এই বিশ্বে বিভিন্ন গ্রাম-শহর নির্বিশেষে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নিয়মের প্রচলন রয়েছে। নানাবিধ সংস্কৃতির মিশেল ভারতেও বিভিন্ন গ্রামের মধ্যে নানা অদ্ভুত অদ্ভুত নিয়মের প্রচলন আছে। এইসব নিয়ম কঠোরভাবে পালন করে থাকেন গ্রামবাসীরা। তারা বিশ্বাস করেন যদি তারা এগুলি না মানেন তাহলে ঘনিয়ে আসতে পারে বড় বিপদ। ভারতের এমনই একটি গ্রাম হল হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) মনিকর্ণা (Manikarna) উপত্যকার পিনি গ্রাম (Pini Village)।
এই গ্রামের মহিলারা ধরে ঐতিহ্য মেনে পোশাক না পরে নগ্ন অবস্থায় থেকেছেন এবং এখনও এই নিয়ম মেনে চলেন। এই গ্রামের পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য কঠোর নিয়ম চালু রয়েছে যা না মানলে শাস্তি পেতে হয়। রীতি অনুসারে বছরের পাঁচটা দিন এই গ্রামের মহিলারা কোনও পোশাক পরেন না। আবার পুরুষরাও এই পাঁচ দিন মদ কিংবা কোনও নেশা সামগ্রীর সেবন করতে পারেন না।
পিনি গ্রামের এই প্রথা প্রচলনের পেছনে রয়েছে একটি ইতিহাস। এই পাঁচ দিন নারীরা ঘর থেকে বের হতে পারেন না। এই পাঁচটা দিন হল শ্রাবণ মাসের ৫ দিন। প্রত্যেক বছর নিয়ম করে এই নির্দিষ্ট দিনগুলিতে মহিলারা বিনা কাপড়ে থাকেন। আজও কিছু মহিলা পুরনো এই নিয়ম মেনে চলেন। বিশ্বাস করা হয় যে মহিলারা এই প্রথা মানেন না তাদের কয়েকদিনের মধ্যেই খারাপ খবর শুনতে হয়।
এই দিনগুলিতে গ্রামের স্বামী-স্ত্রীরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে পারেন না। তারা একে অপরের থেকে দূরে থাকেন। পুরুষেরা এই পাঁচ দিন মদ এবং মাংস খেতে পারেন না। খুবই কঠোরভাবে তাদের এই নিয়ম মেনে চলতে হয়। নিয়মের অন্যথা হলে তাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যায় বলে জানা যায়। নিয়ম এতটাই কড়া যে এই দিনগুলোতে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে দেখে হাসতেও পারেন না।
এই সময় পিনি গ্রামের বাইরে কাউকে যেতে দেওয়া হয় না। আবার বাইরে থেকেও কেউ গ্রামে প্রবেশ করতে পারেন না। কথিত আছে বহু সময় আগে এই গ্রামে অসুরেরা বাস করতেন। তাদের উপদ্রবে অতিষ্ঠ ছিল গ্রামের মানুষ। অসুররা মহিলাদের সুন্দর সুন্দর পোশাক পরিয়ে তুলে নিয়ে যেত। এরপর অসুরেরর হাত থেকে গ্রামের মানুষদের রক্ষা করতে লাহুয়া ঘোঁদ নামের এক দেবতার আবির্ভাব হয়।
এই দেবতা অসুরদের বধ করে নারীদের রক্ষা করেছিলেন। তারপর থেকে এই গ্রামে ১০ দিন মহিলাদের পোশাক না পরার রীতির প্রচলন হয়ে আসছে। গ্রামের মানুষেরা বিশ্বাস করেন নারীদের যদি পোশাক পরে সুন্দর দেখায় তাহলে অসুররা এসে আবারও তাদের তুলে নিয়ে যেতে পারে।