The Story of Parshuram and His Axe : হিন্দু ধর্মের বহু প্রাচীন মন্দির রয়েছে ভারতের বিভিন্ন শহর ও গ্ৰামে। এই স্থানগুলির রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস। যা জানার জন্য ভিড় জমান বহু দর্শনার্থীরা। এমনি একটি স্থান রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ডে। এই মন্দিরের আনাচে কানাচে লুকিয়ে রয়েছে অনেক রহস্য।
এই মন্দিরের নাম ‘টাঙ্গিনাথ মন্দির’ বা ‘টাঙ্গিনাথ ধাম’ (Tanginath Dham)। শাস্ত্র অনুযায়ী, ভগবান বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম ছিলেন অমর। তার কখনও মৃত্যু হবে না। তাই আজও পৃথিবীর বুকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। বাবা ঋষি জমদগ্নির আদেশ মেনেই নিজের মাকে হত্যা করেছিলেন তিনি।
কিন্তু বাবা তার এই কাজে প্রসন্ন হয়ে যখন তাকে বর চাইতে বললেন তখন তিনি তার মাকে জীবিত করে দেওয়ার বর চাইলেন। তিনি ছিলেন প্রথম যোদ্ধা ব্রাক্ষ্মন। তার একটি বিশাল কুঠার ছিল যেটি মহাদেব তাকে দান করেছিল। সেই কুঠারটি দিয়েই নিজের শত্রুদের সংহার করতেন তিনি।
ঝাড়খন্ডের এই ‘টাঙ্গিনাথ মন্দির’-এ রয়েছে তার সেই বিশাল কুঠারটি। বহু মানুষের ধারণা প্রায় হাজার হাজার বছর ধরে এই মন্দিরের বাইরে পোতা রয়েছে বিশালকায় লোহার অংশ, যেটি দেখতে ত্রিশূলের মতো দেখতে হলেও অন্যদিকে বেরিয়ে রয়েছে একটি বিশালকায় সূচালো অংশ, যা দেখতে অনেকটা কুঠারের মতো।
অস্ত্রটির গায়ে লাগানো রয়েছে ফুল ও সিঁদুর। কথায় আছে হরধনু ভেঙে ফেলার পর পরশুরাম খুব রেগে গিয়েছিলেন। তিনি যখন সেখানে এসেছিলেন তখন লক্ষ্মনের সঙ্গে তার বিবাদ বাঁধে। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল বুঝতে পেরে সেখান থেকে বেরিয়ে একটি পাহাড়ের বুকে নিজের কুঠারটি পুঁতে দিয়ে শিবের আরাধনা করতে চলে যান। মানুষের বিশ্বাস, ঝাড়খন্ডের ‘টাঙ্গিনাথ ধাম’ হল সেই স্থান। এখানেই পরশুরাম শিবের আরাধনা করেছিলেন।
তার পায়ের ছাপও দেখা যায় ঐ স্থানে। কুঠারটিকে যারা নিয়ে যেতে চেয়েছেন তাদের ভালো হয়নি। একবার ঐ এলাকার উপজাতির মানুষরা ঐ কুঠারের একটি অংশ কেটে নিয়ে গিয়েছিলেন তারপর তাদের এক জন একন করে মৃত্যু হয়। বাধ্য হয়ে তারা ঐ জায়গা ত্যাগ করেন। তবে প্রতি মহা শিবরাত্রীর দিন এখানে মেলা বসে। চার দিন ধরে চলা এই মেলাতে উপস্থিত থাকেন বহু মানুষ।