স্বামীর হয়ে মাঠে নামলেন রুপঙ্কর বাগচীর স্ত্রী, লিখলেন কবিতা

কেকে-কে (K K) নিয়ে রূপঙ্করের (Rupankar Bagchi) কিছু বক্তব্যের বিরুদ্ধে তার প্রতি যেন খড়গহস্ত গোটা সোশ্যাল মিডিয়া। বিগত তিনদিনে বাঙালি গায়ক রূপঙ্কর বাগচী এবং তার পরিবারের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে। ঝড় বয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। কেকে এবং রূপঙ্কর, দুই প্রখ্যাত গায়ককে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বাংলা। অবশ্য এক্ষেত্রে রূপঙ্করের পাল্লা বেশ হালকা।

কেকের প্রতি সমবেদনা, সমর্থন উপচে পড়ছে ভক্তদের। আর তার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রূপঙ্কর এবং তার পরিবারের প্রতি ক্ষোভ, দ্বেষ, ঘৃণা। এমনকি রূপঙ্করের স্ত্রী ও তার ছোট্ট মেয়েকে হুমকি দিতেও বাঁধেনি। একটা ফেসবুক লাইভ ভিডিও কার্যত একটা হাসিখুশি পরিবারকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলেছে মুহূর্তেই। এমনকি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েও লাভ হয়নি কিছুই। উল্টে বেড়েছে কটু মন্তব্যের ঝড়। এমতাবস্থায় কলম ধরলেন রূপঙ্করের স্ত্রী চৈতালি লাহিড়ী (Chaitali Lahiri)।

Chaitali Lahiri

শনিবার সকালে চৈতালি তার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছেন একটি কবিতা। বিগত কয়েক ঘন্টায় তাদের পরিবারের উপর দিয়ে যে কী ঝড় বয়ে গিয়েছে তা তার লেখার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। চৈতালি লিখেছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া তোমার দেওয়া আ্যড্রিনালিন রাশ, / ছোট্ট পরিবারের জীবনে নামিয়ে এনেছে ত্রাস।/ দরকার একটা স্মার্টফোন আর মনে একরাশ ঘৃণা,/ জীবনের যত না পাওয়ার যন্ত্রণা আর কিছু বাহানা।/ তারপর একটা লম্বা ট্রিপ এমন নেশা কোনো/ মাদকেই হয় না, / উত্তেজনা উত্তেজনা—উফফ দাদা জীবনে কী পাবো না ভুলেছি সে ভাবনা।’

মারমুখী জনতায় প্রবল আক্রোশের মুখে রূপঙ্কর-চৈতালির ছোট্ট মেয়েটি ভেঙে পড়েছে রীতিমতো। চূড়ান্ত মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে প্রতিটা মুহূর্ত। মেয়ের চোখে জল, মা হয়ে চৈতালি তাকে বোঝাতে পারছেন না কিছুতেই। অসহায় লাগছে তার। চৈতালির লেখনীতে তাই ঝড়ে পড়ছে সেই অসহায়তা। একইসঙ্গে স্বামীর উদ্দেশ্যে তিনি লিখলেন, ‘ধড়ফড়িয়ে বুকটা পোড়ে, বরটা বড়ই বোকা/দুনিয়াদারিতে নেহাৎ কাঁচা শিল্প যাপনে মগ্ন থাকা।/এমন কথা কি বলতে হয়, তুমি কি সমাজের হোতা?/ কে দিয়েছে মাথার দিব্যি? কেন নড়ল মাথার পোকা?’

ফোনের মাধ্যমে আসছে মৃত্যুর হুমকি, দিনরাত অশ্লীল এবং কটুকথার বন্যা বয়ে যাচ্ছে। যারা এই কথাগুলো লিখছেন তাদের ঘরেও তো মা-বোন রয়েছেন। তারা কেন রূপঙ্করের স্ত্রী এবং কন্যার মানসিক অবস্থাটা বুঝছেন না? এই কঠিন সময় চিনিয়ে দিয়েছে কে বন্ধু আর কে বন্ধু নন। এই দুঃসময়ে রূপঙ্করের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পী। চৈতালি তাই লিখেছেন, ‘ভালোই হল চিনতে পেল বন্ধু এবং বাসা/ সময় চেনায় কোনটা সত্যি আর কোনটা মরীচিকা।’ ‘স্ত্রী’ হিসেবে ‘যশোদা মা’ হিসেবে এই কঠিন পরিস্থিতির বিরুদ্ধে একা লড়তে হচ্ছে চৈতালিকে। তার কবিতার প্রতি ছত্রে ছত্রে উঠে এলো সেই বেদনার কথা।