন্তু এখন সবাই ভুলে গেছে।”