চরম অর্থকষ্টে কেটেছে শেষ জীবন, কালি ব্যানার্জীর অন্তিম পরিণতি শুনলে শিউরে উঠবেন আপনি

বর্তমানে টলিউড (Tollywood) ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে হাজার বিতর্ক চললেও একটা সময় ছিল যখন বিনোদনের এই দুনিয়াতে স্বর্ণযুগ চলছিল। আজ দর্শকদের ধরে ধরে বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ানোর আব্দার করতে বাধ্য হচ্ছেন তারকারা। টলিউডের স্বর্ণযুগে অর্থাৎ ৭০-৮০ এর দশকে কিন্তু ব্যাপারটা সেরকম ছিল না। সেই সময় উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়দের পাশাপাশি আরও অনেক প্রতিভার জন্ম হয়েছিল এখানে।

টলিউডের স্বর্ণযুগে বাংলা সিনেমা পেয়েছিল কালী ব্যানার্জিকে (Kali Banerjee)। তিনি বহু বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থেকে কাজ করেছেন। অল্প বয়স থেকে একদম বৃদ্ধাবস্থা পর্যন্ত তিনি বাংলা সিনেমার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বলা যায় গোটা জীবনটাই তিনি উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন টলিউডকে। তবে তার বদলে টলিউড থেকে তিনি তার যোগ্য সম্মান পেলেন না। কালী ব্যানার্জীর অন্তিম পরিণতিতে যা ঘটেছিল সেসব শুনলে শিউরে উঠবেন আপনি।

kali banerjee 2

অভিনয়ের মাধ্যমে বরাবর দর্শকদের থেকে প্রশংসা পেয়েছেন কালী ব্যানার্জী। বৃদ্ধ অসহায় পিতা কিংবা মাস্টারমশাইয়ের চরিত্রে তিনি তুখড় অভিনয় করতেন। পর্দায় তার অভিনয় দেখলে চোখে জল চলে আসতে বাধ্য। প্রথম জীবনে ‘বিসর্জন’, ‘বরযাত্রী’, ‘বিমল’, ‘লৌহ কপাট’ ইত্যাদি জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। পরবর্তী জন্য তিনি বিভিন্ন বাণিজ্যিক ছবিতেও অভিনয় করেন।

পরবর্তী দিনে প্রসেনজিৎ, রঞ্জিত মল্লিক থেকে তাপস পালদের সঙ্গে বহু সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেছেন কালী ব্যানার্জী। পর্দায় তিনি যেমন দক্ষ অভিনেতা ছিলেন, ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন ঠিক ততটাই সাদামাটা। এই কারণেই শেষ জীবনে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাকে। অর্থাভাবে অসুস্থ শরীরেও তিনি দিনের পর দিন কাজ করে গিয়েছেন।

kali banerjee

শেষ জীবনের স্মৃতিলোপের সমস্যায় ভুগছিলেন কালী ব্যানার্জী। তিনি সিনেমার ডায়লগ মনে রাখতেও পারতেন না। শুটিং সেটে বহুবার এই কারণে তাকে অপমানিত হতে হয়েছে। কিন্তু অভিনয়টাকে ভীষণ ভালবাসতেন এই বৃদ্ধ অভিনেতা। সেই সঙ্গে অর্থ উপার্জনের তাগিদ ছিল তার। তাই বাছ বিচার না করেই তিনি সব চরিত্রে অভিনয় করতেন। জীবনের শেষ সময়ে যখন পাশে কেউ ছিল না তখন টলিউড থেকে একমাত্র অঞ্জন চৌধুরী তার পাশে দাঁড়ান।

kali banerjee 2

মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত কাজ করে গিয়েছেন কালী ব্যানার্জী। অবশ্য অভিনয় করতে গিয়েই তার মৃত্যুটা হয়েছিল। শেষ ছবিতে বৃষ্টির দৃশ্যে শুটিং করছিলেন অভিনেতা। বৃষ্টিতে ভিজে তার নিউমোনিয়া রোগ হয়। এরপর চিকিৎসা করালেও তাতে সাড়া দেননি তিনি। শেষমেষ ১৯৯৩ সালে হাজার গ্লানি, অপমান আর একরাশ অভিমান বুকে নিয়েই প্রয়াত হন ব্যানার্জী।