টলিউড অভিনেতা অনুপ কুমারকে মনে আছে? বাংলার স্বর্ণযুগের অভিনেতা ছিলেন তিনি। বাংলা সিনেমার এক অবিস্মরণীয় প্রতিভা ছিলেন অনুপ কুমার। যারা বাংলা সিনেমার ভক্ত, তারা অন্তত অনুপ কুমারকে ভুলবেন না কোনওদিনই। কমেডি হোক বা ট্রাজেডি, অসাধারণ অভিনয়ের দক্ষতা দিয়ে বারবার দর্শকদের মন জয় করেছিলেন তিনি। অথচ টলিউড তাকে তার যোগ্য সম্মান দিল না। অভিনেতার পরিণতিও হয়েছিল খুবই মর্মান্তিক।
অনুপ কুমারের আসল নাম ছিল শশী গোস্বামী। তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ৪০ বছর ধরে অভিনয় করেছিলেন। টলিউডের স্বর্ণযুগ থেকে শুরু করে ৯০ দশকের বাণিজ্যিক সিনেমা, শতাধিক সিনেমাতে কাজ করে অনুপ কুমার দর্শকদের মন ছুঁয়েছেন বারবার। ১৯৫৩ সালে ফটিকচাঁদ সিনেমা দিয়ে বাংলা সিনেমার জগতে তার আবির্ভাব হয়েছিল। এরপর বসন্ত বিলাপ, এন্টনি ফিরিঙ্গি, গল্প হলেও সত্যি, পলাতক, একের পর এক সিনেমাতে তিনি চান্স পেয়েছিলেন। ঘুরে তাকাতে হয়নি অনুপ কুমারকে।
কিন্তু অনুপ কুমারের অন্তিম জীবনটা ছিল খুবই কষ্টের। ১৯৯৮ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবর হয়তো অনেকে জানেনই না। সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন অনুপ কুমারের বোন অসীমা সিনহা এবং ভাই অরবিন্দ দাস। তারাই বলেন অনুপ কুমারের অন্তিম জীবনের মর্মান্তিক পরিণতির কথা। ছোটবেলা থেকেই খুবই স্ট্রাগল করে বড় হতে হয়েছিল তাদের। অনুপ কুমারই তার দুই ভাই ও বোনকে মানুষ করেছিলেন।
আরও পড়ুন : সায়ন্তিকা অতীত, ৮ বছরের প্রেমিকাকে ছেড়ে মায়ের পছন্দের পাত্রীকে বিয়ে করলেন জয় মুখার্জী
আরও পড়ুন : সমকামীতা থেকে এমএমএস ফাঁস! রিয়া সেনের জীবনের রয়েছে অনেক বিতর্ক
টলিউডকেও দুহাত ভরে শুধুই দিয়েছেন অনুপ কুমার। বদলে পাননি কিছুই। তাকে তার যোগ্য সম্মানটুকুও দেয়নি ইন্ডাস্ট্রি। প্রাপ্য সাম্মানিক তো অনেক দূরের কথা। বহু সিনেমাতে কাজ করিয়েও তাকে টাকা দেওয়া হত না। নিজের প্রাপ্যটুকুও কখনও নিজের মুখে চাননি তিনি। ইন্ডাস্ট্রির প্রতি তার মনে অনেক আক্ষেপও ছিল। এতটাই গভীর ছিল সেই যন্ত্রণা যে নিজের মৃত্যুর পর দেহ যেন স্টুডিওতে না নিয়ে যাওয়া হয় সে কথা তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। এত বড় মাপের অভিনেতাকে কখনও একটা পুরস্কারও দেয়নি টলিউড। তার মৃত্যুর পর যেন তার নামটাই ইন্ডাস্ট্রি থেকে মুছে গিয়েছে।