আরজিকর ঘটনা প্রসঙ্গে টলিউডের (Tollywood) অন্তরেই দ্বিধাবিভক্ত শিল্পীজগৎ। বেশিরভাগই প্রকাশ্যে এসে প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছেন। কেউ কেউ আবার একটি বাক্যও ব্যয় করেননি। আবার কেউ উল্টে ডাক্তারদের প্রতিবাদ কর্মসূচীর সমালোচনা করছেন। তাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছেন। এই তৃতীয় শ্রেণীর মধ্যে পড়েন কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick)। যিনি সম্প্রতি জুনিয়র ডাক্তারদের সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে নিজেই চূড়ান্ত ট্রোল হলেন। এমনকি কাছের বান্ধবী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর (Sudipta Chakraborty) থেকেও পেলেন কড়া বার্তা।
আরজিকর ঘটনার পর বহু পুজো ক্লাব এবং কমিটি সরকারের দেওয়া সরকারি অনুদান ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে কাঞ্চন মল্লিক বলেন, “অনেকে দুর্গাপুজোর অনুদান নেবেন না বলেছেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যাঁরা কর্মবিরতি করছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে, তাঁরা সরকারি বেতন, বোনাস নেবেন তো? সরকারি পুরস্কার ফেরত দেবেন তো?” স্বাভাবিকভাবেই কাঞ্চন এই কথা বলে নিজেই সমালোচনার মুখে পড়েন। তবে তাকে কড়া জবাব দেন দীর্ঘদিনের বান্ধবী সুদীপ্তা চক্রবর্তী।
সুদীপ্তা শুধু সমালোচনা নয়, এতদিনে বন্ধু কাঞ্চনকে ত্যাগ দিয়েছেন এই ঘটনার পর। সোশ্যাল মিডিয়াতে কাঞ্চনকে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, “মাননীয় বিধায়ক শ্রী কাঞ্চন মল্লিক, এটা আপনি কী বললেন? কর্মবিরতিতে থাকা ডাক্তাররা সরকারি চাকরি করেন বলে তাঁদের কর্মস্থলে দিনের পর দিন ধরে ঘটে যাওয়া সরকারের অন্যায় কাজ নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলতে পারবেন না? সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে হতাশা বা উষ্মা প্রকাশ করতে গেলে একজন সরকারি চাকুরিজীবীর মাইনে নেওয়া যাবে না? বিচারের দাবিতে মিছিলে গেছেন বলে তাঁদের পুজোর আগে প্রাপ্য বোনাস নিয়ে খিল্লি করে বলবেন ‘বোনাস টোনাস যে হয়, সেটা নেবেন তো, না নেবেন না?’ ‘চাকরি’ শব্দটা তো আপনি আক্ষরিক অর্থে নিয়ে নিয়েছেন মশাই!”
সুদীপ্তা আরও লিখেছেন, “সরকারি হাসপাতালের সরকারি কর্মচারী নৃশংসভাবে ধর্ষিত ও খুন হয়ে যাওয়া তিলোত্তমার মা বাবাকে ‘মেয়ে আত্মহত্যা করেছে’ বলল কেন – এই প্রশ্ন করার আগে সরকারের দেওয়া পুরস্কার ফেরত দিয়ে দিতে হবে? না, মানে, বিবেকের তাড়নায় কেউ ফেরত দিতেই পারেন। কিন্তু সেটাই পূর্ব শর্ত নাকি? দেওয়ালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি ঝুলিয়ে রেখে এই নির্লজ্জ কমেডি করার আগে একবারও ভাবলেন না? আপনার কমেডি অভিনয়ই কিন্তু মানুষের মনে একদিন আপনার পাকাপাকি স্থান দিয়েছিল। আমিও তার ফ্যান। কিন্তু আজ যেটা করলেন, ওটা কমেডিও হয়নি, অভিনয়ও হয়নি। ওটা কিছুই হয়নি। আপনার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক শিগগিরই, এই কামনা করি।”
আরও একটি পোস্টে সুদীপ্তা লেখেন, “এক সময়ের বন্ধু/সহকর্মী কাঞ্চন মল্লিক, তোকে ত্যাগ দিলাম। অনুপ্রেরণার লকারে চোখ, কান, মাথা, মনুষ্যত্ব, বিবেক, বুদ্ধি, বিবেচনা, শিক্ষা সব ঢুকিয়ে রেখে চাবিটা হারিয়ে ফেলেছিস মনে হয়। চাবিটা খুঁজে পেলে খবর দিস বন্ধু। তখন আবার কথা হবে, আড্ডা হবে।’ এরপর স্টেটাসের শেষে উল্লেখ করেন, ‘কথাগুলো ফোন করে বা মেসেজ করেও বলতে পারতাম হয়তো, যদি তোর বলা কথাগুলো ফোনেই শুনতাম। তুই যেহেতু নিউজ মিডিয়াকে বললি, আমিও তাই সোশ্যাল মিডিয়াতেই লিখলাম।”
আরও পড়ুন : “সঞ্জয় আর একটা ধনঞ্জয় হতে পারে!” জয়জিতের মন্তব্যে তোলপাড় শোস্যাল মিডিয়া
আরও পড়ুন : “চটিজুতো মাথায় নিয়ে…!” কুণাল ঘোষকে মোক্ষম জবাব দিলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী
এদিকে কাঞ্চন মল্লিকের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাকে নিয়ে কম সমালোচনা হচ্ছে না। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ তাকে পাল্টা জবাব দিয়ে বলেছে, “নিজেই হাসির খোরাক হচ্ছেন কাঞ্চন মল্লিক। সরকার তো আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা করেনি, কাঞ্চন মল্লিকের কি যোগ্যতা আছে এই প্রশ্ন তোলার।”